আলকারাজের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, রাদুকানু কী বললেন
Published: 29th, June 2025 GMT
আগামীকাল শুরু হচ্ছে বছরের তৃতীয় গ্র্যান্ড স্লাম উইম্বলডন। এ উপলক্ষেই সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন এমা রাদুকানু। বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পর শেষ মুহূর্তে এক সাংবাদিক রাদুকানুকে জিজ্ঞাসা করেন, কার্লোস আলকারাজের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শোনা যায়। আসলে সম্পর্কটা কী?
প্রশ্নটা শুনেই হেসে দিলেন রাদুকানু। এমন একটা প্রশ্ন যে উঠতে পারে, সেটা হয়তো অনুমানও করছিলেন তিনি। গুঞ্জন ওঠার মতো নানা উপাদানই তো যোগ হয়েছে গত কিছুদিনে।
গত শুক্রবার দুজনকে একসঙ্গে অনুশীলন করতে দেখা গেছে। পরে আলকারাজ জানিয়েছেন, আগস্টে ইউএস ওপেনে জুটি বেঁধে মিশ্র দ্বৈতে অংশ নেবেন তাঁরা। এরও আগে কুইনস ক্লাবে এইচএসবিএস চ্যাম্পিয়নশিপ সেমিফাইনালে আলকারাজের ম্যাচের সময় তাঁর জন্য রাদুকানুকে উল্লাস করতে দেখা গেছে। এর বাইরে দুজন একসঙ্গে একটি পণ্যের বাণিজ্যিক অনুষ্ঠানেও উপস্থিত হয়েছেন।
আরও পড়ুনপ্রত্যাবর্তনের মহাকাব্যিক গল্প লিখে আবারও লাল দুর্গের রাজা আলকারাজ০৮ জুন ২০২৫আলকারাজের সঙ্গে রাদুকানুর সম্পর্ক নিয়ে ফিসফাস যত বেড়েছে, ততই দুজনকে একত্রে দেখার ঘটনা বাড়ায় গুঞ্জনও বেশ জোরালো হয়েছে। আর তাই এটি সাংবাদিকের প্রশ্ন হয়ে ছুটে গেছে রাদুকানুর উইম্বলডন সংবাদ সম্মেলনে।
আলকারাজের খেলা দেখছেন রাদুকানু.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
একটি আপেল যেভাবে বদলে দিয়েছে মহাবিশ্বের ধারণা
বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব বিখ্যাত বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনের মহাকর্ষ বলকে স্থান–কালের বক্রতা দিয়ে প্রতিস্থাপন করেছিল। এর মাধ্যমে সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানকে অন্য এক মাত্রায় নিয়ে যায়। যখনই আপনি একটি কাপ ফেলে দেন বা নদীতে জোয়ার আসতে দেখেন, তখনই মহাকর্ষের প্রমাণ পাওয়া যায়। আবার আপনার ওজন মাটির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে বলে অনুভব করার বিষয়টি মহাকর্ষের অভিজ্ঞতা বলা যায়। প্রাকৃতিক বিভিন্ন বলের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত হলেও মহাকর্ষ বলকে সবচেয়ে রহস্যময় বলা হয়। এই বল আমাদের পৃথিবীর কক্ষপথে ধরে রাখে। বলা যায়, মহাবিশ্বের সব গ্যালাক্সির ভাগ্য নির্ধারণ করে এই বল।
প্রকৌশলীরা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, কক্ষপথের অবস্থান মঙ্গলে মিশন পরিকল্পনার সময় মহাকর্ষ বলের ওপর নির্ভর করেন। মাটির নিচের পানির ভান্ডার বা হিমবাহের বরফ গলে যাওয়া শনাক্ত করতেও ব্যবহার করা হচ্ছে মহাকর্ষ বলের তথ্য। অনেক আগে এই মহাকর্ষ বল সম্পর্কে মানুষের তেমন ধারণা ছিল না। আইজ্যাক নিউটন বিজ্ঞানের অন্যতম গভীর এই বল সম্পর্কে বেশ বিস্তারিত ধারণা প্রবর্তন করেন। তিনিই প্রথম প্রশ্ন করেন, কোন বলের কারণে গাছের আপেল মাটিতে পড়ে? কোন শক্তির জোরে চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে কক্ষপথে অবস্থান করছে?
