নিউইয়র্ক শহরের ডেমোক্র্যাট মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানির প্রচারে প্রায় হাজার মানুষের দরজায় কড়া নেড়েছেন প্রচারক বেন স্যাডফ। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বারবার উঠে এসেছে কয়েকটি অভিন্ন বিষয়—বাড়িভাড়ার চড়া খরচ, শিশু যত্নের ব্যয় ও শহরের পরিস্থিতি ভুল পথে এগোচ্ছে এমন অনুভূতি।

তবে একটি বিষয় খুব কমই উঠে এসেছে। তা হলো ইসরায়েল। স্যাডফ জানান, যখন কেউ, এমনকি ইহুদি ভোটাররাও ইসরায়েলের প্রসঙ্গ তুলেছেন, তখনো তাঁদের কথা গাজা যুদ্ধ এবং এর ফলে ছড়িয়ে পড়া ক্ষুধা ও প্রায় ৬০ হাজার মানুষ (গাজা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী) নিহত হওয়ার বিষয়ে নিজেদের উদ্বেগ ঘিরে ছিল।

‘আমার মনে হয়, আমরা যা অনেক দিন ধরে জানি, এ প্রচার আমাদের তেমন কিছুই দেখিয়ে দিয়েছে’, বলেন স্যাডফ। তিনি একজন ইহুদি ও ম্যানহাটানে বাইকের কারিগর হিসেবে কাজ করেন। তাঁর কথায়, ‘নিউইয়র্কে প্রায় ১০ লাখ ইহুদি আছেন। তাঁদের নানা বিষয়ে নানা মত রয়েছে।’

ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাইমারিতে (প্রাথমিক বাছাই ভোট) মামদানির সুস্পষ্ট জয় অনেক ইহুদি নাগরিককে উদ্বিগ্ন করেছে। কারণ, তিনি ইসরায়েলবিরোধী মনোভাব প্রকাশে নির্ভীক। কিন্তু অনেক ইহুদি নিউইয়র্কবাসীও তাঁকে ভোট দিয়েছেন।

এই ভোটারদের অনেকে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইসরায়েল নিয়ে মামদানির অবস্থান তাঁদের বিচলিত করেননি; বরং নিউইয়র্ক শহরের জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে তিনি যেভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন, সেটিই তাঁদের কাছে মুখ্য বিবেচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। অনেকে বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলের আচরণের বিষয়ে মামদানির প্রতিবাদ তাঁদের নিজের অবস্থানের সঙ্গেই মেলে।

নিউইয়র্ক শহরের মেয়র পদে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী মামদানি একজন মুসলিম ও ফিলিস্তিনপন্থী। তিনি ইসরায়েলবিরোধী কণ্ঠস্বরও। তা সত্ত্বেও প্রাইমারিতে তাঁর বড় জয়ে অবদান রেখেছেন বহু ইহুদি ভোটার, যাঁরা বিশ্বাস করেন—ইসরায়েলের সমালোচনা আর ইহুদিবিদ্বেষ এক নয়।

মামদানি এমনভাবে ইসরায়েলের সমালোচনা করেছেন, যা একসময় নিউইয়র্কের মতো শহরে কোনো নির্বাচিত কর্মকর্তার জন্য অকল্পনীয় ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি ইহুদি জনসংখ্যা এ শহরের। তারপরও তিনি ইসরায়েলকে ‘বর্ণবৈষম্যমূলক রাষ্ট্র’ বলে উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, শুধু ইহুদিদের পক্ষে রাজনৈতিক ও আইনি কাঠামো না সাজিয়ে দেশটিকে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ইসরায়েলকে আর্থিকভাবে কোণঠাসা করতে চাওয়া ‘বর্জন, পুঁজি প্রত্যাহার ও নিষেধাজ্ঞা’ (বিডিএস) আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন তিনি।

