পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে আবার কেন বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ল
Published: 3rd, October 2025 GMT
পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে থমথমে পরিস্থিতি। গতকাল বৃহস্পতিবার ওই অঞ্চল টানা চতুর্থ দিনের মতো অচল ছিল। গত কয়েক দিনে সেখানে বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন পুলিশ কর্মকর্তাও আছেন।
কেন্দ্রীয় সরকার একটি আলোচক কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটির সদস্যরা গতকাল পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদ পৌঁছেছেন। কমিটি আলোচনার মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটির (জেএএসি) সঙ্গে বৈঠক করবে। জেএসিসি হলো এমন একটি সংস্থা, যা ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজভিত্তিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিত্ব করছে। এটি পুরো অঞ্চলে সাধারণ মানুষের অসন্তোষের কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত।
অধিকারকর্মী শওকত নওয়াজ মীরের নেতৃত্বে জেএএসি গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে এমন অচলাবস্থা শুরু করেছে। এতে পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের (আজাদ কাশ্মীর) অনেক জায়গা পুরোপুরি থমকে গেছে। কাশ্মীর সরকার ইতিমধ্যে পুরো যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা মুঠোফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন না।
মুজাফফরাবাদে যেসব বাজার জমজমাট থাকে, সেগুলো এখন সম্পূর্ণ বন্ধ। রাস্তার পাশে যাঁরা পণ্য বিক্রি করেন, তাঁদেরও উপস্থিতি নেই। এমনকি রাস্তায় গণপরিবহনও চলছে না। এই স্থবিরতার কারণে সেখানকার প্রায় ৪০ লাখ মানুষ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
অধিকারকর্মী শওকত নওয়াজ মীরের নেতৃত্বে জেএএসির ডাকে গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে এমন অচলাবস্থা শুরু হয়েছে। এতে পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের (আজাদ কাশ্মীর) অনেক জায়গা পুরোপুরি থমকে গেছে। কাশ্মীর সরকার ইতিমধ্যে পুরো যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা মুঠোফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন না।আজাদ কাশ্মীর সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, কর্তৃপক্ষ শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে থাকা ‘প্রচার’ ও ‘ভুয়া খবর’-এর প্রভাবে বিভ্রান্ত না হতে জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে তারা। তাদের দাবি, নির্দিষ্ট কোনো অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এমনটা করা হচ্ছে।
গত দুই বছরে এ নিয়ে তৃতীয় দফা বড় বিক্ষোভে নেমেছে জেএএসি। সংগঠনের নেতাদের অভিযোগ, সরকারের সঙ্গে আলোচনায় তাদের ৩৮ দফা দাবির ব্যাপারে কোনো সমঝোতা হয়নি। সে কারণেই নতুন করে এই আন্দোলন শুরু হয়েছে।
পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের স্থানীয় সরকার ও তৃণমূলভিত্তিক আন্দোলনের দীর্ঘ দুই বছরের দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে বর্তমান এ সংকট তৈরি হয়েছে। এ সময়ে আন্দোলনকারীরা একাধিকবার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে।
কীভাবে বিক্ষোভ ছড়াল২০১৭ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে জনসংখ্যা ৪০ লাখের বেশি। এখানকার প্রশাসন আংশিক স্বায়ত্তশাসিত, যার নিজস্ব প্রধানমন্ত্রী ও আইনসভা রয়েছে।
বর্তমান অস্থিরতার মূল শিকড় ২০২৩ সালের মে মাসে। তখন প্রথমবারের মতো বিদ্যুতের বিল বৃদ্ধির বিরুদ্ধে মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। একই সঙ্গে ভর্তুকিপ্রাপ্ত গমের তীব্র ঘাটতি এবং ব্যাপক হারে আটা পাচারের অভিযোগও সামনে আসে।
২০২৩ সালের আগস্ট নাগাদ এসব বিচ্ছিন্ন অভিযোগ একত্র হয়ে সংগঠিত প্রতিরোধে রূপ নেয়। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে কয়েক শ কর্মী মুজাফফরাবাদে জড়ো হয়ে জেএএসি গঠন করেন। সেখানে অঞ্চলটির সব এলাকার প্রতিনিধিরা জড়ো হন।
এ আন্দোলন বড় আকার ধারণ করে ২০২৪ সালের মে মাসে। বিক্ষোভকারীরা মুজাফফরাবাদের দিকে দীর্ঘ মিছিল শুরু করলে সহিংস সংঘর্ষ হয়। এতে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হন। এর মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তাও ছিলেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলো মেনে নেওয়ার পরই শুধু সহিংস বিক্ষোভ শেষ হয়। সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে খাবার ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে কোটি কোটি রুপি ভর্তুকি দেওয়া হয়।
তবে শান্তি বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। চলতি বছরের আগস্টে জেএএসি ঘোষণা করেছে, তারা নতুন করে আন্দোলন শুরু করবে। এবার তাদের প্রতিবাদ শুধু অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, তা আরও বিস্তৃত হয়েছে।
মুজাফফরাবাদে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় কাঠ পুড়িয়ে বিক্ষোভ করছেন। সেখান দিয়েই চলাচল করছেন সাধারণ মানুষ। ১ অক্টোবর, ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স প ট ম বর থ ক ম জ ফফর ব দ সরক র জ এএস
এছাড়াও পড়ুন:
মিরপুরে পুলিশের পিওএমে হাসপাতালের বহির্বিভাগ সেবা চালু
মিরপুরে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টের (পিওএম) একটি ভবনে পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের বহির্বিভাগ সেবা চালু করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের (সিপিএইচ) পরিচালকের নিয়ন্ত্রণে থাকবে এই বহির্বিভাগ। এখন থেকে পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা এখানে চিকিৎসা পাবেন। আজ শুক্রবার ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী পিওএমের একটি ভবনে হাসপাতালের এই বহির্বিভাগ উদ্বোধন করেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ডিএমপি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, পুলিশ সদস্যদের সার্বিক কল্যাণে এটি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। এর ফলে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে রোগীর চাপ কমবে। পুলিশ সদস্যরা এখন থেকে মিরপুরে পিওএমে চালু হওয়া বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে পারবেন। এখানে রোগনির্ণয়ে প্রয়োজনীয় নমুনাও সংগ্রহ করা হবে। এ ছাড়া অন্যান্য সেবার মধ্যে সরকারি বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ, ফিজিওথেরাপি এবং অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) সুবিধা থাকবে এই বহির্বিভাগে।
মিরপুরে পিওএমের ভবনে হাসপাতালের বহির্বিভাগ সেবা উদ্বোধনের পর সেখানে চিকিৎসার বন্দোবস্ত ঘুরে দেখেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ৩ অক্টোবর, ২০২৫