করোনারি ধমনি দিয়ে হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ হয়। এই ধমনিগুলো বিভিন্ন কারণে সরু হয়ে যেতে পারে। একেই বলা হয় করোনারি হার্ট ডিজিজ। এতে হৃৎপিণ্ডে রক্ত সঞ্চালন কমে যায় এবং হৃৎপিণ্ডে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়।

করোনারি এনজিওগ্রাম করোনারি হার্ট ডিজিজ নির্ণয়ের সফল একটি প্রক্রিয়া। এ পদ্ধতিতে ঊরু বা হাতের বাহুতে ছোট ছিদ্র করে একটি সরু টিউব বা ক্যাথেটার রক্তনালিতে প্রবেশ করানো হয়। এই ক্যাথেটারের মাধ্যমে ডাই বা রং ইনজেক্ট করা হয়। এরপর এক্স-রে মনিটরে ধমনির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এনজিওগ্রামে ব্লক শনাক্ত হলে সরু হয়ে যাওয়া ধমনি খুলে দেওয়া হয় যে পদ্ধতিতে, তাকেই বলা হয় করোনারি এনজিওপ্লাস্টি।

এনজিওপ্লাস্টি কেন করা হয়

প্রধানত দুটি কারণে এনজিওপ্লাস্টি করা হয়। প্রথমত, বুকে ব্যথা। করোনারি আর্টারিতে চর্বি জমে সরু অথবা বন্ধ হয়ে গেলে বুকে ব্যথা হয়। এ অবস্থায় এনজিওপ্লাস্টি করে ব্লক খুলে দিলে আবার রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস পায়। দ্বিতীয়ত, হার্ট অ্যাটাক হলে, হার্ট অ্যাটাকের সময় ও হার্ট অ্যাটাকের পর হৃৎপিণ্ডের পেশির ক্ষয়ক্ষতি কমানো এবং পুনরায় হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের জন্য এনজিওপ্লাস্টি করা হয়।

এনজিওগ্রাম ও এনজিওপ্লাস্টির ঝুঁকি

এ পদ্ধতি খুবই নিরাপদ। ঝুঁকি প্রায় নেই বললেই চলে। এরপরও কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। যেমন পায়ের কুঁচকিতে রক্তপাত অথবা পায়ের উপরিভাগে হালকা লাল হতে পারে। তীব্র লাল হওয়ার ঘটনা বিরল। এ জন্য ছোটখাটো অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। কারও এলার্জি–জাতীয় সমস্যা হতে পারে। খুবই কম ক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ডের শিরার ক্ষতি হওয়া থেকে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। এটাও বিরল।

আবার কি ব্লক হতে পারে

কিছু কিছু ক্ষেত্রে এনজিওপ্লাস্টির পর করোনারি ধমনি পুনরায় সরু হয়ে যেতে পারে। সাধারণত প্রথম তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে এ সমস্যা হতে পারে। এখন উন্নত মানের স্টেন্ট (রিং নামে পরিচিত) ব্যবহারের ফলে এ সমস্যা অনেক কম এবং ‘মেডিকেটেড স্টেন্ট’ ব্যবহার করা হলে এটা হয় না বললেই চলে। যাঁদের এই সমস্যা হয়, তাঁদের আবার ‘বেলুনিং’ অথবা ‘বেলুনিং ও স্টেন্ট’-এর মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেতে পারে।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন

ক্ষতস্থানের চারপাশে ত্বকের নিচে রক্তের চাকা জমাট বাঁধা। তবে এই জমাট যদি খুব ছোট মটরশুঁটির মতো হয়, তাহলে চিন্তা নেই। ব্যথা বেড়ে যাওয়া, ফুলে যাওয়া, লাল হওয়া বা ক্ষতস্থান থেকে কিছু নিঃসৃত হওয়া, উচ্চ তাপমাত্রা বা জ্বর। যদি কুঁচকি থেকে রক্তপাত শুরু হয়, তাহলে শুয়ে পড়ুন এবং পা যথাসম্ভব সোজা রেখে রক্তপাতের স্থানে বেশ জোরে চাপ দিন। ১০ মিনিটের মধ্যে রক্তপাত বন্ধ না হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

ডা.

