সংস্কারপন্থী রেজিম প্রতিষ্ঠার খেলা
Published: 17th, October 2025 GMT
‘কল্পনা করুন হাঙ্গেরীয় এক ভগ্নদশা ছোট শহরের কথা, যে শহর শুধু দেখতেই পোড়ো পোড়ো নয়, চিন্তাচেতনায়ও যে দীনহীন—মৃত সমাজতান্ত্রিক চেতনা ও মধ্য ইউরোপীয় পুরাণকথার জাড্যের মাঝখানে সে শোয়া কোথাও। জড়তা ও বিশ্বাসহীনতায় মজ্জমান ওই আবছায়া শহরে হঠাৎ এসে হাজির এক সার্কাসের দল। জানি না একে ঠিক সার্কাস বলা যাবে কি না। কারণ, তাদের কাফেলায় বলতে গেলে শুধু আছে মৃত এক বিশাল তিমি আর এক রহস্যময় প্রিন্স, যে প্রিন্সকে আবার কেউ দেখেনি কখনো, কিন্তু তাকে ভয় পায় সবাই।’ এভাবেই শুরু লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের মাস্টারপিস ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’ (প্রতিরোধের বিষণ্নতা) উপন্যাসের। কোনো প্লটভিত্তিক শুরু নয় এটা, এর শুরু কেবল এক গুজব দিয়ে। আর যেহেতু গুজব, তাই কোনো কিছু ঘটবার আগেই বাতাস থমথমে, উত্তেজক।
এ শহরের মানুষগুলোকে নিয়ে একটু বলি। এর অধিবাসীদের কোনো ঘটনাতেই দেখা যায় কোনো প্রতিক্রিয়া নেই, তাদের কান থাকে শুধু ঘটনার ফিসফিসানির দিকে। এবার এক হাওয়া উঠল জোরে—প্রতীকী ও আক্ষরিক—দুই অর্থেই। বেঁকে গেল শহরের পুরোনো ল্যাম্পপোস্ট আর এর লোকদের নৈতিক কম্পাস—দু–ই। আর এই আবহাওয়াজনিত জ্বর-ঘোরের মধ্যেই প্রায় ভূত–ভূত অবয়ব নিয়ে ঘুরে বেড়াতে শুরু করল উপন্যাসের মূল চরিত্ররা।
আছেন মিসেস এস্তার, ভয়ংকর লাগানি-ভাঙানি দেওয়া এক মাদার-ফিগার, যিনি এই সার্কাসের গোলমালের মধ্যে জনগণের ভয় ও উদ্বেগকে শুধু নিয়ন্ত্রণই করতে চাইছেন না, চাইছেন সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে শহরে তার স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা করবেন। আছেন ভালুসকা, এক আহাম্মক ভালো মানুষ, যে মদের এক দোকানের মাতালগুলোকে বলে যাচ্ছে তারা কে কোন গ্রহ, আর শেষে সব কটি মাতাল মিলে কীভাবে পুরো সৌরজগৎ। অর্থাৎ পৃথিবীর সার্বিক পতনের মধ্যেও তিনি দেখছেন সুন্দর, গোছানো এক পৃথিবীকে। আছেন মিস্টার এস্তার, বৃদ্ধ এক সংগীতবিশারদ, যিনি সুরের নিখুঁত ও মরমি দিকটায় আজও বিশ্বাস রাখেন, ওই বিমূর্ত অধরাকেই কসমিক সিস্টেম বলে ভাবেন, অর্থাৎ শহরের বর্তমান গন্ডগোলে ভরা অবস্থাকে একদম অস্বীকার করে চলছেন তিনি। আর আছে এক বড় চরিত্র—ওই বিশাল তিমি। তাকে বাইবেলের লেভিয়াথানই বলা ভালো, সে অবশ্যই নড়ে না চড়ে না, অবশ্যই তার চোখ মৃত, অবশ্যই তার গা পচছে এবং এ শহরে তার উপস্থিতি অদৃশ্য এক সংক্রামক ব্যাধি।
এবার মানুষে গিজগিজ চারদিক। শহরের শৃঙ্খলা আপনার চোখের সামনে ভেঙে পড়ছে কোনো বিপ্লব বা প্রতিরোধ থেকে নয়, স্রেফ সবার যৌথ ক্লান্তি থেকে। দৃশ্যপটে এই দফা সহিংসতা ঢুকল নীরবে, আর্দ্রতার মতো: প্রথমে সে কুয়াশাচ্ছন্ন করল বাতাস, তারপর দেখাল তার দাঁত। মিসেস এস্তার শয়তানি চাল চেলে চেলে তার এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত। তিনি এক সংস্কারপন্থী রেজিম প্রতিষ্ঠার খেলায় জিততে চলেছেন। কিন্তু তার যত দিন লাগছে এ কাজে, তত দিনে সংস্কার করার মতো আর অবশিষ্ট থাকছে না কিছুই। কারণ, সবই হাওয়া হয়ে যাচ্ছে একে একে, স্রেফ পড়ে থাকছে সমাজে সুসংহতি ও শৃঙ্খলা আনার একটা ইলিউশন।
