পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলও) ও তাদের সশস্ত্র শাখা মাজিদ ব্রিগেডকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (১১ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এসব তথ্য জানিয়েছে।

এই সিদ্ধান্তকে যুক্তরাষ্ট্রে সফরকালীন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের আহ্বানের সরাসরি ফলাফল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যেখানে তিনি বেলুচ বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, এই পদক্ষেপ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্কিন সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর লক্ষ্য হলো এই গোষ্ঠী ও তাদের সশস্ত্র শাখার অর্থায়ন বন্ধ করা। 

আরো পড়ুন:

ওয়াশিংটন ডিসি থেকে গৃহহীনদের ‘অবিলম্বে’ সরে যেতে বললেন ট্রাম্প

অর্ধেক বিশ্বকে সঙ্গে নিয়ে ধ্বংস হব: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান

২০২৪ সালে করাচি বিমানবন্দর ও গোয়াদার বন্দর কমপ্লেক্সের কাছে হামলা এবং গত মার্চে জাফর এক্সপ্রেসে ট্রেন ছিনতাইয়ের দায় স্বীকার করে বিএলএ। অন্যদিকে, পাকিস্তানে বেশ কয়েকটি আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেছে মাজিদ ব্রিগেড। ২০০৬ সালে বিএলএকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে পাকিস্তান সরকার।

পাকিস্তানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য বেলুচিস্তান ভৌগোলিক আয়তনের দিক থেকে দেশটির বৃহত্তম রাজ্য বা প্রদেশ। এটি পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবিরল, স্বল্পোন্নত ও দারিদ্র্যপীড়িত রাজ্য। পুরো পাকিস্তানের জনগণ যেখানে ২৪ কোটি, সেখানে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ১৯০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বেলুচিস্তানের জনসংখ্যা মাত্র দেড় কোটি।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে পাকিস্তানের স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই স্বাধীনতা সংগ্রাম চলছে বেলুচিস্তানে, যাকে বিচ্ছিন্নতাবাদ বলে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার ও সামরিক বাহিনী। পাকিস্তানের এই রাজ্যে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে নিয়মিতই সংঘাত হয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের। বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি পাকিস্তান সরকারকে এই অঞ্চলের খনিজ সম্পদ শোষণ ও স্থানীয় বালুচ সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ করে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র স গঠন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কুমারখালী পৌরসভায় কিলঘুষিতে গাড়িচালকের মৃত্যুর অভিযোগ, অভিযুক্ত কর্মচারীর বাড়ি ভাঙচুর

কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভায় বকেয়া বেতন নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে কর্মচারীর কিলঘুষিতে এক গাড়িচালকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পৌর ভবনের একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পরে অভিযুক্ত ব্যক্তির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। একপর্যায়ে পৌর ভবনের প্রধান ফটক আটকে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম শহিদুল আলম (৫৭)। তিনি পৌর এলাকার শেরকান্দি এলাকার বাসিন্দা। অন্যদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ফিরোজুল ইসলাম। তিনিও পৌর এলাকার শেরকান্দির বাসিন্দা এবং পৌরসভার সার্ভেয়ার হিসেবে কর্মরত।

শহিদুলের মেয়ে সুবর্ণা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ‘পৌরসভায় বড় কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন হয়। আমার বাবা ছোট কর্মচারী। তাঁর বেতন হচ্ছিল না। আজ সকালে বেতন চাইতে গেলে পৌরসভার সার্ভেয়ার মো. ফিরোজুল ইসলাম বাবাকে ব্যাপক কিলঘুষি ও লাথি মেরে হত্যা করে। পরে লাশটি পৌরসভার ১০১ নম্বর কক্ষে আটকে রেখেছিল। আমি থানায় মামলা করব। আসামিদের ফাঁসি চাই।’

পুলিশ, পৌরসভা ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, প্রথম শ্রেণির কুমারখালী পৌরসভায় প্রায় ৫৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। তাঁরা ৪২ মাসের বকেয়া বেতন বাবদ ১০ কোটি টাকা বেতন পাবেন। আজ সকালে বেতনের দাবিতে পৌরসভার বিভিন্ন কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন গাড়িচালক শহিদুল ইসলাম। ওই সময় সার্ভেয়ার ফিরোজুলের কক্ষটি (১১৫ নম্বর) বন্ধ করতে যান। তখন ফিরোজুলের সঙ্গে শহিদুলের তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে কিলঘুষি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে পৌরসভায় অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মিলে ফিরোজুলকে ১১৫ নম্বর এবং শহিদুলকে ১০১ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন। কিছুক্ষণ পর ১০১ নম্বর কক্ষে গিয়ে তাঁরা শহিদুলকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে সকাল ১০টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শহিদুলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার গাড়িচালক শহিদুলের মৃত্যুর খবরে জনতার বিক্ষোভ। আজ সকালে পৌরসভা চত্বরে

সম্পর্কিত নিবন্ধ