এমনকি গাজায় গণহত্যা চলছে—এ বক্তব্যেও মামদানি একমত। এ বক্তব্য তুলে ধরেছেন ইসরায়েলের নেতৃস্থানীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলো ও গণহত্যাবিষয়ক গবেষকেরা। এই গবেষকদের মধ্যে কেউ কেউ ইসরায়েলি। তবে ইসরায়েল সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ইসরায়েল নিয়ে মামদানির এমন অবস্থান তাঁকে জায়নবাদী ইহুদি গোষ্ঠীগুলোর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। এসব গোষ্ঠীর অনেকে তাঁকে ইহুদিবিদ্বেষী আখ্যা দিয়েছে। যদিও মামদানি এ অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদের কেউ কেউ, বিশেষ করে সাবেক গভর্নর (নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের) অ্যান্ড্রু কুমো তাঁর বিরুদ্ধে এসব বিষয়কে প্রচারণায় ব্যবহার করেছেন। কুমো এবার মেয়র পদের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন।

ইসরায়েল নিয়ে মামদানির দৃষ্টিভঙ্গি এখনো ইহুদি সমাজে স্বীকৃত মূলধারার চিন্তা থেকে অনেক দূরে। ভাগ্যের পরিহাস এই যে অর্থনৈতিক ইস্যুতে তাঁর প্রগতিশীল নীতিগুলো ইহুদি ভোটারদের এক বড় অংশের সমর্থন পেতে পারত। কিন্তু ইসরায়েল নিয়ে তাঁর বিষাক্ত অবস্থান ওই একই ভোটারদের জন্য সেটি মেনে নেওয়া অসম্ভব করে তুলেছে।—স্টিভ ইসরায়েল, সাবেক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য

স্টিভ ইসরায়েল সাবেক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য। তিনি লং আইল্যান্ড ও কুইন্সের কিছু অংশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। স্টিভ বলেন, প্রাইমারিতে মামদানির জয় কিছু ইহুদি নিউইয়র্কবাসীর কাছে ‘টোয়াইলাইট জোন স্টাফ’ (অস্বাভাবিক ও অবিশ্বাস্য পরিস্থিতি, যা বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন) এর মতোই অদ্ভুত লেগেছে।

স্টিভ বলেন, ইসরায়েল নিয়ে মামদানির দৃষ্টিভঙ্গি এখনো ইহুদি সমাজে স্বীকৃত মূলধারার চিন্তা থেকে অনেক দূরে। ভাগ্যের পরিহাস এই যে অর্থনৈতিক ইস্যুতে তাঁর প্রগতিশীল নীতিগুলো ইহুদি ভোটারদের এক বড় অংশের সমর্থন পেতে পারত। কিন্তু ইসরায়েল নিয়ে তাঁর বিষাক্ত অবস্থান ওই একই ভোটারদের জন্য সেটি মেনে নেওয়া অসম্ভব করে তুলেছে।

তবুও এসবের কিছুই মামদানিকে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কুমোর বিরুদ্ধে প্রাইমারিতে সুস্পষ্ট জয় পাওয়া থেকে আটকে রাখতে পারেনি।

মামদানিকে ঠিক কত ইহুদি ভোটার সমর্থন দিয়েছেন, তা নির্ধারণ করা কঠিন। এমনকি নিউইয়র্কেও ইহুদি জনসংখ্যা বেশির ভাগ জরিপে নির্ভুলভাবে পরিমাপ করা যায় না। কারণ, এখানকার জনসংখ্যার অনুপাতে তাঁরা তুলনামূলকভাবে বেশ কম। যেসব এলাকায় অর্থোডক্স (রক্ষণশীল) ইহুদি সম্প্রদায়ের সংখ্যা বেশি, সেখানে কুমো বিপুল ভোটে জিতেছেন। ব্রঙ্কসের রিভারডেলসহ কিছু ঘনবসতিপূর্ণ ইহুদি অঞ্চলেও তিনি এগিয়ে ছিলেন। তবে অর্থোডক্সদের বাইরে ইহুদি ভোটারদের বসবাস ছড়ানো–ছিটানো হওয়ায় ভোটকেন্দ্রভিত্তিক বিশ্লেষণটা কঠিন।

