পাবনায় সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বেড়াবাসীর বিক্ষোভ
Published: 21st, September 2025 GMT
পাবনা-১ ও পাবনা-২ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে এবং আগের সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে বেড়া উপজেলার বাসিন্দাদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। আজ রোববার দুপুরে তাঁরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে স্মারকলিপি দিয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী দুপুর ১২টার দিকে বেড়া থেকে বাস নিয়ে কয়েক শ মানুষ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আসেন। এরপর তাঁরা কার্যালয়ের মূল ফটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভের পর বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে দাবির পক্ষে স্মারকলিপি দেন। এরপর বেলা একটার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা মিছিল নিয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে যান। সেখানে একইভাবে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
দীর্ঘদিন ধরে বেড়ার একাংশ ও সাঁথিয়া উপজেলা নিয়ে পাবনা-১ আসন এবং বেড়া অপর অংশ ও সুজানগর উপজেলা নিয়ে পাবনা-২ নির্বাচনী আসন ছিল। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের গেজেটে সাঁথিয়াকে এককভাবে পাবনা-১ এবং বেড়া ও সুজানগরকে মিলিয়ে পাবনা-২ আসন করার সিদ্ধান্ত হয়। এর প্রতিবাদে এবং আগের আসন পুনর্বহালের দাবিতে বেড়া উপজেলাবাসী সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি গঠন করে টানা আন্দোলনের ঘোষণা দেন। আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগে ৭ সেপ্টেম্বর স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। একই দাবিতে ১৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার সড়ক ও নৌপথ বন্ধ করে হরতাল পালন করা হয়।
বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা বলছেন, নতুন করে সীমানা নির্ধারণের ফলে বেড়া উপজেলার মানুষ বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। তাঁরা বলছেন, দাবি আদায়ে তাঁরা মাঠে নামতে বাধ্য হয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা।
উপজেলাবাসীর এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন ইকবাল বলেন, ‘বেড়া উপজেলা দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের একজন মন্ত্রীর পরিবারের কাছে জিম্মি হয়ে ছিল। উপজেলায় শুধু লুটপাট হয়েছে, কোনো উন্নয়ন হয়নি। বেড়াকে সাঁথিয়া থেকে বাদ দিলে উপজেলাবাসী আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে আমরা ঘোষিত প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সীমানা পুনর্বহালের বাদি করছি।’
দাবি আদায়ে গঠিত সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফজলুর রহমান ফকির বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কারণে বেড়া থেকে সাথিঁয়াকে আলাদা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এলাকার ভৌগোলিক বিষয় না দেখে না বুঝে এই সিদ্ধান্ত দিয়েছে। সামাজিকতা, ব্যবসা, রাজনীতি—সবকিছু আমাদের এক। আমরা এই অন্যায় আসনবিন্যাস মানি না। অবিলম্বে আসন পুনর্বহালের দাবি করি।’
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা স্মারকলিপি পেয়েছি। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে। আশা করছি, কমিশন বিষয়টি বিবেচনা করবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপিসহ তিন রাজনৈতিক দল যেসব প্রতীক পাচ্ছে
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পাচ্ছে তিনটি নতুন রাজনৈতিক দল। দলগুলো হলো-জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি, আমজনগণ পার্টি এবং বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)। ইতিমধ্যে দলগুলোকে প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যয় জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) ‘শাপলা কলি’, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলকে (মার্ক্সবাদী) ‘কাঁচি’ ও আমজনগণ পার্টিকে ‘হ্যান্ডশেক’ প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। এরপর দাবি-আপত্তি এলে তা নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত নিবন্ধন দেওয়া হবে।’
আরো পড়ুন:
বিএনপির প্রার্থীকে অভিনন্দন জানালেন জামায়াতের প্রার্থী
টাঙ্গাইলে বিএনপির আনন্দ মিছিলে আ.লীগ নেতার স্লোগান
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়ে কারো কোনো আপত্তি থাকলে প্রয়োজনীয় দলিলসহ এর কারণ উল্লেখপূর্বক ১২ নভেম্বরের মধ্যে সচিবের নিকট লিখিতভাবে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।
ইসির নিবন্ধন পেতে ১৪৩টি দল আবেদন করে। প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ২২ দলের মাঠ পর্যায়ে তদন্ত পাঠায় নির্বাচন কমিশন। এরপর মাঠ পর্যায়ের তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
তবে এনসিপি প্রতীক জটিলতা ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগের কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে জাতীয় লীগসহ ১০ দলের অধিকতর যাচাইয়ের জন্য আবার তদন্ত করে সংস্থাটি। এরপর অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই শেষে কয়েক দফা বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।
পুনরায় মাঠ পর্যায়ের তদন্তে যে ১০টি দলকে পাঠানো হবে সেগুলো হল-আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতা পার্টি বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