জর্ডানের শরণার্থীশিবিরে বড় হওয়া ফিলিস্তিনি বিজ্ঞানীর নোবেল জয়
Published: 9th, October 2025 GMT
জর্ডানে একটি শরণার্থীশিবিরে জন্ম ও শৈশব কাটানো এক ফিলিস্তিনি বিজ্ঞানী এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন। গতকাল বুধবার রসায়নে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
‘ধাতব-জৈব কাঠামো’ বা ‘মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক’ নামে নতুন একধরনের আণবিক কাঠামো আবিষ্কারের জন্য আরও দুই বিজ্ঞানীর সঙ্গে নোবেল জেতেন ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারের সন্তান ওমর এম ইয়াঘি। বাকি দুই বিজ্ঞানী হলেন সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন।
নোবেল জয়ের খবর প্রকাশের পর নোবেল প্রাইজ আউটরিচের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অ্যাডাম স্মিথকে টেলিফোনে একটি সাক্ষাৎকার দেন ইয়াঘি। ইয়াঘি বলেন, নোবেল জয়ের খবর শুনে তিনি বিস্মিত, আনন্দিত ও অভিভূত হয়ে পড়েছিলেন।
স্মিথ বলেন, ৬০ বছর বয়সী ইয়াঘি সম্ভবত জর্ডানে জন্ম নেওয়া প্রথম নোবেল বিজয়ী।
আমি খুব সাধারণ একটি বাড়িতে বড় হয়েছি। একটি ছোট কক্ষে আমরা অনেকে থাকতাম। আমাদের যে গবাদিপশু পালন করতাম, সেগুলোও একই ঘরে থাকতওমর এম ইয়াঘি, রসায়নে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীজর্ডানের রাজধানী আম্মানে একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থীশিবিরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা এম ইয়াঘির। সেখান থেকে ১৫ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।
আম্মানের শরণার্থীজীবনের কথা মনে করে ইয়াঘি বলেন, ‘আমি খুব সাধারণ একটি বাড়িতে বড় হয়েছি। একটি ছোট কক্ষে আমরা অনেকে থাকতাম। আমাদের যে গবাদিপশু পালন করতাম, সেগুলোও একই ঘরে থাকত। একটি শরণার্থী পরিবারে আমার জন্ম হয়েছিল এবং আমার মা–বাবা খুব একটা লেখাপড়া জানতেন না।’
এটা দীর্ঘ এক যাত্রা আর বিজ্ঞান আপনাকে এ সুযোগ করে দেবে। পৃথিবীতে যেসব ক্ষেত্র সবাইকে সমান সুযোগ দেয়, তার মধ্যে বিজ্ঞান অন্যতম বলেও মন্তব্য করেন ইয়াঘি।
আরও পড়ুনএকুশ শতকের অন্যতম সেরা ও বহুল ব্যবহৃত আণবিক কাঠামোর আবিষ্কারকদের নোবেল জয় ০৮ অক্টোবর ২০২৫এই বিজ্ঞানী আরও বলেন, সব জায়গায় বুদ্ধিমান, প্রতিভাবান ও দক্ষ মানুষ রয়েছেন। ঠিক এ কারণে তাঁদের সম্ভাবনা বিকাশের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
ইয়াঘির নোবেল জয়ের খবর প্রকাশের পর জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ (দ্বিতীয়) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান। বাদশাহ আবদুল্লাহ লেখেন, ‘জর্ডানের বিজ্ঞানী অধ্যাপক ওমর ইয়াঘি ২০২৫ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার জেতায় (আমরা) গর্বিত। তাঁর এ অর্জন জর্ডানের জন্য গর্বের।’
ইয়াঘি ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি এখন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
স্মিথ বলেন, ৬০ বছর বয়সী ইয়াঘি সম্ভবত জর্ডানে জন্ম নেওয়া প্রথম নোবেল বিজয়ী।আরও পড়ুনশরণার্থী নামটি যেভাবে পেয়েছে ফিলিস্তিন২২ অক্টোবর ২০২৩ইয়াঘির নোবেল জয়ের খবর প্রকাশের পর এক্সে এক পোস্টে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক মোহাম্মদ শেহাদ এই বিজ্ঞানী ছেলেবেলায় যে ভয়াবহ পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন, সে কথা উল্লেখ করেন।
সাংবাদিক শেহাদ বলেন, ইসরায়েল গাজায় জাতিগত নিধন চালাচ্ছে। আগেও চালিয়েছে। তারা গাজার শত শত শিক্ষাবিদকে হত্যা করেছে।
ইয়াঘি বলেন, সুন্দর জিনিস তৈরি করতে এবং বুদ্ধিদীপ্ত সমস্যার সমাধান করতে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ন ব ল জয় শরণ র থ
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাবির সাবেক ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় নিজ ঘর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সুমি আক্তারের (২৬) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) ভোরে উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের নিজ ঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম লাশ উদ্ধারের তথ্য জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
বাকৃবি শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ
৫০ বছর ধরে ‘এক টাকায়’ শিক্ষার আলো ছড়ান যিনি
সুমি আক্তার আমবাড়িয়া গ্রামের কৃষক গোলাপ রহমানের মেয়ে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ সেশনের কলা অনুষদের সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সুমি আক্তার জন্মগতভাবে ফাইব্রাস ডিসপ্লাসিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন। দেড় মাস আগে নিজ বাড়িতে এসে সেখানে থেকে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার শরীরের হাড় দ্রুত ক্ষয় হচ্ছিল এবং একাধিক অস্ত্রোপচার সত্ত্বেও শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তীব্র ব্যথা, চলাফেরায় সীমাবদ্ধতা ও ক্রমাগত দুর্বলতায় তিনি মানসিকভাবে চাপের মধ্যে ছিলেন।
পরিবারের বরাত দিয়ে মাজিহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রফিকুজ্জামান বলেন, ‘‘সুমি আক্তার গতরাত ৩টা পর্যন্ত নিজ ঘরে লেখাপড়া করেন। পরে মা ফজরের নামাজের জন্য ডাকতে গেলে তার ঘরের দরজা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে দেখা যায়, তিনি ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছেন।’’
সুমির ছোট খালা মোছা. কাঞ্চনী জানিয়েছেন, সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং সুমির রোগের রিপোর্ট দেখে বাবাকে থানায় নিয়ে যায় ও দাফনের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘মেয়েটি বিরল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সহপাঠী এবং গ্রামের বিভিন্ন মানুষের সহায়তায় তার চিকিৎসা চলছিল। ভোরে নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থা দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন।’’
এ ঘটনায় অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঢাকা/কাঞ্চন/সৌরভ/বকুল