মামদানি শুধু মেয়র প্রার্থী নন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েল নিয়ে প্রকাশ্যে অবস্থান নেওয়া নতুন প্রজন্মের রাজনীতিকদের প্রতীকও। নিউইয়র্কের ইহুদি ভোটারদের একাংশ তাঁর ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থান শুধু মেনে নেননি; বরং সেটিকেই ন্যায়ের পক্ষে কণ্ঠস্বর বলে বিবেচনা করেছেন।

তবু মামদানির এমন বড় জয় এটিই বোঝায়, তিনি নানা সম্প্রদায় থেকেই অন্তত কিছু সমর্থন পেয়েছেন। নির্বাচনের আগের জরিপগুলো মামদানির সমর্থনকে সাধারণভাবে কম দেখিয়েছিল। সেগুলোতেও দেখা গেছে, ইহুদি ভোটারদের মধ্যে তাঁর সমর্থন ছিল দুই অঙ্কের ঘরে (১০ শতাংশ বা এর বেশি)।

র‍্যাঙ্কড চয়েস ভোটিংয়ের ফলাফলেও দেখা গেছে, শহরের সর্বোচ্চ পদস্থ ইহুদি কর্মকর্তা ও সিটি কম্পট্রোলার ব্র্যাড ল্যান্ডারকে যাঁরা প্রথম পছন্দ হিসেবে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের দুই–তৃতীয়াংশই দ্বিতীয় পছন্দ হিসেবে মামদানিকে বেছে নিয়েছেন। ব্র্যাড ল্যান্ডার নিজেও প্রাথমিক ভোটে মামদানিকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, র‍্যাঙ্কড চয়েস ভোটিং পদ্ধতিতে ভোটাররা একাধিক প্রার্থীকে পছন্দের ক্রম, অর্থাৎ প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ইত্যাদি অনুসারে ভোট দেন।

আরও পড়ুনভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা কেন জোহরান মামদানিকে আক্রমণ করছেন২৩ জুলাই ২০২৫

মামদানির প্রচার দলের যোগাযোগ পরিচালক ও তাঁর একাধিক ইহুদি উপদেষ্টার একজন জেফরি লার্নার। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ধনকুবের শ্রেণি ও রিপাবলিকানদের লাগাতার ভয়ভীতি দেখানোর পরও হাজার হাজার ইহুদি নিউইয়র্কবাসী গর্বের সঙ্গে জুনের নির্বাচনে মামদানিকে ভোট দিয়েছেন। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

সম্প্রতি এক শনিবার প্রোসপেক্ট পার্কে ‘টট শাব্বাত’ নামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মামদানি নগরবাসীর জীবনযাত্রা সাশ্রয়ী করা ও বসবাসযোগ্য শহর তৈরির বিষয় সামনে আনেন। অনুষ্ঠানে গণপরিবহন নিয়ে জানতে দুই ডজন ইহুদি পরিবার একত্র হয়। এ আয়োজনের পেছনে ছিল ‘জিউশ ফর রেসিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক জাস্টিস’ নামে মামদানির প্রচারে সরব এক গোষ্ঠী।

অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া ৩৭ বছর বয়সী এমিলি হফম্যান বলেন, ‘আমি একজন ইহুদি হিসেবে তাঁকে ভোট দিতে পেরে গর্বিত।’ আশপাশে শিশুদের কেউ গান গাইছিল, কেউ বই পড়ছিল, কেউ কাডবোর্ডের তৈরি বাসের পাশে খেলছিল, যেটি প্রতীকীভাবে মামদানির দ্রুত ও বিনা ভাড়ায় বাস পরিষেবার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি তুলে ধরছিল।

‘জোহরানকে শুধু তাঁর জাতিগত পরিচয় আর ফিলিস্তিন নিয়ে রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে যেন শুরুর দিক থেকেই ইহুদিবিদ্বেষী হিসেবে ধরে নেওয়া হচ্ছে। এটা খুবই অন্যায়’, বলেন হফম্যান। চূড়ান্ত ভোটে জিতলে মামদানি হবেন নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র।

