ট্রাম্পের ভিসা নীতিতে যুক্তরাষ্ট্রে অনিশ্চয়তা, বিকল্প হয়ে উঠছে কাতার
Published: 7th, October 2025 GMT
ভিসা ও নিয়মের কঠোরতা বাড়ানোর মার্কিন প্রশাসনের সিদ্ধান্তের কারণে বিকল্প ভাবতে হচ্ছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের। আংশিকভাবে হলেও এই বিকল্প হয়ে উঠছে কাতার। দোহা শহরের উপকণ্ঠে গড়ে ওঠা ‘এডুকেশন সিটি’ ঘিরে আগ্রহ বাড়ছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের। নামকরা মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শাখা ক্যাম্পাস রয়েছে এখানে। সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।
সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজারো শিক্ষার্থী দোহায় এসে ভর্তি হয়েছেন নর্থওয়েস্টার্ন, কার্নেগি মেলন, জর্জটাউন, টেক্সাস এঅ্যান্ডএম ও ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটির শাখা ক্যাম্পাসে। এ ছাড়া এখানে রয়েছে ফরাসি বিজনেস স্কুল এইচইসি প্যারিস ও হামাদ বিন খলিফা ইউনিভার্সিটি।
ভর্তি বেড়েছে ১২%কাতার ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পরিচালিত এ শিক্ষাকেন্দ্রে এ বছর শিক্ষার্থী ভর্তি বেড়েছে ১২ শতাংশ, মোট শিক্ষার্থী এখন ৪ হাজার ৪৬৩ জন। যদিও এটি যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর আসা প্রায় এক মিলিয়ন বিদেশি শিক্ষার্থীর তুলনায় খুবই ছোট সংখ্যা। তবু শিক্ষার্থী বাড়ার কারণে দোহাকে বৈশ্বিক শিক্ষার নতুন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে।
টানাপোড়েনে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়, সুবিধা নিচ্ছে দোহা
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য কাতারে শাখা খোলা এখন বড় অর্থনৈতিক সহায়তা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কর্নেল ইউনিভার্সিটি প্রতিবছর তাদের দোহা মেডিকেল স্কুল পরিচালনার জন্য প্রায় ১৩০ মিলিয়ন ডলার পায়। ২০১২ সাল থেকে মোট অর্থায়ন হয়েছে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে জর্জটাউন ও কার্নেগি মেলন তাদের চুক্তি আরও ১০ বছর বাড়িয়েছে।
তবে এই অংশীদারত্ব নিয়ে ওয়াশিংটনে সমালোচনাও রয়েছে। অনেকে অভিযোগ করেন, হামাসের অফিস থাকা কাতার মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। এ বিতর্কের মধ্যেই ২০২৪ সালে টেক্সাস এঅ্যান্ডএম তাদের কাতার চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেয়।
তবু কাতারের পরিকল্পনা থেমে নেই। ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট মারমোলেখো জানিয়েছেন, টেক্সাস এঅ্যান্ডএমের ফাঁকা জায়গায় নতুন এক ‘মাল্টি–ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস’ তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে কাজ করবে।
আরও পড়ুনগোল্ডম্যান স্যাকসে ইন্টার্নশিপ, সিউল–সাংহাই–হংকং–টোকিওতে কাজ৪ ঘণ্টা আগেকাতারের কৌশলপ্রাকৃতিক গ্যাস বিক্রি করে গড়ে ওঠা ৫০০ বিলিয়ন ডলারের সার্বভৌম তহবিল কাতারকে বিশ্বের ধনীতম দেশের কাতারে তুলেছে। এখন সেই অর্থ দিয়ে তারা অর্থনীতি বৈচিত্র্যময় করছে, জনগণকে প্রশিক্ষিত করছে এবং বৈশ্বিক প্রভাব বাড়াচ্ছে। ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন ও মধ্যপ্রাচ্যের সংকটে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন—সবকিছু মিলিয়ে শিক্ষা–কূটনীতিই এখন দোহার শক্তির মূল হাতিয়ার।
যদিও ইরান–ইসরায়েল সংঘাত ও আঞ্চলিক অস্থিরতা মাঝেমধ্য দোহাকে আলোচনায় আনে, জীবনযাত্রা ও নিরাপত্তার মান এখনো অনেক উঁচু। তাই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে এটি এক নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে জনপ্রিয় হচ্ছে।
কাতারের দোহা শহরের উপকণ্ঠে গড়ে ওঠা ‘এডুকেশন সিটি’ ঘিরে আগ্রহ বাড়ছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইউন ভ র স ট ব শ বব দ য শ বব দ য ল
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের ভিসা নীতিতে যুক্তরাষ্ট্রে অনিশ্চয়তা, বিকল্প হয়ে উঠছে কাতার
ভিসা ও নিয়মের কঠোরতা বাড়ানোর মার্কিন প্রশাসনের সিদ্ধান্তের কারণে বিকল্প ভাবতে হচ্ছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের। আংশিকভাবে হলেও এই বিকল্প হয়ে উঠছে কাতার। দোহা শহরের উপকণ্ঠে গড়ে ওঠা ‘এডুকেশন সিটি’ ঘিরে আগ্রহ বাড়ছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের। নামকরা মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শাখা ক্যাম্পাস রয়েছে এখানে। সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।
সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজারো শিক্ষার্থী দোহায় এসে ভর্তি হয়েছেন নর্থওয়েস্টার্ন, কার্নেগি মেলন, জর্জটাউন, টেক্সাস এঅ্যান্ডএম ও ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটির শাখা ক্যাম্পাসে। এ ছাড়া এখানে রয়েছে ফরাসি বিজনেস স্কুল এইচইসি প্যারিস ও হামাদ বিন খলিফা ইউনিভার্সিটি।
ভর্তি বেড়েছে ১২%কাতার ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পরিচালিত এ শিক্ষাকেন্দ্রে এ বছর শিক্ষার্থী ভর্তি বেড়েছে ১২ শতাংশ, মোট শিক্ষার্থী এখন ৪ হাজার ৪৬৩ জন। যদিও এটি যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর আসা প্রায় এক মিলিয়ন বিদেশি শিক্ষার্থীর তুলনায় খুবই ছোট সংখ্যা। তবু শিক্ষার্থী বাড়ার কারণে দোহাকে বৈশ্বিক শিক্ষার নতুন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে।
টানাপোড়েনে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়, সুবিধা নিচ্ছে দোহা
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য কাতারে শাখা খোলা এখন বড় অর্থনৈতিক সহায়তা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কর্নেল ইউনিভার্সিটি প্রতিবছর তাদের দোহা মেডিকেল স্কুল পরিচালনার জন্য প্রায় ১৩০ মিলিয়ন ডলার পায়। ২০১২ সাল থেকে মোট অর্থায়ন হয়েছে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে জর্জটাউন ও কার্নেগি মেলন তাদের চুক্তি আরও ১০ বছর বাড়িয়েছে।
তবে এই অংশীদারত্ব নিয়ে ওয়াশিংটনে সমালোচনাও রয়েছে। অনেকে অভিযোগ করেন, হামাসের অফিস থাকা কাতার মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। এ বিতর্কের মধ্যেই ২০২৪ সালে টেক্সাস এঅ্যান্ডএম তাদের কাতার চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেয়।
তবু কাতারের পরিকল্পনা থেমে নেই। ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট মারমোলেখো জানিয়েছেন, টেক্সাস এঅ্যান্ডএমের ফাঁকা জায়গায় নতুন এক ‘মাল্টি–ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস’ তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে কাজ করবে।
আরও পড়ুনগোল্ডম্যান স্যাকসে ইন্টার্নশিপ, সিউল–সাংহাই–হংকং–টোকিওতে কাজ৪ ঘণ্টা আগেকাতারের কৌশলপ্রাকৃতিক গ্যাস বিক্রি করে গড়ে ওঠা ৫০০ বিলিয়ন ডলারের সার্বভৌম তহবিল কাতারকে বিশ্বের ধনীতম দেশের কাতারে তুলেছে। এখন সেই অর্থ দিয়ে তারা অর্থনীতি বৈচিত্র্যময় করছে, জনগণকে প্রশিক্ষিত করছে এবং বৈশ্বিক প্রভাব বাড়াচ্ছে। ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন ও মধ্যপ্রাচ্যের সংকটে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন—সবকিছু মিলিয়ে শিক্ষা–কূটনীতিই এখন দোহার শক্তির মূল হাতিয়ার।
যদিও ইরান–ইসরায়েল সংঘাত ও আঞ্চলিক অস্থিরতা মাঝেমধ্য দোহাকে আলোচনায় আনে, জীবনযাত্রা ও নিরাপত্তার মান এখনো অনেক উঁচু। তাই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে এটি এক নিরাপদ গন্তব্য হিসেবে জনপ্রিয় হচ্ছে।
কাতারের দোহা শহরের উপকণ্ঠে গড়ে ওঠা ‘এডুকেশন সিটি’ ঘিরে আগ্রহ বাড়ছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের