গাজায় ত্রাণপ্রার্থী মানুষের উপর ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার ত্রাণ সংগ্রহকারীদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা অনলাইন।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মঙ্গলবার ছিটমহলজুড়ে ত্রাণ বিতরণ স্থানে ফিলিস্তিনিরা যখন সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করছিল, তখন এই হামলা চালানো হয়।

গত মাস থেকে বিতর্কিত ইসরায়েলি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত ত্রাণ বিতরণ পয়েন্টের কাছে প্রতিদিন ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হচ্ছে। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থার প্রধান এই বিতরণ কেন্দ্রগুলোকে ‘মৃত্যুর ফাঁদ’ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।

গাজার হাসপাতাল সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, ভোর থেকে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি গুলিতে ৫০ জন নিহত হয়েছেন এবং সমগ্র অঞ্চলজুড়ে আরো ২১ জন নিহত হয়েছেন।

মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে, মধ্য গাজার ওয়াদি গাজার দক্ষিণে সালাহ আল-দিন স্ট্রিটে একটি ঘটনায় কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছেন, ১৪০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এবং আল জাজিরার সানাদ এজেন্সিরযাচাইকৃত ফুটেজে দেখা গেছে, নিকটবর্তী নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরের আল-আওদা হাসপাতালে মৃতদেহ আনা হচ্ছে।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব তরণ

এছাড়াও পড়ুন:

এক দিনেই ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩৯৪

প্রতিদিনই বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টার ৩৯৪ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে টানা চতুর্থ দিনের মতো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার রোগীর সংখ্যা ৩০০ ছাড়াল। গত মে মাসের তুলনায় চলতি মাসে রোগীর সংখ্যা হলো আড়াই গুণ।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, মে মাসে যেখানে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মোট ডেঙ্গু রোগী ছিলেন এক হাজার ৭৭৩ জন, সেখানে জুনের এক সপ্তাহ বাকি থাকতেই রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার হাজার ১৯৯-এ। এর আগে গত রোববার ৩২৯ জন এবং শনিবার ৩৫২ জনের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তথ্য জানিয়েছিল অধিদপ্তর। 
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৩৯৪ জনের মধ্যে বরিশাল বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৮, ঢাকা বিভাগে ৩৫, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৪২, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৫০, খুলনা বিভাগে ৮ জন এবং রাজশাহী বিভাগের হাসপাতালে ৪৪ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। আগের হিসাবে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ও নারী সমান। আর চলতি মাসে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। 
২২ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২৩ সালে দেশে ডেঙ্গু রোগী হয় তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মৃত্যু হয় এক হাজার ৭০৫ জনের। তার আগে ২০১৯ সালে রোগী ছিল এক লাখ ১ হাজার 
৩৫৪ জন। 

ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে করণীয়
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ) গতকাল অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে ইন্টারনাল মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নাজমুল হাসান ডেঙ্গু গাইডলাইন বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। এতে তিনি জানিয়েছেন, ডেঙ্গু জ্বরের হালকা উপসর্গে (৩-৫ দিন জ্বর, মাথাব্যথা ও হালকা গায়ে ব্যথা) রোগীকে বাড়িতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও তরল পানীয় (স্যালাইন, ফলের রস ও স্যুপ) খেতে হবে।
বিএমইউতে করোনা, ডেঙ্গু ও জ্বরের সাম্প্রতিক প্রবণতা নিয়ে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে ডা. নাজমুল বলেন, জ্বর কমানোর জন্য কেবল প্যারাসিটামল ব্যবহার করা যাবে। ডেঙ্গুর জন্য অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন বা ব্যথানাশক জাতীয় ওষুধ নিষিদ্ধ। কারণ এগুলো রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়ায়। জ্বর কমে যাওয়ার পর হঠাৎ শরীর খারাপ হওয়া, বারবার বমি, পেটব্যথা, রক্তপাত, ঘন ঘন দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট বা চামড়া মলিন, অস্থিরতা, অজ্ঞান ভাব, মাথা ঘোরানোর মতো উপসর্গ দেখা গেলে এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ রোগীর জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করে, ফুসফুসে পানি জমার ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণা বলছে, এতে ডেঙ্গুর চিকিৎসায় কোনো উপকার হয় না। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারেরও প্রয়োজন নেই। কারণ ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ। যদি নিশ্চিত ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ থাকে (যেমন নিউমোনিয়া), তখন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা যেতে পারে।

বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের ঊর্ধ্বগতি 
বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরগুনা জেলায় ডেঙ্গু প্রকোপের ঊর্ধ্বগতি চলমান। সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৭ জন। তার মধ্যে ৯৩ জনই বরগুনার।  
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, রোববার বিভাগে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছিলেন ১২৬ জন। যার মধ্যে বরগুনাতে ছিলেন ৭৩ জন। এখন বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ৪৩২ জন। তার মধ্যে ২৪২ জনই বরগুনা জেলার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