আরও পড়ুনজোহরান মামদানির নিউইয়র্ক জয় যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থী রাজনীতিকে চাঙা করছে২৬ জুন ২০২৫ম্যানহাটানে সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়াচ্ছেন নিউইয়র্ক সিটির ডেমোক্রেটিক পার্টির মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি। ২৯ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম মদ ন র প র ন ম মদ ন ন উইয র ক ইসর য় ল র ন উইয়র ক ম মদ ন ক র জন ত ক অবস থ ন কর ছ ন বল ছ ন ইসর য শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা: সাদিক কায়েম

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদেরের বিভিন্ন অভিযোগের জবাব দিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা মো. আবু সাদিক কায়েম। তিনি দাবি করেছেন, ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তা করার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

গতকাল রোববার মধ্যরাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এই দাবি করেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম।

এর আগে গতকাল রাতে এক ফেসবুক পোস্টে আবদুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে হলে থাকার কারণে ছাত্রশিবিরের যারা সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগ করত, তারা মূলত আইডেনটিটি ক্রাইসিস (আত্মপরিচয়ের সংকট) থেকে উতরানোর জন্য কিছু ক্ষেত্রে অতি উৎসাহী কর্মকাণ্ডে জড়াত। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর সাদিক কায়েম এমন কয়েকজনকে বাঁচাতে তদবির করেন বলে অভিযোগ তোলেন আবদুল কাদের।

আরও পড়ুনছাত্রলীগ পরিচয়ে নির্যাতনের অংশীদার হতেন ‘ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা’, দিলেন অনেকের পরিচয়১৪ ঘণ্টা আগে

আবদুল কাদেরের বিভিন্ন অভিযোগের জবাবে ছাত্রশিবির নেতা সাদিক কায়েমের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো—

১. বিপ্লবের পর দুইটি কনসার্ন ছিল। প্রথমটি ছিল অপরাধের বিচার। দ্বিতীয়টি ছিল বিচারের নামে নিরীহ কোনো ব্যক্তির হয়রানি না হওয়া।

সে সময় অনেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে জানান যে ‘তারা ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত থাকলেও কোনো ফৌজদারি অপরাধ করেননি এবং ব্যক্তিগত আক্রোশবশত মামলায় তাদের নাম যুক্ত করা হচ্ছে।’

স্বাভাবিকভাবেই গণহারে মামলার আশঙ্কা থাকলে কে অপরাধী আর কে নিরপরাধ, তা যাচাই করার জন্য আন্দোলনে সক্রিয় নানা স্টেকহোল্ডারের কাছে তথ্যগুলো ফরওয়ার্ড করে পারস্পরিক ফিডব্যাকের ভিত্তিতে ভেরিফাই করাটা জরুরি ছিল। তাই বেশ কয়েকটি কনসার্ন বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পেয়ে আমি এনসিপি নেতা ও সংস্কার কমিশনের এক সদস্য আরমান হোসেন এবং মাহিনকে ফরওয়ার্ড করি অধিকতর তদন্তের জন্য।

তাদের বলেছি, এমন একটি দাবি এসেছে যে তারা হামলায় যুক্ত ছিলেন না, এই দাবিটি খতিয়ে দেখতে, যাতে অসচেতনতা বশত নিরপরাধ কেউ ভিকটিম না হন।

২. এনসিপি থেকে শুরু করে সব দলের নেতারাই সে সময় এ রকম বিভিন্ন সুপারিশ পেয়েছেন এবং নিজেদের মধ্যে চালাচালি করেছেন ভেরিফাই করার জন্য।

আবদুল কাদের নিজেই উল্লেখ করেছেন, মামলার তালিকাগুলো আমরা পারস্পরিক আলোচনা করে প্রস্তুত করেছি। এখন, নিজেদের মধ্যে কথা না বললে কীভাবে জানব—আসলে কেউ অপরাধী, নাকি তাকে হয়রানি করা হচ্ছে?

