কেউ কি কখনো নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, জেনে নিন খুঁটিনাটি
Published: 10th, October 2025 GMT
চলতি বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো। আজ শুক্রবার বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটার দিকে নরওয়ের রাজধানী অসলোর নোবেল ইনস্টিটিউট থেকে এবারের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়।
৫৮ বছর বয়সী মাচাদো শুধু ভেনেজুয়েলার একজন রাজনীতিক নন, তিনি একজন ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রকৌশলীও। ভেনেজুয়েলায় ২০২৪ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিকোলা মাদুরোর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে মাচাদো নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি।
নোবেল কমিটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে নিরলস প্রচেষ্টা এবং ন্যায্য ও শান্তিপূর্ণভাবে স্বৈরশাসনের উৎখাত করে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রামের জন্য মাচাদোকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
নোবেল শান্তি পুরস্কারের অর্থমূল্য ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রাউন, যা প্রায় ১২ লাখ ডলারের সমান। আগামী ১০ ডিসেম্বর অসলোতে বিজয়ীর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
১৯০১ সাল থেকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। আলফ্রেড নোবেলের ‘কাজ ও ইচ্ছার’ ওপর ভিত্তি করে সারা বিশ্ব থেকে খুঁজে যোগ্য ব্যক্তিকেই মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার দেওয়া হয়। তবে অনেক সময় পুরস্কার বিজয়ী নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এই পুরস্কারের কিছু খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া যাক।
পুরস্কার প্রত্যাখ্যান
নোবেল শান্তি পুরস্কার শুধু একবারই প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ১৯৭৩ সালে ভিয়েতনামের রাজনীতিবিদ লে ডুক থো এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারকে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসানের প্রচেষ্টার জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
থো এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ হিসেবে তিনি ভিয়েতনামে চলমান সংঘাতের কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন, কিসিঞ্জার ও যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। কিসিঞ্জার অবশ্য পুরস্কারটি গ্রহণ করেছিলেন।
১৯৫০-এর দশকের শেষভাগ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ভিয়েতনাম যুদ্ধ চলেছিল। ১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিল সায়গনের পতনের মধ্য দিয়ে যুদ্ধ শেষ হয়। ভিয়েতনাম যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ নিহত হন।
কেউ কি একাধিকবার পুরস্কার জিতেছেন
এই প্রশ্নের উত্তর ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’ দুটিই হতে পারে। কারণ, কোনো ব্যক্তি দুইবার নোবেল শান্তি পুরস্কার জেতেননি।
তবে দুটি সংস্থাকে একাধিকবার এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এসব সংস্থা হচ্ছে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি (১৯১৭, ১৯৪৪ ও ১৯৬৩ সাল) এবং জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (১৯৫৪ ও ১৯৮১ সাল)।
সব মিলিয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা সাতবার নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছে।
কখনো বিজয়ী ছিলেন না, এমন কি হয়েছিল
১৯০১ সালের শুরুর পর নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রতিবছর দেওয়া হয়নি।
১৯ বার এই পুরস্কার দেওয়া হয়নি। বিশেষ করে ১৯১৪–১৯১৬, ১৯১৮, ১৯২৩, ১৯২৪, ১৯২৮, ১৯৩২, ১৯৩৯–১৯৪৩, ১৯৪৮, ১৯৫৫–১৯৫৬, ১৯৬৬–১৯৬৭ ও ১৯৭২ সালে। সাধারণত যুদ্ধ অথবা উপযুক্ত প্রার্থীর অভাবে এমনটা করা হয়েছে।
নোবেল ফাউন্ডেশনের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো প্রার্থীর কাজ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে না হলে পুরস্কারটি স্থগিত রাখা যেতে পারে। এমন হলে পুরস্কারের অর্থ পরবর্তী বছরের জন্য জমা রাখা হবে। এরপরও যদি পুরস্কারটি দেওয়া সম্ভব না হয়, তবে সেই অর্থ ফাউন্ডেশনের সংরক্ষিত তহবিলে স্থানান্তর করা হবে।
উল্লেখযোগ্য একটি উদাহরণ হলো ১৯৪৮ সাল। ওই বছর মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করা হয়েছিল। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অহিংস নেতৃত্বের জন্য গান্ধীকে বেশ কয়েকবার—১৯৩৭, ১৯৩৮, ১৯৩৯, ১৯৪৭ এবং আবার ১৯৪৮ সালে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। ১৯৪৮ সালে নোবেল কমিটি ‘কোনো উপযুক্ত জীবিত প্রার্থী নেই’ উল্লেখ করে পুরস্কারটি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কমিটির ওই সিদ্ধান্তকে ব্যাপকভাবে গান্ধীর প্রতি পরোক্ষ শ্রদ্ধা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
নোবেল কমিটিতে কারা
নরওয়ের নোবেল কমিটির পাঁচজন সদস্যই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বহু আকাঙ্ক্ষিত গৌরবের মুহূর্তের; অর্থাৎ এই বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হওয়ার চাবিকাঠি ধরে রেখেছেন।
নোবেল কমিটি ১৮৯৭ সালে নরওয়ের পার্লামেন্টের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই কমিটির দায়িত্ব হলো নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীর নাম নির্বাচন করা।
কমিটির সদস্যরা ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন। মেয়াদ শেষে আবারও নির্বাচিত হতে পারেন।
নোবেল শান্তি পুরস্কারের নিয়ম অনুযায়ী, কমিটির সদস্যরা নরওয়ের সংসদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শক্তির প্রতিনিধিত্ব করেন। তবে তাঁরা সংসদের বর্তমান সদস্য হতে পারবেন না। নির্বাচিত হওয়ার পর কমিটি তার নিজস্ব চেয়ারম্যান ও ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচন করে। নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক কমিটির সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এই বছরের নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান হলেন ইয়োর্গেন ভাটনে ফ্রিডনেস (৪১)। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আসলে তোয়ে (৫১), অ্যান এঙ্গার (৭৫), ক্রিস্টিন ক্লেমেট (৬৮) ও গ্রাই লারসেন (৪৯)।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ক র জ ত প রস ক র ব ন ব ল কম ট প রস ক র র কম ট র র জন য সদস য বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা : মানবিক গুণাবলির প্রশ্ন-১
দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ এমবিবিএস ভর্তিতে আবেদন শেষ হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১২ ডিসেম্বর।
লিখিত পরীক্ষার বিষয় থাকবে: জীববিজ্ঞান-৩০, রসায়ন-২৫, পদার্থবিজ্ঞান-১৫, ইংরেজি-১৫ এবং সাধারণ জ্ঞান, প্রবণতা ও মানবিক গুণাবলি মূল্যায়ন-১৫ নম্বরের।
১. একজন চিকিৎসক তার রোগীর সঙ্গে সহানুভূতিশীল আচরণ করছেন। রোগীর কথা চিকিৎসক মনোযোগ দিয়ে শুনছেন। প্রয়োজনে মানসিক সাপোর্টও দিচ্ছেন। এটি একজন চিকিৎসকের কোন মানবিক গুণাবলির উদাহরণ?
ক. সততা
খ. সহানুভূতি
গ. ন্যায়বিচার
ঘ. আত্মনিয়ন্ত্রণ
২. ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে একটি বড় দুর্ঘটনা ঘটল। সেখানে আপনার একজন আপনজন আহত হলেন। তখন আপনি কী করবেন?
ক. শুধু তারই চিকিৎসা করবেন
খ. নিয়ম মেনে সবচেয়ে ক্রিটিক্যাল রোগীকে আগে চিকিৎসা করবেন
গ. অন্য ডাক্তারকে ডাকবেন
ঘ. আতঙ্কিত হবেন
৩. একজন চিকিৎসক, তার রোগীর ব্যক্তিগত অনেক তথ্য গোপন রাখেন। এটি সেই চিকিৎসকের কোনো মানবিক গুণের প্রকাশ?
ক. সততা
খ. দায়িত্বশীলতা
গ. গোপনীয়তা রক্ষা
ঘ. শৃঙ্খলা
৪. সাংস্কৃতিক পার্থক্যের কারণে অনেক রোগী কোনো কোন ধরনের চিকিৎসা প্রত্যাখ্যান করে থাকে, আপনি সেই রোগীকে কী করবেন?
ক. তাকে একটু জোর করবেন
খ. তার সিদ্ধান্তকে সম্মান করবেন
গ. পরিবারের ওপর চাপ দেবেন
ঘ. সংস্কৃতির প্রেক্ষাপট বোঝে নিয়ে বিকল্প ব্যাখ্যা দেবেন
৫. হাসপাতালে একজন রোগীর মৃত্যু হলো। তার পরিবারকে এই সংবাদটি জানানোর সময় আপনি তাকে কোথায় নিয়ে গিয়ে বলবেন?
ক. ব্যস্ত করিডরে ডেকে
খ. প্রাইভেট রুমে নিয়ে গিয়ে
গ. ফোনে জানাব
ঘ. পরে বলব