সৌদি-বাংলাদেশ চেম্বারের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু মঙ্গলবার, হবে ব্যবসা সম্মেলন
Published: 5th, October 2025 GMT
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে যাত্রা শুরু করছে সৌদি-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এসএবিসিসিআই)। আগামী মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে এ চেম্বারের যাত্রা শুরু হবে।
এ উপলক্ষে ৬ থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকায় তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান ও ব্যবসা সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
আজ রোববার রাজধানীর গুলশানে সিটি ব্যাংক সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নবগঠিত এসএবিসিসিআই সভাপতি আশরাফুল হক চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সৌদি-বাংলাদেশ চেম্বারের সহসভাপতি আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ, পরিচালক উজমা চৌধুরী ও মেসবাউল আসিফ সিদ্দিকী।
লিখিত বক্তব্যে আশরাফুল হক বলেন, ‘দেশের ব্যবসায়ী মহল দীর্ঘদিন ধরেই সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে কার্যকর প্ল্যাটফর্ম গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছিলেন। এবার আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে।’
আশরাফুল হক আরও বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে শক্তিশালী বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ সম্পর্ক গড়ে তোলা সময়ের দাবি। বর্তমান ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে সৌদি আরব বাংলাদেশের জন্য বিকল্প সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে দেখা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ বেশ কিছু খাতে সৌদি আরবে ব্যবসা বাড়াতে পারে বলে মন্তব্য করেন এসএবিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, বর্তমানে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি ডলার। সৌদি আরবে টেক্সটাইল, তৈরি পোশাক, তথ্যপ্রযুক্তি, ডিজিটাল ফাইন্যান্স, কৃষিপণ্য, পাটজাত পরিবেশবান্ধব পণ্য ও দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশাল সম্ভাবনা আছে। বর্তমানে সৌদি আরবে ৩০ লাখের বেশি বাংলাদেশি কর্মরত আছেন। স্বাস্থ্যসেবা, প্রকৌশল, তথ্যপ্রযুক্তি, নির্মাণ, ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন খাতে আরও দক্ষ জনশক্তি সরবরাহের সুযোগ আছে।
আশরাফুল হক আরও বলেন, পেট্রোকেমিক্যাল, ক্রুড অয়েল রিফাইনারি, ইস্পাত, খাদ্যশিল্প, কৃষি রাসায়নিক, সার, টেক্সটাইল, বন্দর ব্যবস্থাপনা, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও সাইবার সিকিউরিটিসহ নানা খাতে যৌথ বিনিয়োগের সুযোগ আছে। চট্টগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে সৌদি বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ করা শিল্পভূমি বড় সম্ভাবনা তৈরি করবে।
তিন দিনের অনুষ্ঠানে যা হবে
সংবাদ সম্মেলনে এসএবিসিসিআই সভাপতি আশরাফুল হক বলেন, অনুষ্ঠান উপলক্ষে আগামীকাল সোমবার সৌদি আরবের ব্যবসায়ী ও নীতিনির্ধারকদের ২০ সদস্যের প্রতিনিধিদল ঢাকায় পৌঁছাবে। দলের নেতৃত্ব দেবেন সৌদি আরবের মাজদ আল উমরান গ্রুপের মালিক শেখ ওমর আবদুল হাফিজ আমির বকশ। প্রতিনিধিদলে থাকবেন আল ইসায়ি গ্রুপের পরিচালক নাজি আবদুল্লাহ, বাদশাহ আবদুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও আইটি উদ্যোক্তা মোহাম্মদ আসিফ সালাম, আল তৈয়বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও স্বাস্থ্য খাত বিশেষজ্ঞ খালিদ আল হারবি।
প্রথম দিন সন্ধ্যায় এসএবিসিসিআই সৌদি প্রতিনিধিদলের সম্মানে এক অভ্যর্থনামূলক নৈশভোজের আয়োজন করবে।
সম্মেলনের মূল অনুষ্ঠান হবে ৭ অক্টোবর। সেদিন সকাল ১০টায় ঢাকার বনানীর হোটেল শেরাটনে শুরু হবে ‘সৌদি-বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের উপস্থিত থাকার কথা। সভায় সভাপতিত্ব করার কথা সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর।
