সিলেটে সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দুই মনোনয়নপ্রত্যাশীর অনুসারীদের সংঘর্ষ
Published: 10th, October 2025 GMT
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবিরের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্বনাথ পৌর শহরের বাসিয়া সেতু ও থানা গেটের সামনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় বিএনপির কর্মীরা জানিয়েছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনে তাহসিনা ও হুমায়ুন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাঁদের মনোনয়ন ঘিরে এখানে দুটি পক্ষ তৎপর আছে। এর জেরেই গতকাল ওই দুই পক্ষের অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়ান।
তাহসিনা ও হুমায়ুন পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ওসমানীনগর সার্কেল) আশরাফুজ্জামান। গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে কোনো পক্ষই সংঘর্ষের বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেনি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুর থেকেই উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। বিকেলের দিকে হুমায়ুন কবির দৌলতপুর ইউনিয়নে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য রওনা হন। এ সময় তাহসিনা-সমর্থিত পৌর বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিছিল করছিলেন। উভয় পক্ষের মধ্যে বাসিয়া সেতু এলাকায় দেখা হলে উত্তেজনা ছড়ায়।
আরও পড়ুনসিলেটে সড়ক–রেলে নাজুক অবস্থা, প্রতিকারে জমায়েতের ঘোষণা আরিফুলের ১৫ ঘণ্টা আগেঅনুষ্ঠান শেষে হুমায়ুন কবির ফিরে যাওয়ার পর হঠাৎ রাত ৯টার দিকে দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে আবার উত্তেজনা ছড়ায়। তাহসিনা পক্ষের সমর্থকেরা বিশ্বনাথ নতুন বাজারে এবং হুমায়ুন পক্ষের সমর্থকেরা পুরান বাজারে অবস্থান নেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। পরে তাঁরা ইটপাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি সংঘর্ষে জড়ান। এ সময় যুবদল নেতা আবদুর রহমান, ছাত্রদল নেতা মিনহাজসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে অন্যদের নাম জানা যায়নি। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী ‘গুমের’ পর গত ১৩ বছরে সিলেট-২ আসনে ধীরে ধীরে তৎপর হন ইলিয়াসের স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর। স্বামীর জনপ্রিয়তা আর নিজের আন্তরিকতা দিয়ে অল্পদিনেই স্থানীয় বিএনপিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন। এত দিন এই আসনে বিএনপির ‘একক প্রার্থী’ হিসেবে আলোচনায় ছিলেন তাহসিনা। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ইলিয়াস ‘গুমের’ পর বিএনপি একবারই, অর্থাৎ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। ওই নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পান তাহসিনা। তখন তাহসিনার প্রার্থিতা আদালতে স্থগিত হওয়ায় তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি।
আরও পড়ুনক্ষোভ জানিয়ে বেহাল সড়কে দাঁড়িয়ে সিলেট বিএনপি সভাপতির লাইভ ১৯ ঘণ্টা আগেতবে গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সিলেট-২ আসনে হুমায়ুন কবির নির্বাচন করার ইচ্ছা প্রকাশ করায় স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার জন্ম হয়। সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে ‘সিলেট থেকে হুমায়ুন নির্বাচন করবেন’ বলে জানান। এরপরই মূলত সিলেট-২ আসনে তাহসিনা ও হুমায়ুন পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের পক্ষে-বিপক্ষে তৎপরতা বাড়ে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ল ট ২ আসন সমর থকদ র ন য় ব এনপ ব শ বন থ ব এনপ র র কর ম স ঘর ষ সমর থ গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দুই মনোনয়নপ্রত্যাশীর অনুসারীদের সংঘর্ষ
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবিরের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্বনাথ পৌর শহরের বাসিয়া সেতু ও থানা গেটের সামনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় বিএনপির কর্মীরা জানিয়েছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনে তাহসিনা ও হুমায়ুন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাঁদের মনোনয়ন ঘিরে এখানে দুটি পক্ষ তৎপর আছে। এর জেরেই গতকাল ওই দুই পক্ষের অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়ান।
তাহসিনা ও হুমায়ুন পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ওসমানীনগর সার্কেল) আশরাফুজ্জামান। গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে কোনো পক্ষই সংঘর্ষের বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেনি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুর থেকেই উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। বিকেলের দিকে হুমায়ুন কবির দৌলতপুর ইউনিয়নে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য রওনা হন। এ সময় তাহসিনা-সমর্থিত পৌর বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিছিল করছিলেন। উভয় পক্ষের মধ্যে বাসিয়া সেতু এলাকায় দেখা হলে উত্তেজনা ছড়ায়।
আরও পড়ুনসিলেটে সড়ক–রেলে নাজুক অবস্থা, প্রতিকারে জমায়েতের ঘোষণা আরিফুলের ১৫ ঘণ্টা আগেঅনুষ্ঠান শেষে হুমায়ুন কবির ফিরে যাওয়ার পর হঠাৎ রাত ৯টার দিকে দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে আবার উত্তেজনা ছড়ায়। তাহসিনা পক্ষের সমর্থকেরা বিশ্বনাথ নতুন বাজারে এবং হুমায়ুন পক্ষের সমর্থকেরা পুরান বাজারে অবস্থান নেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। পরে তাঁরা ইটপাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি সংঘর্ষে জড়ান। এ সময় যুবদল নেতা আবদুর রহমান, ছাত্রদল নেতা মিনহাজসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে অন্যদের নাম জানা যায়নি। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী ‘গুমের’ পর গত ১৩ বছরে সিলেট-২ আসনে ধীরে ধীরে তৎপর হন ইলিয়াসের স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর। স্বামীর জনপ্রিয়তা আর নিজের আন্তরিকতা দিয়ে অল্পদিনেই স্থানীয় বিএনপিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন। এত দিন এই আসনে বিএনপির ‘একক প্রার্থী’ হিসেবে আলোচনায় ছিলেন তাহসিনা। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ইলিয়াস ‘গুমের’ পর বিএনপি একবারই, অর্থাৎ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। ওই নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পান তাহসিনা। তখন তাহসিনার প্রার্থিতা আদালতে স্থগিত হওয়ায় তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি।
আরও পড়ুনক্ষোভ জানিয়ে বেহাল সড়কে দাঁড়িয়ে সিলেট বিএনপি সভাপতির লাইভ ১৯ ঘণ্টা আগেতবে গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সিলেট-২ আসনে হুমায়ুন কবির নির্বাচন করার ইচ্ছা প্রকাশ করায় স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার জন্ম হয়। সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে ‘সিলেট থেকে হুমায়ুন নির্বাচন করবেন’ বলে জানান। এরপরই মূলত সিলেট-২ আসনে তাহসিনা ও হুমায়ুন পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের পক্ষে-বিপক্ষে তৎপরতা বাড়ে।