৩. স্ক্রিনশটে যাদের নাম যুক্ত আছে, তারা কেউই শিবিরের কেউ না। ৫ আগস্টের পর থেকেও তারা শিবিরের কোনো পদে বা কর্মসূচিতে ছিলেন না।

ফলে, ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তা করার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

৪. সাঈদী নামের এক ছেলেকে মামলা থেকে বাঁচাতে আমি নাকি বিভিন্ন জায়গায় কল করেছি—এটাও একটি মিথ্যা।

সাঈদী অপরাধী, এবং তাকে বাঁচানোর কোনো প্রশ্নই আসে না।

৫. মুহসিন হলের একজনের সাথে আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ উক্ত শাহাদাতকে আমি চিনিই না।

তা ছাড়া, কাদের লিখেছে, ‘চব্বিশ সালের সেপ্টেম্বরে এই মামলা হওয়ার পরে শাহাদাতকে নিয়ে একজন পোস্ট করেন। পরবর্তীতে ওই পোস্টদাতার সাথে শিবিরের তৎকালীন সভাপতি সাদিক কায়েম যোগাযোগ করেন।’

আচ্ছা, আমি যদি ফোন দিতেই চাইতাম, তাহলে তো সেটা মামলা হওয়ার আগেই দেওয়ার কথা ছিল। মামলা হওয়ার পরে কেউ একজন ফেসবুকে পোস্ট দিলে সেই পোস্টদাতাকে ফোন দেওয়ার কী দরকার!

এলাকায় থাকতে কোনো সময় শিবির করেছে, তামিরুল মিল্লাতে অধ্যয়নরত অবস্থায় শিবিরের কোনো আয়োজনে অংশ নিয়েছে, শিবিরের নেতা হিসেবে বা শিবির কানেকশন ব্যবহার করে জুলাইয়ের বড় নেতাও হয়েছে—কিন্তু এখন উগ্র শিবিরবিদ্বেষী—এমন মানুষের সংখ্যাও কম না।

যদি জীবনের কোনো এক ধাপে সাময়িক সময়ের জন্য ব্যক্তিগত সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে কেউ শিবিরের সাথে যোগাযোগ রাখে, পরবর্তীতে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিবিরবিরোধী ভূমিকা নেয় অথবা ছাত্রলীগে যুক্ত হয়—এবং, এমন নরপশুদের কর্তৃক ছাত্রশিবিরের জনশক্তিরা নিয়মিত ভিক্টিম হওয়া সত্ত্বেও তাদের কর্মকাণ্ডের দায়ভার যদি শিবিরকে নিতে হয়, তাহলে শিবির ছেড়ে বাগছাস-এনসিপিতে চলে যাওয়া ব্যক্তিদের কৃতিত্ব, দুর্নীতিসহ অন্যান্য নেতিবাচক ও ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের দায়ভারও তো শিবিরকে নিতে হবে!

সেটা কি যৌক্তিক হবে?

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বেসবলে’ ৬৭৫০ স্বাক্ষর
  • মৌলিক সংস্কারে শর্ত সাপেক্ষে একমত হওয়া উদ্বেগজনক
  • আবুল হাসানকে নিয়ে নতুন গল্পগাছা ও পূর্বাপর
  • সরকারের কাছ থেকে ভোট আদায় করেই ছাড়ব: মির্জা আব্বাস
  • অচলায়তন ভেঙে সক্রিয় হওয়ার অপেক্ষায় কোয়াব
  • রক্তাক্ত ৪ আগস্ট: ফেনীতে গুলিতে ঝরে যায় ৭ তরুণের প্রাণ
  • হাতকড়াসহ নৌকা থে‌কে হাওরে ঝাঁপ দি‌য়ে আওয়ামী লীগ নেতার পলায়ন
  • ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা: সাদিক কায়েম
  • ‘নোট অব ডিসেন্ট’সহ সনদ প্রকাশ উচিত নয়