এম শরীফুল আলম: কনসালট্যান্ট, ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ন র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইটি অনুষদের ডিনস অ্যাওয়ার্ড, পেলেন ৪৪ শিক্ষার্থী ও ৩০ শিক্ষক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (আইটি) অনুষদের শিক্ষার্থীদের তিন বছরের (২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সাল) এবং শিক্ষকদের পাঁচ বছরের (২০২১, ২০২২, ২০২৩, ২০২৪ ও ২০২৫ সাল) ডিনস অ্যাওয়ার্ড ৬ নভেম্বর প্রদান করা হয়েছে। অনুষদের পাঁচটি বিভাগের মোট ৪৪ জন শিক্ষার্থী ডিনস অ্যাওয়ার্ড পান। এ ছাড়া দেশে বা বিদেশে প্রকাশিত গবেষণা গ্রন্থ এবং স্বীকৃত জার্নালে প্রকাশিত মৌলিক প্রবন্ধের জন্য ৩০ জন শিক্ষককে ডিনস অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।

ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক উপমা কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সোনালি ব্যাগের উদ্ভাবক ও বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের সাবেক বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা বিজ্ঞানী মোবারক আহমেদ খান ডিনস অ্যাওয়ার্ডে স্পিকার হিসেবে বক্তব্য দেন। বিভাগীয় চেয়ারম্যানরা ডিনস অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। ডিনস অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নাম ঘোষণা করেন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক উপমা কবির।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে কোথায় পড়বেন: সিদ্ধান্ত নিতে মনে রাখুন ‘থ্রি–সি’৫ ঘণ্টা আগেডিনস অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত ৪৪ জন শিক্ষার্থী হলেন-

জগন্নাথ বিশ্বাস, মো. নিজাম উদ্দিন তানিম, শ্রাবণী সরকার, নাজমুল হাসান নাঈম, আফসানা আনজুম আঁখি, নুসাইবা এহসান, আসমা ইয়াসমিন খান রিমু, মেহরিন ফাত্তাহা, কায়সারী ফেরদৌস, মোহাম্মদ আজমাঈন ফাতিন (ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং), নিশাত তামান্না আদিবা, এহসানুল হক, মো. শাহিদুল ইসলাম, মো. আহসানুল হক মামুন, মো. আবদুল হাসনাত, সাহাল জুবায়ের, তাইমিমা মাহবুব, ফাইরুজ তাহিয়া, ফাতেমা-তুজ-জহুরা (ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল), মো. আমিনুল কাদের বুলবুল, শাবাব মুর্শেদ, রাহিব হাসান, জহির সাদিক মনন, তাহমিদ মোসাদ্দেক, মহিদুল হক মৃদুল, আবদুল্লাহ ইবনে হানিফ আরিয়ান, মাবসুর ফাতিন বিন হোসাইন, ইত্তেহাদ সালেহ চৌধুরী, সৌমিক শাফকাত অভ্র (কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল), এইচ রাইনাদ খান রোহান, কে এম সৌরভ, মো. নবীর হোসেন, মো. ফাহিম ফরায়েজি, তাসফিয়া রহমান রিভা, মাহমুদুল হাসান তামিম, জেরিন তাহসিন আনজুম, তাসনুভা তামিসা অর্পি, ফারহান লাবিব অর্ণব (নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং), মিকদাম-আল-মাদ রৌন, আবদুল মোনাফ চৌধুরী, হুমায়রা রশিদ, সানিয়া কায়েনাত চৌধুরী, মো. এহতেশামুল হক, আতিক তাজওয়ার (রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং)।

আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষকদের তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু৩ ঘণ্টা আগেডিনস অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত ৩০ জন শিক্ষক হলেন

অধ্যাপক মো. আবদুর রাজ্জাক (২০২১, ২০২৩, ২০২৫), মো. তানভীর আলম (২০২৪) (কম্পিউটার বিজ্ঞান অ্যান্ড প্রকৌশল), আবুল খায়ের মল্লিক (২০২১, ২০২৩), অধ্যাপক মো. নুরনবী (২০২৪), তাসলিম উর রশিদ (২০২২, ২০২৩), অধ্যাপক মো. আশরাফুল ইসলাম মোল্লা (২০২৪), সাদিত বিহঙ্গ মালিথা (২০২১) (ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল), সেঁজুতি রহমান (২০২১, ২০২৩, ২০২৪) (রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং), মো. আরিফুল ইসলাম (২০২৩), মো. সিফাত-ই- আরমান ভূঁইয়া (২০২৩, ২০২৫), মো. মেহেদী হাসান (২০২৪), মো. হোসাইন শাহাদাত (২০২১), অনিমেষ পাল (২০২১, ২০২৫), অধ্যাপক আফরোজা শেলি (২০২২, ২০২৫) (নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং), মাইনুল হোসেন (২০২২, ২০২৪, ২০২৫), শেখ মো. মাহমুদুল ইসলাম (২০২২, ২০২৩), মো. আহসান হাবীব (২০২৫), ইমতিয়াজ আহমেদ (২০২৪) (ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং)।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘মেধাকে মূল্যায়ন করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। মেধার অন্যতম ভিত্তি হলো পরিশ্রম। মনে রাখতে হবে, সাফল্যের পেছনে অনেকের অবদান থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের যে পরম্পরা, তা তোমরা ধরে রেখেছো। এটাই আমাদের গর্ব।’

আরও পড়ুনপ্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা-গণিত: প্রশ্ন নম্বর-৩০৮ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