পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের ‘বন্ধুত্ব’ ভেঙে যাওয়ার পর...
Published: 7th, August 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা করা কোম্পানিগুলোর ওপর অপ্রত্যক্ষ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার সময়সীমা কমিয়ে আনার পরিকল্পনা যখন ঘোষণা করলেন, ক্রেমলিন সেটি অবজ্ঞাভরে উপেক্ষা করল।
মস্কোর কর্মকর্তারা কিছুই হয়নি, এমন ভঙ্গিতে বিবৃতি দিয়েছেন। এটাকে তাঁরা আরেকটি পশ্চিমা ধাপ্পাবাজি বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। ৮ আগস্ট সময়সীমা আসন্ন হলেও ক্রেমলিনের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলছেন যে তাঁরা পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত।
কিন্তু বাজার এত বোকা তো নয়। গত কয়েক দিনে ডলারের বিপরীতে রুশ রুবলের মান প্রায় ৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। রাশিয়ার প্রধান পুঁজিবাজারের সূচক ১ দশমিক ৫ শতাংশ পড়ে যায়। জ্বালানি খাতের বড় কোম্পানি এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। এর কারণ হলো ক্রমবর্ধমান ভূরাজনৈতিক ঝুঁকির কথা বিবেচনা করছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩১ জুলাই আবারও কঠোর অবস্থান নিলেন। তিনি ঘোষণা করলেন যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। ইউক্রেনে রাশিয়ার বোমাবর্ষণের প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বললেন, ‘আমি মনে করি, তারা যেটা করছে, সেটা জঘন্য।’
আরও পড়ুনপুতিন যে দুই জায়গায় ট্রাম্পকে পাত্তা দেন না২৯ মে ২০২৫অপ্রত্যক্ষ নিষেধাজ্ঞা শুধু রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিন কোম্পানিগুলোর বাণিজ্যের পথ বন্ধ করবে না। এই নিষেধাজ্ঞা বিদেশি কোম্পানিগুলোকেও (যদি তারা নিষেধাজ্ঞা মানতে ব্যর্থ হয়) মার্কিন আর্থিক ব্যবস্থার বাইরে ছুড়ে ফেলতে পারে। ফলে প্রকৃত চাপ তৈরি হবে চীন, ভারত ও তুরস্কের মতো দেশগুলোর ওপর। এই তিনটি দেশই রাশিয়ার জ্বালানির প্রধান ক্রেতা। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধযন্ত্রকে অর্থ জোগায়।
চীন ও তুরস্ক এই ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের চাপে (অন্তত প্রকাশ্যে) মাথা নত করবে না। চীন এখনো রাশিয়ার কাছ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের তেল কিনছে, আর তুরস্ক মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
যাহোক, ভারত তার অবস্থান পরিবর্তন আনতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহে ভারতের বেশ কয়েকটি তেল পরিশোধনাগার রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে অপ্রত্যক্ষ নিষেধাজ্ঞার হুমকি পর্দার আড়ালে ইতিমধ্যেই কাজ করতে শুরু করেছে। ব্লুমবার্গ-এর খবর জানাচ্ছে, ভারত সরকার পরিশোধনাগারগুলোকে, রাশিয়া বাদে অন্যান্য উৎস থেকে তেল আমদানির পরিকল্পনা তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছে।
পুতিন ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে বিবেচনায় আনবেন না, যতক্ষণ না তিনি ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল (দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন) পুরোপুরিভাবে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারেন। এখন যুদ্ধের গতি তার পক্ষে, তাই এটা ভাবার বিশেষ কারণ নেই যে তিনি এখানেই থেমে যাবেন।তবে ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন যে ভারত রাশিয়া থেকে সস্তা দামে জ্বালানি তেল সংগ্রহ চালিয়ে যাবে। ভারতের অর্থনৈতিক নীতিকে অন্য কোনো দেশের হাতে সঁপে দেবে না তারা।
বাইরে বাইরে প্রতিবাদী অবস্থান দেখালেও ভারত ও অন্যান্য দেশে যে উদ্বেগ বাড়ছে সেই লক্ষণ দেখা দিচ্ছে। ট্রাম্প যদি সত্যিই তার হুমকি কার্যকর করেন, তবে পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। রাশিয়ার বাণিজ্যকে যারা টিকিয়ে রেখেছে তাদের জন্য মার্কিন আর্থিক ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার সীমিত হওয়া, উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ এবং ব্যাংক, বিমা কোম্পানি ও জাহাজ পরিবহনকারী সংস্থাগুলোর ওপর প্রতিকূল প্রভাব পড়বে।
শুধু রাশিয়ার তেল বিক্রিতে নয়, বরং মস্কোর সঙ্গে অন্যান্য বাণিজ্য করছে, এমন দেশগুলোর বিস্তৃত নেটওয়ার্ককেও বড় ধরনের ধাক্কা দেবে এই অপ্রত্যক্ষ নিষেধাজ্ঞা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় জার্মানি ও ইতালির যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রনিকস পণ্য এবং ব্রাজিল ও উজবেকিস্তানের খাদ্য ও তৈরি পণ্যের ওপর নির্ভর করেই রাশিয়ার যুদ্ধকালীন অর্থনীতি টিকে আছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশকে দেখে পাকিস্তানকে শিখতে বললেন কামরান আকমল
সুপার ফোর শুরু হতেই জমে উঠেছে এশিয়া কাপ। শনিবার সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ম্যাচে বাংলাদেশ দল শ্রীলঙ্কার ১৬৮ রান তাড়া করেছে ১ বল বাকি থাকতে। আজ এশিয়া কাপে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ। এ ম্যাচের আগে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের কাছ থেকে শিখতে পরামর্শ দিয়েছেন দেশটির সাবেক ক্রিকেটার কামরান আকমল। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের খেলার প্রশংসাও ঝরেছে তাঁর মুখে।