শেষে গিয়ে—রায়টের শেষে, লুটের শেষে, আগুনের শেষে—পৃথিবী ও জীবনের প্রতি এখনো বিশ্বাস ধরে থাকলেন শুধু বোকা ভালুসকাই, তার বিশ্বাস ওই অ্যাবসার্ড কসমোলজিতে। আমরা দেখি, ভালুসকা হেঁটে বেড়াচ্ছে শহরের ধ্বংসাবশেষের মাঝখান দিয়ে, আর বকবক করে যাচ্ছে সৌরজগতের গ্রহগুলোর কক্ষপথ নিয়ে, কিন্তু আজ আর কোনো শ্রোতা নেই তার। আর তিমিটা? সে হাওয়া হয়ে গেছে। তা–ই কি! আর প্রিন্স? সে–ও হাওয়া। শহর ফিরল এক ক্লান্তিজনিত স্তব্ধ-স্থিরতায়—পুরোটা মেলানকোলি, মানে বিষণ্নতা, যে বিষণ্নতা থেকে কোনো মোক্ষণ নেই; আর পুরোটা প্রতিরোধ, যা কিনা কিছুই প্রতিরোধ করে উঠতে পারেনি।
ভূত–ভূত অবয়ব নিয়ে ঘুরে বেড়াতে শুরু করল উপন্যাসের মূল চরিত্ররা। আছেন মিসেস এস্তার, ভয়ংকর লাগানি-ভাঙানি দেওয়া এক মাদার-ফিগার, চাইছেন শহরে তার স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা করবেন। আছেন ভালুসকা, এক আহাম্মক ভালো মানুষ, যে মদের এক দোকানের মাতালগুলোকে বলে যাচ্ছে তারা কে কোন গ্রহ, আর শেষে সব কটি মাতাল মিলে কীভাবে পুরো সৌরজগৎ।এই উপন্যাস নিয়ে আমি অনেক কথা বলেছিলাম ২০২০ সালের দিকে এক সাক্ষাৎকারে। পরে আমার সাক্ষাৎকারগুলো বই আকারে বেরিয়েছিল ২০২৩ সালে, নাম ‘মানবতাবাদী সাহিত্যের বিপক্ষে’। সেই বইয়ের ষষ্ঠ অধ্যায়ের শিরোনাম ছিল: ‘লাজলো ক্রাজনাহোরকাই—এলিট ও এলিটিস্টের ফারাক’। সেখানে লাসলোর গদ্যের সঙ্গে আমি তুলনা টেনেছিলাম তাঁর একদম বিপরীত মেরুর হুয়ান রুলফোর। লাসলোর বাক্য ডিটেল দিয়ে দিয়ে তৈরি করা এক ম্যাডনেস, আর রুলফো মাপা ডিটেলে ছায়া-ছায়া পৃথিবী রচনায় দুনিয়ার সেরা। আমি বলেছিলাম, লাসলোর এই ম্যাডনেস তারাশঙ্করে আছে এবং আমার উপন্যাস ‘আগস্ট আবছায়া’র সুররিয়ালিটিটুকু লাসলোর ‘মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’-এর সুররিয়ালিটি, ফ্যাসিস্ট বিশ্বব্যবস্থাকে দেখানোর জন্য উপযুক্ত একধরনের বর্ণনাকৌশল। আবার এই উপন্যাসের এ মুহূর্তে ভুবনবিখ্যাত মরা তিমিটাকেই আমি সোজা টেনে এনে পরে বসিয়ে দিয়েছিলাম আমার দ্বিতীয় উপন্যাস ‘আলথুসার’-এ, ৫২ ফিটের এক টেবিলে ফেলা পৃথিবীর শেষতম ওয়েস্টান নর্থ প্যাসিফিক ধূসর তিমি বানিয়ে। আমার তিমির সেখানে উপস্থিতি ছিল স্পষ্ট এক কারণে: পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে, বিশেষ গোত্রের এক তিমি বিলুপ্ত হচ্ছে—এ রকম। আর লাসলোর নোবেলজয়ী তিমিটাকে কী বলব? সে কি কসমিক অ্যাবসারডিটির অদ্ভুতুড়ে বা গ্রোটেস্ক এক রূপক? সমাজে ডুব মেরে থাকা আতঙ্ক ও ভয়ের লেভিয়াথানসম ‘অনুপস্থিতির‘ স্মারক?
হাঙ্গেরিয়ান ভাষায় উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। এর ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৯৮ সালে।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপন য স র এস ত র শহর র
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কারপন্থী রেজিম প্রতিষ্ঠার খেলা
‘কল্পনা করুন হাঙ্গেরীয় এক ভগ্নদশা ছোট শহরের কথা, যে শহর শুধু দেখতেই পোড়ো পোড়ো নয়, চিন্তাচেতনায়ও যে দীনহীন—মৃত সমাজতান্ত্রিক চেতনা ও মধ্য ইউরোপীয় পুরাণকথার জাড্যের মাঝখানে সে শোয়া কোথাও। জড়তা ও বিশ্বাসহীনতায় মজ্জমান ওই আবছায়া শহরে হঠাৎ এসে হাজির এক সার্কাসের দল। জানি না একে ঠিক সার্কাস বলা যাবে কি না। কারণ, তাদের কাফেলায় বলতে গেলে শুধু আছে মৃত এক বিশাল তিমি আর এক রহস্যময় প্রিন্স, যে প্রিন্সকে আবার কেউ দেখেনি কখনো, কিন্তু তাকে ভয় পায় সবাই।’ এভাবেই শুরু লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের মাস্টারপিস ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’ (প্রতিরোধের বিষণ্নতা) উপন্যাসের। কোনো প্লটভিত্তিক শুরু নয় এটা, এর শুরু কেবল এক গুজব দিয়ে। আর যেহেতু গুজব, তাই কোনো কিছু ঘটবার আগেই বাতাস থমথমে, উত্তেজক।
এ শহরের মানুষগুলোকে নিয়ে একটু বলি। এর অধিবাসীদের কোনো ঘটনাতেই দেখা যায় কোনো প্রতিক্রিয়া নেই, তাদের কান থাকে শুধু ঘটনার ফিসফিসানির দিকে। এবার এক হাওয়া উঠল জোরে—প্রতীকী ও আক্ষরিক—দুই অর্থেই। বেঁকে গেল শহরের পুরোনো ল্যাম্পপোস্ট আর এর লোকদের নৈতিক কম্পাস—দু–ই। আর এই আবহাওয়াজনিত জ্বর-ঘোরের মধ্যেই প্রায় ভূত–ভূত অবয়ব নিয়ে ঘুরে বেড়াতে শুরু করল উপন্যাসের মূল চরিত্ররা।
আছেন মিসেস এস্তার, ভয়ংকর লাগানি-ভাঙানি দেওয়া এক মাদার-ফিগার, যিনি এই সার্কাসের গোলমালের মধ্যে জনগণের ভয় ও উদ্বেগকে শুধু নিয়ন্ত্রণই করতে চাইছেন না, চাইছেন সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে শহরে তার স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা করবেন। আছেন ভালুসকা, এক আহাম্মক ভালো মানুষ, যে মদের এক দোকানের মাতালগুলোকে বলে যাচ্ছে তারা কে কোন গ্রহ, আর শেষে সব কটি মাতাল মিলে কীভাবে পুরো সৌরজগৎ। অর্থাৎ পৃথিবীর সার্বিক পতনের মধ্যেও তিনি দেখছেন সুন্দর, গোছানো এক পৃথিবীকে। আছেন মিস্টার এস্তার, বৃদ্ধ এক সংগীতবিশারদ, যিনি সুরের নিখুঁত ও মরমি দিকটায় আজও বিশ্বাস রাখেন, ওই বিমূর্ত অধরাকেই কসমিক সিস্টেম বলে ভাবেন, অর্থাৎ শহরের বর্তমান গন্ডগোলে ভরা অবস্থাকে একদম অস্বীকার করে চলছেন তিনি। আর আছে এক বড় চরিত্র—ওই বিশাল তিমি। তাকে বাইবেলের লেভিয়াথানই বলা ভালো, সে অবশ্যই নড়ে না চড়ে না, অবশ্যই তার চোখ মৃত, অবশ্যই তার গা পচছে এবং এ শহরে তার উপস্থিতি অদৃশ্য এক সংক্রামক ব্যাধি।