বিজ্ঞানী নিউটন ও আপেলগাছ নিয়ে বেশ জনপ্রিয় গল্প প্রচলিত আছে। ১৬৬৬ সালের দিকে নিউটন লিংকনশায়ারে তাঁর পারিবারিক বাড়ির বাগানে অবস্থানের সময় স্বাভাবিক এক ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন। একটি আপেলকে গাছ থেকে পড়তে দেখেন তিনি। সেই ঘটনা নিউটনকে নতুন ভাবনার সুযোগ করে দেয়। তিনি ভাবতে থাকেন, একটি আপেল যদি মাটিতে পড়ে তাহলে চাঁদও কি পড়ে যাচ্ছে? সেই চিন্তা থেকেই মহাকর্ষ বলের সর্বজনীন সূত্র আবিষ্কার করেন নিউটন। তাঁর ভাষ্যে, মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু অন্য প্রতিটি বস্তুকে এমন একটি বল দিয়ে আকর্ষণ করে যা তাদের ভরের সমানুপাতিক ও তাদের দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক। বিজ্ঞানী নিউটন পৃথিবী ও মহাবিশ্বের গতি ব্যাখ্যা করেন এই সূত্রের মাধ্যমে।
আরও পড়ুনপৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্র নয় বলে প্রমাণিত হয় যে ছবির কারণে০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫১৯১৫ সালে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন তাঁর সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্বের মাধ্যমে মহাবিশ্ব সম্পর্কে নতুন ধারণা দেন। তিনি যুক্তি দেন যে মহাকর্ষ বস্তুকে একসঙ্গে টেনে আনা কোনো বল নয়, বরং ভর ও শক্তি দ্বারা স্থান–কালের নিজস্ব বাঁক বা বক্রতা। বিভিন্ন গ্রহ চলছে মহাজাগতিক কাঠামোর বক্রতা অনুসরণ করে। এটি বোঝার একটি কার্যকর উপায় হচ্ছে স্থান–কালকে একটি টান টান কাপড়ের মতো কল্পনা করা। এর ওপর একটি ভারী টেনিস বল রাখলে কাপড়টি কিছুটা দেবে যায়। তখন কাছাকাছি থাকা সব ছোট বস্তুকে সেই দেবে যাওয়া অবস্থানের দিকে নেমে যাবে। ঠিক একইভাবে তারা ও গ্রহের মতো বিশাল বস্তুকে স্থান–কাল বাঁকিয়ে দেয়। এতে চারপাশের সবকিছু চলতে থাকে।
রহস্যময় মহাকর্ষ বল বেশ দুর্বলতম বল। এই বল সব পদার্থের ওপর, সব রকম দূরত্বজুড়ে কাজ করে। কখনোই বন্ধ হয় না। মহাজগৎকে শাসন করলেও মহাকর্ষ বল প্রকৃতির অন্যান্য বলের তুলনায় আশ্চর্যজনকভাবে দুর্বল। একটি প্রোটন ও একটি ইলেকট্রনের মধ্যেকার তড়িৎচৌম্বকীয় আকর্ষণ মহাকর্ষ বলের চেয়ে প্রায় ১ হাজার ৩৬ গুণ শক্তিশালী। এ কারণেই পরমাণু, অণু ও তাদের রসায়ন তড়িৎচৌম্বকত্ব দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
আরও পড়ুনমহাবিশ্ব দ্রুত সম্প্রসারণ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা১৩ জুলাই ২০২৫নিউটনের সেই আপেলবাগান থেকে পাওয়া প্রশ্ন ও আইনস্টাইনের বক্র স্থান–কাল ধারণার মাধ্যমে আমাদের মহাবিশ্ব সম্পর্কে ধারণা বদলে গেছে। মহাকর্ষ বল দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে চরম মহাজাগতিক ঘটনা পর্যন্ত সবকিছু শাসন করে। এই বল গ্রহকে আকার দেয়। ধূমকেতুকে পরিচালনা করে। বিভিন্ন গ্যালাক্সিকে একসঙ্গে বেঁধে রাখে। মহাজগতের সবচেয়ে ঘন কোণে এই বল নিউট্রন তারা ও ব্ল্যাকহোলের মতো বহিরাগত বস্তু তৈরি করে। আইনস্টাইনের তত্ত্ব অনেক আগেই এসব বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস