মায়ের দোয়া, বাবার কবর জিয়ারত ও কোহলির প্রেরণা—এই তিনে মিলেই সিরাজ
Published: 5th, August 2025 GMT
মোহাম্মদ সিরাজের বাবা মির্জা মোহাম্মদ গাউস ছিলেন অটোরিকশাচালক। ছেলের গায়ে ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি তিনি দেখে যেতে পেরেছিলেন। ২০১৭ সালে টি–টোয়েন্টি সংস্করণে ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সিরাজের অভিষেক। চার বছর পর ২০২১ সালে সিরাজ অস্ট্রেলিয়া সফরে থাকতে ৫৩ বছর বয়সে মারা যান গাউস। বিশ্বে তখন করোনা মহামারি চলছিল, অস্ট্রেলিয়ায় কড়া কোয়ারেন্টিন নিয়মের কারণে বাবার শেষকৃত্যে থাকতে পারেননি সিরাজ।
আরও পড়ুনমোহাম্মদ সিরাজ: ওয়ালপেপারে রোনালদো, গুগলের মজা এবং ভাইয়ের গর্ব৬ ঘণ্টা আগেবাবার মৃত্যুর পর থেকে একটি বিষয় সিরাজ মেনে চলেন। ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, যেকোনো সফরের আগে ও পরে সিরাজ তাঁর বাবার কবরে যান। সফরে যাওয়ার আগে বাবার কবরে গিয়ে দোয়া করার পাশাপাশি আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন। সফর শেষে বিমানবন্দরে নেমে ঘরে ফেরার আগেও একবার বাবার কবরটা দেখে যান।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, গত জুনে ইংল্যান্ড সফরে যাওয়ার আগে সিরাজ ব্যাগ গুছিয়ে তাঁর মাকে বলেছেন, ‘আম্মা, আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি ভালো করতে চাই। ভারতকে জেতাতে চাই।’ এরপর সিরাজ বাবার কবরে গিয়ে দোয়া করে তারপর বিমানবন্দরের পথ ধরেন। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে সিরাজের মা শাবানা বেগম আরও বলেছেন, ‘বাবাকে সে খুব ভালোবাসে। বাবাও তাকে খুব ভালোবাসতেন—তার (সিরাজ) জন্য তিনি যেকোনো কিছুই করতেন। সিরাজের জন্য সব সময় দোয়া করি। সৃষ্টিকর্তা আমার সন্তানের ওপর রহম করুন এবং সবকিছুতে সাফল্য দিন।’
ভারত–ইংল্যান্ড সিরিজে প্রায়ই দেখা গেছে সিরাজের উদ্যাপনের দৃশ্য। সর্বোচ্চ উইকেটও তাঁর.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ব র কবর
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই গণঅভ্যুত্থাণের আলোচনা সভা শেষে ছাত্রদলের তোপের মুখে শাবিপ্রবি উপাচার্য
জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের আলোচনা শেষে তাদের তোপের মুখে পড়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম শরিফুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাভবন এর সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় উপাচার্য তাদের সঙ্গে বসার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।
এদিকে, শাবিপ্রবি প্রশাসনের বিভিন্ন অফিসিয়াল অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের একচেটিয়া সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করে শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। পরে উপাচার্যের মুখোমুখি হওযার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জুনতলায় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গোলচত্বরে একত্রিত হন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
আরো পড়ুন:
‘অ্যান্টিবায়োটিক গুরুতর হুমকি হয়ে উঠছে’
এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল শাবিপ্রবি প্রশাসন
এ সময় তারা ‘লাখো শহিদের রক্তে কেনা, দেশটা কারো বাপের না’, ‘জিয়ার সৈনিক এক হও, লড়াই করো’, ‘ভুয়া ভুয়া প্রশাসন ভুয়া’, ‘লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘জুলাইয়ের গাদ্দাররা হুশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এর আগে, শাবিপ্রবি প্রশাসন আয়োজিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভা বয়কটের ঘোষণা দেয় ছাত্রদল।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাঈম সরকার বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের আজকের আলোচনা সভায় গিয়ে দেখি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরাই অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনা করছে। তাদের একজনকে অনুষ্ঠানের সমন্বয়ে দায়িত্ব দিয়ে অনুষ্ঠান পরিচালনা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অনুষ্ঠানের সূচনা, খাবার ব্যবস্থাপনাসহ সব কিছুতেই বৈষম্যবিরোধী নেতাকর্মীদের দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।”
তিনি আরো বলেন, “৫ অগাস্ট পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছিল সব দল-মতের ছাত্রদের ব্যানারে। কিন্তু পরে তারা যখন সরাসরি রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করে, তখন সেই ব্যানার প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। তারপরও প্রশাসন তাদের একচেটিয়া সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। গত ১ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড ব্যবহার করে তারা ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টার মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রম চালিয়েছে।”
শাখা ছাত্রদলের সভাপতি রাহাত জামান বলেন, “আজকের প্রোগ্রামটা ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটা প্রোগ্রাম। অথচ আজকের এ প্রোগ্রামে আমাদেরকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে একজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতার মাধ্যমে। প্রশাসন তাদেরই বারবার নানা ফান্ড ও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ১৫২ জনের মতো কর্মী শহীদ হয়েছিল। অথচ আমরা দেখছি, প্রশাসন একটি গোষ্ঠীকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দিয়ে ছাত্রদলের সাথে বৈষম্য করছে।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও নির্দেশনা পরিচালক ড. মো. এছাক মিয়া বলেন, “আজকের প্রোগামের আয়োজক ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। সমন্বয়ক পবন শুধু শহীদ পরিবারকে স্টেজে কথা বলার আমন্ত্রণ জানাই। কারণ সে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের কাজ করেছিল। আর খাবারের দায়িত্ব ছাত্রদের দেই। আমি যেহেতু ছাত্রদের সঙ্গে সম্পর্কিত, এজন্য কিছু ছাত্রদের নিয়ে কাজ করে নিয়েছি।”
তিনি বলেন, “কিন্তু ফান্ডিংসহ সব খরচও আমার অফিস থেকে হচ্ছে এবং আমি তাদের দিয়ে খরচ করিয়ে নিয়েছি, এগুলো মিথ্যা। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে কোনো প্লাটফর্ম এখন নেই, যারা আন্দোলনে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল ও আগ্রহ দেখিয়েছে তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্যরা কিন্তু এভাবে আগ্রহ দেখায়নি।”
ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী