বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত আইএমএফের আবাসিক প্রতিনিধির সাক্ষাৎ
Published: 8th, October 2025 GMT
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বাংলাদেশ নিযুক্ত আবাসিক প্রতিনিধি ম্যাক্সিম ক্রিশকো। আজ বুধবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
সাক্ষাতে তাঁরা প্রায় এক ঘণ্টার মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ করেন। এ সময় আইএমএফের বাংলাদেশ দপ্তরের আরও এক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। আর বিএনপির পক্ষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক বিশেষ সহযোগী উপদেষ্টা কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জিয়াউদ্দীন হায়দার এবং চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের বিষয়ে জিয়াউদ্দীন হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আলোচনায় বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা, বাংলাদেশের ব্যাংক খাত, এনবিআর, আইএমএফের ঋণ ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি তাঁরা বিএনপির উদ্বেগের বিষয়গুলোও (কনসার্ন) জানতে চেয়েছেন। আমরাও সেসব বিষয়ে তাঁদের জানিয়েছি। এ ছাড়া বাংলাদেশে আইএমএফের ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’
এর আগে আজ বেলা ১১টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ হয় বলে দলের মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
ওই বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন, বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, স্থানীয় সরকারব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ এবং সংসদকে শক্তিশালী করার বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইএমএফ র র সদস য ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
অভাবের কথা বলে পরিচিত হন, আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে হাতিয়ে নেন টাকা
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্য পরিচয়ে অপহরণ ও চাঁদাবাজিতে জড়িত একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সন্দেহভাজন দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকা থেকে সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম শাখার একটি আভিযানিক দল তাঁদের গ্রেপ্তার করে।
আজ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সিআইডি। গ্রেপ্তার দুজন হলেন মো. হাসানুজ্জামান (৩৫) ও মো. আলমগীর শিকারী (৪৬)।
সিআইডি জানায়, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সিআইডি বা পুলিশের পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে অপহরণ, মারধর, ভয়ভীতি প্রদর্শন, চাঁদা আদায় এবং বিব্রতকর ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেল করে আসছিল। তাঁরা মূলত তাবলিগ জামাতসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সূত্র ধরে মানুষের সঙ্গে পরিচয় তৈরি করে বিশ্বাস অর্জন করত। এরপর অভাবের কথা বলে টাকা নেওয়ার মাধ্যমে ফাঁদ পাতত।
সিআইডি সূত্র আরও জানায়, কাকরাইল মারকাজ মসজিদে তাবলিগ জামাতের অনুষ্ঠানে অভিযুক্ত শামসুল হক খানের (৫৬) সঙ্গে জামাল (ছদ্মনাম) নামের এক ব্যবসায়ীর এভাবেই পরিচয় হয়। চক্রের সদস্য শামসুল প্রায়ই অসুস্থতা ও অভাবের কথা বলে তাঁর কাছ থেকে টাকা নিতেন।
সূত্রটি জানায়, গত ১৪ অক্টোবর রাতে ব্যবসায়িক কাজ সেরে খুলনা থেকে ঢাকায় এলে জামালের সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর কাঁচাবাজার গোলচত্বরে দেখা করেন সামসুল। নাশতা শেষে তাঁকে দুই হাজার টাকা দিয়ে রেস্তোরাঁ থেকে বের হতেই সামসুসহ আরও সাতজন নিজেদের সিআইডি পরিচয় দিয়ে জাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখিয়ে জামালকে জোর করে গাড়িতে তোলেন। এ সময় জামালের এক ব্যবসায়িক অংশীদারও তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
ভুক্তভোগীদের ঢাকার হাসনাবাদ এলাকায় বসুন্ধরা সিটির বি-ব্লক, রোড-৮–এর একটি ছয়তলা বাড়ির ছয়তলায় নিয়ে যাওয়া হয় উল্লেখ করে সিআইডি জানায়, সেখানে প্রথমে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে জামালকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে ভয় দেখিয়ে তাঁর নগদ টাকা এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে মোট ১ কোটি ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। জামালের ব্যবসায়িক অংশীদারের কাছ থেকেও ২৭ হাজার টাকা নেওয়া হয়।
সিআইডি আরও জানায়, জামালকে বিবস্ত্র করে এক নারীর সঙ্গে বসিয়ে ভিডিও ও ছবি ধারণ করা হয় এবং ১৮টি নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। দুজনকে টানা প্রায় ১৭ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে ঘটনাটি পুলিশে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
সিআইডি জানায়, এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর চক্রটি ধারণ করা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আরও ২০ লাখ টাকা দাবি করে। ঘটনার পর জামাল যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা (নং-১৬, তারিখ ৬ নভেম্বর ২০২৫) দায়ের করেন। এরপর মামলার তদন্তভার সিআইডি গ্রহণ করে এবং চক্রের সদস্য হাসানুজ্জামান ও আলমগীর শিকারীকে গ্রেপ্তার করে।
সিআইডি জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার দুজন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। চক্রের অন্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশের এই সংস্থা।