নির্বাচনের সব প্রস্তুতি ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গত তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের যথাসম্ভব বাদ দেওয়া, সব ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, দায়িত্বরত পুলিশের শরীরে ক্যামেরা স্থাপনেরও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। 

গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় এ বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান উপদেষ্টার এ নির্দেশনার কথা জানান তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতি শেষ করতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা।  

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর হতে বলেছেন ড.

ইউনূস। নির্বাচনের আগে সব ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি বদল করা এবং নির্বাচনে লটারির মাধ্যমে দায়িত্ব দেওয়ার আলোচনাও হয়েছে বৈঠকে।

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসারের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ ও কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. জিয়াউল হক উপস্থিত ছিলেন। 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা-বিষয়ক যত প্রস্তুতি রয়েছে, তা ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সংস্কারের অগ্রগতি হলে আগামী রমজানের আগে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ১১ মাসে এই প্রথম নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে দিকনির্দেশনা এলো। এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু সমকালকে বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সরকারের ঘোষণা কিংবা সিদ্ধান্ত অবশ্যই ইতিবাচক। এখন দেখতে হবে, এটা কতটুকু বাস্তবায়ন হয়।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, অবশ্যই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করতে হবে। সংস্কার এবং বিচারের অগ্রগতিও করতে হবে নির্বাচনের আগে। 

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন সমকালকে বলেন, নির্বাচনকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তা দিতে সক্ষম কিনা– তা নিশ্চিত করতে হয়। এ ছাড়া কীভাবে নির্বাচন হবে? প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের কথায় নির্বাচন দিয়ে চলে যেতে চাইছেন। শুধু নির্বাচন দেওয়ার জন্য কিংবা তাঁর মামলা খালাসের জন্য তাঁকে বসানো হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্কারও করতে হবে। 

গত ১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সংস্কার এবং বিচারের অগ্রগতি সাপেক্ষে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হতে পারে। 

এর আগে প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জানিয়েছিলেন, আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে। তবে তাঁর প্রথম ঘোষণা ছিল, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে পরের বছর জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। বিএনপির দাবি ছিল– ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন। তবে দলটি লন্ডন বৈঠকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অনেক পাঁয়তারা হয়। তাই আগামী মাসগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর হতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৮ লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন জানিয়ে তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব সদস্যের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং তা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে। 

শফিকুল আলম জানান, পুলিশ পর্যালোচনা করে দেখেছে, ৪৭ হাজার ভোটকেন্দ্রের ১৬ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এসব কেন্দ্রে কীভাবে শান্তিপূর্ণ ভোট করা যায়, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এ জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিবেচনা করা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে– পুলিশের বডি ক্যামেরা রাখা এবং প্রতিটি কেন্দ্র সিসিটিভির আওতায় আনা। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে ভোটের জন্য প্রস্তুত করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে বৈঠক থেকে। প্রেস সচিব জানান, চার দিনের পরিবর্তে নির্বাচনে সাত দিনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের কথা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, কর্মকর্তাদের নম্বর ধরে লটারির মাধ্যমে দায়িত্ব দেওয়া যায় কিনা– ভেবে দেখতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা, যাতে কেউ কোনো প্রভাব খাটাতে না পারে। 

ভোট সুষ্ঠু না হলে তা বাতিলের ক্ষমতা ইসিকে ফিরিয়ে দেওয়া যায় কিনা– খতিয়ে দেখতে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, বিগত নির্বাচনে যেসব পোলিং ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের বাদ দিয়ে এবার কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া যায় কিনা, তাও খতিয়ে দেখতে হবে।

উপজেলা, জেলা, বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়েও মনিটরিং সেল গঠন করা হবে জানিয়ে উপ-প্রেস সচিব বলেন, অনিয়ম দেখা গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। 
ভোটের দিন ইন্টারনেট সচল রাখার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, প্রায় ২ লাখ পর্যবেক্ষক এই নির্বাচনে সম্পৃক্ত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পর্যবেক্ষকের নামে যাতে কেউ দলীয় কর্মীকে নির্বাচনী কেন্দ্রে পাঠাতে না পারে– এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন। 

