বগুড়ায় ‘করতোয়া গেটলক’ পরিবহনের কর্মবিরতি, যাত্রীদের দুর্ভোগ
Published: 6th, October 2025 GMT
বগুড়া ও জেলার শেরপুরের মোটরশ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে আজ সোমবার সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছেন ‘করতোয়া গেটলক’ পরিবহনের শ্রমিকেরা। ফলে মহাসড়কে নামেনি এই পরিবহনের কোনো বাস। ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো যাত্রী।
শেরপুর করতোয়া বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন ‘করতোয়া গেটলক’ নামে বগুড়া শহরে যাতায়াত করে প্রায় ৪৫টি বাস। এসব বাসে প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী শেরপুর থেকে বগুড়া শহরে আসা-যাওয়া করেন।
জানা যায়, গত শুক্রবার সকালে বগুড়ার চারমাথা থেকে ছেড়ে আসা একটি বাস শেরপুরের কোচ টার্মিনালে পৌঁছে ঢাকাগামী যাত্রী তোলা নিয়ে স্থানীয় শ্রমিকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও ওই দিনই সন্ধ্যায় বগুড়া শহরের শ্রমিকেরা শেরপুরের করতোয়া গেটলক পরিবহনের তিন শ্রমিককে মারধর করেন। পরের দিন শনিবার বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কয়েকজন সদস্য শহরের ট্রেনস্টেশন রোড থেকে করতোয়া গেটলকের ১৫টি বাস বের করে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শেরপুরের শ্রমিকেরা।
জেলার ধুনট উপজেলার যুগিগাতী গ্রামের মেহেদী হাসান হৃদ্রোগে ভুগছেন। তিনি চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহরে যাওয়ার জন্য সকাল থেকে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু গেটলক পরিবহনের বাস বন্ধ থাকায় তিনি যেতে পারছেন না। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
করতোয়া বাসস্ট্যান্ডের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তিন নারী বলেন, আত্মীয়র বাড়িতে যাওয়ার জন্য তাঁরা সকালে বের হয়েছিলেন। কিন্তু গেটলক বাস বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে তাঁরা তিন চাকার গাড়িতে উঠেছেন।
বগুড়াগামী যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, গেটলক বাসে ভাড়া প্রতিজন ৩০ টাকা। এখন সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠতে হচ্ছে। সেখানে বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে; তবু পাওয়া যাচ্ছে না।
বগুড়া জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ ও মাইক্রোবাস পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের শেরপুর কার্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার মীমাংসা না করায় শেরপুরের করতোয়া গেটলক পরিবহনের শ্রমিকেরা আজ থেকে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। বাসগুলোয় সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। জেলার শেরপুর ও ধুনট উপজেলা, পাশের সিরাজগঞ্জের কাজীপুর ও তাড়াশ এলাকার মানুষ বগুড়ায় যাওয়ার জন্য এই বাস ব্যবহার করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর বহন র র জন য করত য়
এছাড়াও পড়ুন:
কোনো সরকার শিক্ষা নিয়ে তেমন কিছু করেনি, বর্তমান সরকারও না
বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ভালোভাবে হয় না। সমস্যাটি নতুন নয়, অনেক আগে থেকেই এমন হয়ে আসছে। এটা কাঠামোগত সমস্যা। খণ্ডিতভাবে দেখে, খণ্ডিত উদ্যোগ নিয়ে সমস্যাটির সমাধান হবে না। শিক্ষার মানোন্নয়ন ও বৈষম্য কমানো দরকার।
ধনী ও সচ্ছল পরিবারের সন্তানেরা ভালো শিক্ষা পাবে, নিম্নবিত্তের সন্তানেরা পাবে না, সেটা হতে পারে না। শিক্ষার জন্য সম্পদের সংস্থান কোথা থেকে হবে, সেটার পথ খোঁজা দরকার। সব মিলিয়ে খাত ধরে একটি বড় ধরনের পর্যালোচনা হতে হবে। সেটা কয়েক দিন বা মাসের বিষয় নয়। পর্যালোচনাটি দরকার গভীর ও বিস্তৃত।
আরও পড়ুনবিদ্যালয়ে যেনতেন পড়াশোনা, ভরসা কোচিং ও গৃহশিক্ষক২ ঘণ্টা আগেবর্তমান সরকার ১১টি বিষয়ে সংস্কার কমিশন করেছে। শিক্ষা খাত নিয়ে কোনো সংস্কার কমিশন করা হয়নি। প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি কমিটি করেছিল। সেই কমিটির প্রধান ছিলাম আমি। আমরা প্রতিবেদন সরকারের কাছে দিয়েছি। সেখানে বিভিন্ন সুপারিশ রয়েছে। কিন্তু সেটা নিয়ে তেমন কোনো কাজ হয়নি। খণ্ডিতভাবে দু-একটি সুপারিশ হয়তো বাস্তবায়ন হয়ে থাকতে পারে।
২০১০ সালে শিক্ষানীতি হয়েছে। তবে তা অনেকাংশে বাস্তবায়ন হয়নি। কারণ, সরকারগুলো কর্তৃত্ব ধরে রাখতে চায়। বিগত ৫৪ বছরে কোনো সরকারই শিক্ষা নিয়ে তেমন কিছু করেনি। বর্তমান সরকার অন্তত একটা সূচনা করতে পারত। সেটাও করেনি।
শিক্ষা খাত আমাদের রাজনৈতিক ব্যর্থতার একটি উদাহরণ। এ খাতের বড় ধরনের সংস্কার দরকার। অতীতের সরকারগুলো যেমন এ খাত নিয়ে কাজ করেনি, তেমনি ভবিষ্যতের সরকার সংস্কার করবে, সে আশাও করতে পারছি না। তবু আশা নিয়ে থাকতে হবে।
মনজুর আহমদ: শিক্ষাবিদ ও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক।
[মতামত লেখকের নিজস্ব]