এবার মানুষে গিজগিজ চারদিক। শহরের শৃঙ্খলা আপনার চোখের সামনে ভেঙে পড়ছে কোনো বিপ্লব বা প্রতিরোধ থেকে নয়, স্রেফ সবার যৌথ ক্লান্তি থেকে। দৃশ্যপটে এই দফা সহিংসতা ঢুকল নীরবে, আর্দ্রতার মতো: প্রথমে সে কুয়াশাচ্ছন্ন করল বাতাস, তারপর দেখাল তার দাঁত। মিসেস এস্তার শয়তানি চাল চেলে চেলে তার এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত। তিনি এক সংস্কারপন্থী রেজিম প্রতিষ্ঠার খেলায় জিততে চলেছেন। কিন্তু তার যত দিন লাগছে এ কাজে, তত দিনে সংস্কার করার মতো আর অবশিষ্ট থাকছে না কিছুই। কারণ, সবই হাওয়া হয়ে যাচ্ছে একে একে, স্রেফ পড়ে থাকছে সমাজে সুসংহতি ও শৃঙ্খলা আনার একটা ইলিউশন।
শেষে গিয়ে—রায়টের শেষে, লুটের শেষে, আগুনের শেষে—পৃথিবী ও জীবনের প্রতি এখনো বিশ্বাস ধরে থাকলেন শুধু বোকা ভালুসকাই, তার বিশ্বাস ওই অ্যাবসার্ড কসমোলজিতে। আমরা দেখি, ভালুসকা হেঁটে বেড়াচ্ছে শহরের ধ্বংসাবশেষের মাঝখান দিয়ে, আর বকবক করে যাচ্ছে সৌরজগতের গ্রহগুলোর কক্ষপথ নিয়ে, কিন্তু আজ আর কোনো শ্রোতা নেই তার। আর তিমিটা? সে হাওয়া হয়ে গেছে। তা–ই কি! আর প্রিন্স? সে–ও হাওয়া। শহর ফিরল এক ক্লান্তিজনিত স্তব্ধ-স্থিরতায়—পুরোটা মেলানকোলি, মানে বিষণ্নতা, যে বিষণ্নতা থেকে কোনো মোক্ষণ নেই; আর পুরোটা প্রতিরোধ, যা কিনা কিছুই প্রতিরোধ করে উঠতে পারেনি।
ভূত–ভূত অবয়ব নিয়ে ঘুরে বেড়াতে শুরু করল উপন্যাসের মূল চরিত্ররা। আছেন মিসেস এস্তার, ভয়ংকর লাগানি-ভাঙানি দেওয়া এক মাদার-ফিগার, চাইছেন শহরে তার স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা করবেন। আছেন ভালুসকা, এক আহাম্মক ভালো মানুষ, যে মদের এক দোকানের মাতালগুলোকে বলে যাচ্ছে তারা কে কোন গ্রহ, আর শেষে সব কটি মাতাল মিলে কীভাবে পুরো সৌরজগৎ।এই উপন্যাস নিয়ে আমি অনেক কথা বলেছিলাম ২০২০ সালের দিকে এক সাক্ষাৎকারে। পরে আমার সাক্ষাৎকারগুলো বই আকারে বেরিয়েছিল ২০২৩ সালে, নাম ‘মানবতাবাদী সাহিত্যের বিপক্ষে’। সেই বইয়ের ষষ্ঠ অধ্যায়ের শিরোনাম ছিল: ‘লাজলো ক্রাজনাহোরকাই—এলিট ও এলিটিস্টের ফারাক’। সেখানে লাসলোর গদ্যের সঙ্গে আমি তুলনা টেনেছিলাম তাঁর একদম বিপরীত মেরুর হুয়ান রুলফোর। লাসলোর বাক্য ডিটেল দিয়ে দিয়ে তৈরি করা এক ম্যাডনেস, আর রুলফো মাপা ডিটেলে ছায়া-ছায়া পৃথিবী রচনায় দুনিয়ার সেরা। আমি বলেছিলাম, লাসলোর এই ম্যাডনেস তারাশঙ্করে আছে এবং আমার উপন্যাস ‘আগস্ট আবছায়া’র সুররিয়ালিটিটুকু লাসলোর ‘মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’-এর সুররিয়ালিটি, ফ্যাসিস্ট বিশ্বব্যবস্থাকে দেখানোর জন্য উপযুক্ত একধরনের বর্ণনাকৌশল। আবার এই উপন্যাসের এ মুহূর্তে ভুবনবিখ্যাত মরা তিমিটাকেই আমি সোজা টেনে এনে পরে বসিয়ে দিয়েছিলাম আমার দ্বিতীয় উপন্যাস ‘আলথুসার’-এ, ৫২ ফিটের এক টেবিলে ফেলা পৃথিবীর শেষতম ওয়েস্টান নর্থ প্যাসিফিক ধূসর তিমি বানিয়ে। আমার তিমির সেখানে উপস্থিতি ছিল স্পষ্ট এক কারণে: পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে, বিশেষ গোত্রের এক তিমি বিলুপ্ত হচ্ছে—এ রকম। আর লাসলোর নোবেলজয়ী তিমিটাকে কী বলব? সে কি কসমিক অ্যাবসারডিটির অদ্ভুতুড়ে বা গ্রোটেস্ক এক রূপক? সমাজে ডুব মেরে থাকা আতঙ্ক ও ভয়ের লেভিয়াথানসম ‘অনুপস্থিতির‘ স্মারক?
হাঙ্গেরিয়ান ভাষায় উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। এর ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৯৮ সালে।