নির্বাচন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা থাকবে কিনা– এ প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। তিনি জানান, ১৮ থেকে ৩৩ বছর বয়সীদের জন্য পৃথক  তালিকা এবং বুথ কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। যারা প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে, যাতে  প্রথম ভোটে ভালো স্মৃতি হয়। 

বৈঠক বিষয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম সমকালকে বলেন, নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালনে ডিসেম্বরের মধ্যে পুলিশ সদস্যদের প্রস্তুত করে তোলা হবে। আগস্ট থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রশিক্ষণ শুরু হবে। কীভাবে একটি কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে হয়; কোন ধরনের বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে, তা হাতেকলমে শেখানো হবে। এ ছাড়া প্রযুক্তিগত বিষয়গুলোও প্রশিক্ষণের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট হবে– এটা ধরে নিয়ে পুলিশ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করবে। 

আইজিপি জানান, প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে সব বাহিনীর জনবল ব্যবস্থাপনার ওপর আলোচনা হয়েছে। নিখুঁত নির্বাচন মূল লক্ষ্য। কোনো কেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সমন্বয়ের মাধ্যমে তা মোকাবিলার পদ্ধতি ও কৌশল সম্পর্কে বাহিনীর সদস্যদের প্রায়োগিক ধারণা দেওয়া হবে। 

আজ ইসির সভা 

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) অধ্যাদেশসহ এক গুচ্ছ বিষয় নিয়ে ইসি আজ বৃহস্পতিবার কমিশন সভা করবে। সভার আলোচ্যসূচিতে রয়েছে– আরপিও (সংশোধন) অধ্যাদেশ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ, নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন ১৯৯১ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, মনোনয়নপত্রে প্রার্থীর হলফনামা, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা এবং বিবিধ বিষয়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে কমিশন সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

গত মার্চ মাসে পাঁচটি সংস্কার কমিশনের ১২১টি সুপারিশকে ‘আশু বাস্তবায়নযোগ্য’ চিহ্নিত করে ১২ মন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে চায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এর মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের ৯টি সুপারিশ রয়েছে। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে আরপিও সংশোধন, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন সংশোধন, নির্বাচন কর্মকর্তা বিধান আইন সংশোধন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণমাধ্যম নীতিমালা, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, হলফনামার খসড়া, ভোটার তালিকাকরণ (অভ্যন্তরীণ ও প্রবাসী), পোস্টাল ব্যালট, রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অর্থায়নে স্বচ্ছতা এবং শুদ্ধাচার চর্চা নিশ্চিতকরণ।

ঐকমত্য কমিশন-ইসি বৈঠক

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেসব সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ইসির দ্বিমত রয়েছে, সেগুলো নিয়েও কথা হয়েছে। 

ঐকমত্যের সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করে বিশেষায়িত কমিটি গঠনে একমত। তবে ইসি নিজস্ব কর্মকর্তাদের নিয়ে ইতোমধ্যে সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিটি করেছে। সংবিধান অনুযায়ী, সীমানা নির্ধারণ ইসির এখতিয়ার হলেও কমিটিতে কীভাবে বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করা যায়, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয় বলে সূত্র জানিয়েছে। 

ঐকমত্য কমিশনের সদস্য এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সভাপতি বদিউল আলম মজুমদার সমকালকে বলেন, সংস্কারের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে আলোচনা হয়েছে। সংস্কারে ইসির দ্বিমত নেই। সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ কমিটিতে বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্তিতে রাজনৈতিক ঐকমত্য রয়েছে। ইসি ইতোমধ্যে কমিটি করেছে। কমিটির সদস্যদেরও দক্ষতা রয়েছে বলে ইসি জানিয়েছে। কীভাবে সমন্বয় করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। 

বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার অংশ নেন। ছিলেন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন, নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত দ র কর র ন র দ শ ন শ চ ত কর অন ষ ঠ ত র জন ত ক শ ষ কর র জন য সদস য প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

এনসিপি সনদে স্বাক্ষর করবে কি না, সিদ্ধান্ত এখনো বিবেচনাধীন: আখতার

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করবে কি করবে না—সেটা এখনো বিবেচনাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, ‘যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়গুলো জাতির কাছে অস্পষ্ট থাকে, তাহলে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমে আমরা যেটা অর্জন করতে চাই; সেটাকে অর্জন হিসেবে সামনের দিকে প্রাপ্ত হওয়া অনিশ্চিত থেকে যাবে। এ কারণেই আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করব কি করব না—সে বিষয়গুলো বিবেচনাধীন রেখেছি।’

জুলাই জাতীয় সনদে সই করার ক্ষেত্রে এনসিপির কিছু শর্ত রয়েছে বলে উল্লেখ করেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও সরকার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতির সামনে স্পষ্ট পথনকশা উপস্থাপন করবে; আদেশের বিষয়ে কী হবে, গণভোটের প্রশ্ন কী হবে এবং সামনের সংবিধানে এ বিষয়গুলো কীভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, সে বিষয়গুলো খোলাসা করার দাবি জানিয়েছি।’

এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্টের (ভিন্নমত) মতো অনেকগুলো ইস্যু রয়েছে, সেই নোট অব ডিসেন্টগুলোকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা হবে, নোট অব ডিসেন্টের পরিণতি কী হবে, সেগুলোকে কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে; সে বিষয়গুলো খোলাসা করা হয়নি। একই সঙ্গে যে আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা হবে, সে আদেশ কীভাবে হবে, তা এখনো এনসিপির কাছে স্পষ্ট নয়।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশকে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ’ বা ‘সংবিধান সংস্কার আদেশ’ নামে জারির প্রস্তাব করেছে এনসিপি। এ কথা জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, সে আদেশ যেন সরকারপ্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জারি করা আদেশ হয়, সে দাবি তাঁরা জানিয়েছেন। গণভোটের প্রশ্ন কেমন হবে, তা এখনো এনসিপির কাছে স্পষ্ট নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আখতার হোসেন বলেন, কীভাবে সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তনগুলোকে সংস্কারকৃত সংবিধানের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে—সে বিষয়গুলো খোলাসা করেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হওয়া দরকার বলে তাঁরা মনে করেন।

আগামী শুক্রবার জুলাই সনদ স্বাক্ষরের দিন ধার্য করা হয়েছে। শুক্রবারের আগে মাত্র এক দিনে এনসিপির এসব দাবি পূরণ করা সম্ভব কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আখতার হোসেন বলেন, ‘সময় যদিও অল্প, কিন্তু আমরা মনে করি, এটা রাজনৈতিক সদিচ্ছার ব্যাপার।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এনসিপি সনদে স্বাক্ষর করবে কি না, সিদ্ধান্ত এখনো বিবেচনাধীন: আখতার
  • কোনো মহল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: রাজশাহীর কমিশনার
  • জাল টাকা নিয়ে সতর্ক করল বাংলাদেশ ব্যাংক
  • রাকসু নির্বাচন: একটি ভোটের জন্য ১৪ সেকেন্ড বরাদ্দ
  • চাকসু নির্বাচনে পুলিশ সর্বদা সতর্ক ও প্রস্তুত: পুলিশ সুপার
  • চমেক কর্তৃপক্ষের আশ্বাস কত দিনে ফুরোবে
  • নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ, ৪ হলে সভা বাতিল করল ছাত্রশিবির
  • ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবন সাময়িকভাবে ‌‘কারাগার ঘোষণা’
  • এবার দুর্গাপূজায় বড় অঘটন হয়নি, তবে সরকারের পদক্ষেপে আয়োজকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়
  • এনসিপি গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে বাধা সৃষ্টি করবে না, প্রত্যাশা সিইসির