দিনব্যাপী আয়োজনে বিভিন্ন অধিবেশন, প্রবন্ধ উপস্থাপন, বাংলাদেশি পণ্য প্রদর্শন ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে সৌদি-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন ও বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিত থাকার কথা।
বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সৌদি প্রতিনিধিদলের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন পররাষ্ট্রসচিব। বিকেলে সোনারগাঁও হোটেলে তিন দিনের সম্মেলনের সমাপনী সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন আরব র উপস থ ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ-সৌদি বিজনেস সামিট শুরু সোমবার
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো যৌথভাবে গঠিত হচ্ছে সৌদি আরব–বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এসএবিসিসিআই)। এর গ্র্যান্ড লঞ্চিং উপলক্ষে ঢাকায় আগামীকাল সোমবার (৬ অক্টোবর) সৌদি আরব- বাংলাদেশ বিজনেস সামিট শুরু হবে। চলবে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত।
রাজধানীর হোটেল শেরাটনে এ সামিট হবে। এতে অংশ নেবেন দুই দেশের ব্যবসায়ী, ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতা, নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞরা।
রবিবার (৫ অক্টোবর) ঢাকায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন এসএবিসিসিআইর সভাপতি আশরাফুল হক চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চেম্বারের সহ-সভাপতি ও গ্যালাক্সি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক উজমা চৌধুরী এবং সিটি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজবাউল আসিফ সিদ্দিকী।
আশরাফুল হক চৌধুরী বলেছেন,“সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ সম্পর্ক নির্মাণে এ যৌথ উদ্যোগ সময়ের দাবি। বাংলাদেশের তৈরী পোশাক, কৃষিজাত ও আইটি পণ্য, ডিজিটাল ফাইন্যান্স ও পাটজাত পণ্য সৌদি বাজারে বিশাল সম্ভাবনা তৈরি করছে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এখন সৌদি আরবে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর পাশাপাশি বিভিন্ন সেক্টরে যৌথ বিনিয়োগে আগ্রহী। বিশেষ করে, পেট্রোকেমিক্যাল, ইস্পাত, কৃষিশিল্প, গ্রিন টেকনোলজি, সাইবার সিকিউরিটি এবং সেমিকন্ডাক্টর খাতে উভয় দেশের সহযোগিতার সম্ভাবনা বিশাল।”
আশরাফুল হক চৌধুরী আরো বলেন, “দেশের কল্যাণে আমরা এক বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু করেছি। সাংবাদিক বন্ধুরা এ যাত্রায় আমাদের সহযোগী। আপনাদের সহযোগিতা ও সহানুভূতি কামনা করছি।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের বিজনেস সামিটে সৌদি আরবের ব্যবসায়ী ও নীতিনির্ধারকদের ২০ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেবে, যার নেতৃত্বে থাকবেন মাজদ আল উমরান গ্রুপের মালিক শেখ ওমর আব্দুলহাফিজ আমির বকশ।
এসএবিসিসিআইর সহ-সভাপতি আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে কাজ করবে এসএবিসিসিআই। এর পাশাপাশি, সৌদি আরবে থাকা বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বিকাশেও কাজ করতে চাই আমরা।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক উজমা চৌধুরী বলেন, জনশক্তিকে একটু দক্ষ ও শিক্ষিত করে পাঠাতে পারলে রপ্তানি আরো বাড়বে। পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তি প্রেরণের মাধ্যমে সৌদি আরবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে।
সিটি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজবাউল আসিফ সিদ্দিকী বলেন, আমাদের দেশের ব্যাংকগুলো আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক লেনদেনে যুক্ত। তবে, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশের ব্যাংকগুলো বিভিন্ন দেশে শাখা খুলে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছে। আমরাও সে পর্যায়ে যেতে চাই। এজন্য আমাদের দরকার বিদেশি বিনিয়োগ।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক