যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের বাস্তবায়নে রাজি হামাস–ইসরায়েল, জানালেন ট্রাম্প
Published: 9th, October 2025 GMT
গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মি মুক্তি সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের বাস্তবায়নে একমত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েল। ট্রাম্প নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন।
বুধবার নিজের ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লিখেন, ‘আমি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, ইসরায়েল ও হামাস—উভয়ই আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে সই করেছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আরও লিখেন, ‘খুব শিগগিরই সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে ইসরায়েল নিজেদের সেনাদের নির্ধারণ করা একটি সীমানায় সরিয়ে আনবে।’
বলা হয়েছে, হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার সমঝোতার বিষয়ে মধ্যস্ততাকারী কাতার পরে আরও বিস্তারিত জানাবে।
এ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মিসরে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় আলোচকেরা একটি চূড়ান্ত চুক্তির ‘খুব কাছাকাছি’ পৌঁছে গেছেন। চুক্তি হলে সেটার ঘোষণা দেওয়ার জন্য মিসরে যাবেন তিনি।
এরপর হোয়াইট হাউস জানায়, ওয়াশিংটনের ওয়াল্টার রিড মেডিকেল সেন্টারে আগামী শুক্রবার সকালে পূর্বনির্ধারিত বার্ষিক স্বাস্থ্যপরীক্ষায় অংশ নেবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এরপর তিনি মিসরে যেতে পারেন। সেটা শনিবার কিংবা রোববার নাগাদ হতে পারে।
যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় দুপক্ষের সম্মত হওয়ার পর ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তাঁর দপ্তরের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এটা ‘ইসরায়েলের জন্য একটি দারুণ দিন’। আজ (বৃহস্পতিবার) দেশটির মন্ত্রিসভা এ পরিকল্পনার অনুমোদন দিতে পারে। সেই সঙ্গে নেতানিয়াহু নেসেটে (ইসরায়েলের পার্লামেন্ট) ভাষণ দিতে ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনগাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনা চুক্তির ‘খুব কাছাকাছি’, ঘোষণা দিতে মিসর যাবেন ট্রাম্প১ ঘণ্টা আগেগত মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা নিয়ে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ইসরায়েল ও হামাস দুই পক্ষই ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ইতিবাচক সাড়া দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়।
চলমান আলোচনায় কাতার, তুরস্ক, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের উর্ধ্বতন কর্মকতারা অংশ নিয়েছেন। মধ্যস্ততাকারীরা ট্রাম্পের ২০ দফা যাতে দুপক্ষ মেনে নেয়, সেজন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান এবং উপত্যকাটিতে হামাসের হাতে থাকা ৪৮ জন জিম্মিকে (জীবিত ও মৃত) মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২০ জন জীবিত আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিপরীতে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দীদের অনেকেই মুক্তি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুনমিসরে দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় ইসরায়েলকে কী শর্ত দিল হামাস১৬ ঘণ্টা আগে২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন। জিম্মি করা হয় ২৫১ জনকে। তাঁদের মধ্যে ৪৭ জন এখনো জিম্মি। এর মধ্যে ২৫ জন আর বেঁচে নেই বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ওই দিন থেকেই গাজায় টানা নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য, গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯টি শিশু।
আরও পড়ুনএকদিকে আলোচনা, অন্যদিকে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল ০৭ অক্টোবর ২০২৫আরও পড়ুনগাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় আলোচকদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বললেন ট্রাম্প০৫ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে মামলার বাদিকে মধ্যরাতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা, হুমকি
রূপগঞ্জে মামলা তুলে না নেওয়ায় মামলার আসামিরা মধ্যরাতে বাদীর বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এরপর মামলার বাদি ও পরিবারের সদস্যদের অব্যাহত হুমকির দিয়ে যাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। এরপর থেকে আতংকে দিনাতিপাত করছে মামলার বাদি ও তার স্বজনরা।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আমেনা বেগম বাদী হয়ে সোমবার দুপুরে রূপগঞ্জ থানা একটি অভিযোগ দেন। এরআগে রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার তারাবো পৌরসভার টাটকি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনার তিন দিন পার হলেও রূপগঞ্জ থানায় কোনো মামলা নথিভুক্ত হয়নি। এরফলে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বাদী ও তার স্বজনরা ফের হামলায় মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে শংকা প্রকাশ করছেন।
ভুক্তভোগী আমেনা বেগম জানান, গত কয়েক মাস আগে স্থানীয় সন্ত্রাসী রুবেল ভূইয়া, রাসেল ভূঁইয়া শ্রাবণ ওরফে কুত্তা শ্রাবণ এর আগে তাদেরকে মারধর ও বাড়িতে হামলা ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় তারা রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
গত বেশ কিছুদিন ধরে মামলা তুলে নিতে রুবেল ভূঁইয়া, রাসেল ভূইয়া ও কুত্তা শ্রাবণ তাদের হুমকি ধামকি প্রদান করে আসছিল। কিন্তু তারা মামলা তুলে নিতে রাজি নি।
সোমবার রাত ১০ টার দিকে আমেনা বেগম ও তার পরিবারের লোকজন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত আড়াইটার দিকে আমেনা বেগমের দেবর নূর আলমের দুই মাসের ছেলে আদিল কান্না করলে বাড়ির সবার ঘুম ভেঙ্গে যায়।
এ সময় নূর আলম বাইরে বেরিয়ে এসে দেখতে পান তাদের বাড়িতে রুবেল ভূঁইয়ার হুকুমে রাসেল ভূঁইয়ার কুত্তা শ্রাবণ, শাহেদ, সিয়াম, মেহেদী, রাজু, আয়নাল, নীরব তৌহিদুলসহ গত ৪/৫ জন মিলে পেট্রোল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। আগুন দিতে দেখে নূর আলমের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। ততক্ষণে ঘরের কিছু অংশ পুড়ে যায়।
এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন মামলা তুলে না নিলে তাদের এভাবেই আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করবে বলে হুমকি ধামকি প্রদান করে চলে যায়। পরে জরুরি সেবা ৯৯৯ কল দিয়ে তারা রূপগঞ্জ থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন।
এ ব্যাপারে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা রূপগঞ্জ থানার এসআই জয়নাল আবেদিন বলেন. ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সমান্য কিছু পুড়া জিনিষপত্র দেখেছি। তদন্ত চলমাল রয়েছে।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শেষে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।