খাগড়াছড়িতে এক পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণে অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ হয়েছে। আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে জেলার কুমার সুমিত রায় জিমনেসিয়াম এলাকায় এই বিক্ষোভ শুরু হয়। জেলা শাখা জনসংহতি সমিতির সহযোগী সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

বিক্ষোভটি রাঙামাটি শহরের কে কে রায় সড়ক হয়ে রাজবাড়ি, শিল্পকলা একাডেমি, কালিন্দীপুর, বিজন সরণি ও নিউমার্কেট এলাকা ঘুরে আবার শিল্পকলা এলাকায় এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান। বক্তারা বলেন, ‘পাহাড়ের নারীদের সুন্দর জীবন ও আত্মপরিচয় ধ্বংস করার পাঁয়তারা চলছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সকল শ্রেণির মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। এ ছাড়া অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে।’

জেলা শাখা পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক সুনীতি বিকাশ চাকমা এ সমাবেশের সঞ্চালনা করেন। এতে আরও বক্তব্য দেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রুমেন চাকমা, জেলা শাখা হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এনি চাকমা, কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক চন্দ্রিকা চাকমা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল রাঙামাটি জেলা শাখার প্রুহ্লাঅং মারমা প্রমুখ।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে ওই কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। গতকাল রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন তার স্বজনেরা।

ওই কিশোরীর বাবা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মেয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়তে যেত আর রাত ৯টায় বাসায় ফিরত। এটাই ছিল নিয়মিত রুটিন। তবে গতকাল ৯টার দিকে না ফেরায় তাঁরা ওই শিক্ষকের বাসায় যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন অন্য দিনের সময়সূচি অনুযায়ী প্রাইভেট ছুটি হয়েছে। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে আশপাশের এলাকায় খুঁজতে থাকেন তাঁরা। একপর্যায়ের রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে একটি ফসলের খেতে পাওয়া যায়। পরে তাঁর মেয়েকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

খাগড়াছড়িতে কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, প্রতিবাদে কাল অবরোধের ডাক

খাগড়াছড়িতে এক পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয় বলে তার স্বজনেরা জানিয়েছেন। গতকাল রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আজ বুধবার সকালে জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ‘জুম্ম ছাত্র–জনতা’।

আজ সকাল ১০টায় শহরের শাপলা চত্বরে জুম্ম ছাত্র–জনতার ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভে দোষী ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। আসামিরা গ্রেপ্তার না হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার জেলায় আধা বেলা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন তাঁরা।

পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে তার বাবা আজ ভোরে জেলার সদর থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গতকাল রাত ৯টার দিকে প্রাইভেট থেকে ফেরার পথে ওই কিশোরী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়।

ওই কিশোরীর বাবা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মেয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়তে যেত আর রাত ৯টায় বাসায় ফিরত। এটাই ছিল নিয়মিত রুটিন। তবে গতকাল ৯টার দিকে না ফেরায় তাঁরা ওই শিক্ষকের বাসায় যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন অন্যদিনের সময়সূচি অনুযায়ী প্রাইভেট ছুটি হয়েছে। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে আশপাশের এলাকায় খুঁজতে থাকেন তাঁরা। একপর্যায়ের রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে একটি ফসলের খেতে পাওয়া যায়।

পাহাড়ি ওই কিশোরীর বাবা আরও বলেন, অচেতন অবস্থায় পাওয়ার পর তাঁর মেয়েকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে এখনো ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।

পরে খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল বাতেন প্রথম আলোকে বলেন, কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে।

আধা বেলা অবরোধের ডাক

এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর আজ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন জেলার বাসিন্দারা। আজ সকাল ১০টার দিকে ‘জুম্ম ছাত্র–জনতা’ ব্যানারে এ কর্মসূচি নেওয়া হয়। মিছিলটি খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ মাঠ থেকে শুরু হয়ে জেলার চেঙ্গী স্কয়ার, মহাজনপাড়া, আদালত সড়ক, নারকেল বাগান ঘুরে শাপলা চত্বর এলাকায় এসে শেষ হয়। পরে সেখানে বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ হয়। সমাবেশে আজকের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার না করা হলে আগামীকাল আধা বেলা অবরোধের ডাক দেওয়া হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা উক্যেনু মারমা সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। নেপোলিয়ন চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সুমন চাকমা, বাগীশ চাকমা, কৃপায়ন ত্রিপুরা, ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের প্রতিনিধি আকাশ ত্রিপুরা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলের প্রতিনিধি ওয়াপাই মারমা, সাধারণ শিক্ষার্থী অংক্যমং মারমা প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পাহাড়ে কোনো নারী নিরাপদ নন। বিচার না হওয়ায় ধর্ষণের মতো অপরাধ বেড়েই চলেছে। চলতি বছরের ২৭ জুন ও গত সপ্তাহেও দুই শিক্ষার্থী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। বক্তারা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। সভাপতি উক্যেনু মারমা বলেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার না হলে আগামীকাল আধা বেলা সড়ক অবরোধ করা হবে। জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জন করা হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাগড়াছড়িতে কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, প্রতিবাদে কাল অবরোধের ডাক