টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র চাইতেই কি ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন জেলেনস্কি
Published: 17th, October 2025 GMT
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আজ শুক্রবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে ট্রাম্পের চিন্তাভাবনা চলার মধ্যেই এ বৈঠক হতে যাচ্ছে। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পেলে রাশিয়ার সীমান্ত থেকে অনেকটা ভেতরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর সুযোগ পাবে ইউক্রেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর ফোনালাপের বিষয়ে জানানোর এক দিন পর এ বৈঠক হতে যাচ্ছে। ট্রাম্প বলেছেন, ফোনে আলোচনায় পুতিনের সঙ্গে তাঁর ‘দারুণ অগ্রগতি’ হয়েছে। দুই নেতা হাঙ্গেরিতে মুখোমুখি বৈঠকে বসার ব্যাপারেও সম্মত হয়েছেন।
আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের পর দুই নেতার মধ্যে এটিই ছিল প্রথম ফোনে আলোচনা। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, আলাপ ‘খুবই ফলপ্রসূ’ হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, ওয়াশিংটন ও মস্কোর প্রতিনিধিদল আগামী সপ্তাহে বৈঠকে বসবে।
বৈঠকের জন্য জেলেনস্কি ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন। জানুয়ারির পর দেশটিতে জেলেনস্কির তৃতীয় সফর এটি। যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর পর ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের কথা শুনতেই মস্কো হুড়োহুড়ি করে আলোচনায় ফিরতে চাইছে।’
ইউক্রেনকে ওই উন্নত মানের ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার জন্য চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছেন। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার (১ হাজার ৫০০ মাইল)।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে ভাবছেন কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমরা দেখছি.
তবে পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পর একই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা টমাহকের মজুত ফুরিয়ে ফেলতে পারি না। এগুলো আমাদেরও দরকার...তাই এ বিষয়ে আমরা কী করতে পারি, তা আমি নিশ্চিত নই।’
পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ শেষ হওয়ার পর ট্রাম্প তাঁর নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য কেমন হবে, তা নিয়ে তাঁর এবং পুতিনের মধ্যে অনেক সময় ধরে আলোচনা হয়েছে।
ট্রাম্প লিখেছেন, দুই দেশের ‘উচ্চপর্যায়ের উপদেষ্টারা’ আগামী সপ্তাহে বৈঠকে বসবেন। বৈঠকের স্থানটি সুনির্দিষ্ট করা হয়নি। ওই বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলকে নেতৃত্ব দেবেন।
ট্রাম্প আরও বলেছেন, তিনি আজ শুক্রবার জেলেনস্কিকে তাঁর আর পুতিনের মধ্যকার সর্বশেষ তথ্য জানাবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি মনে করি, আজকের কথাবার্তায় দারুণ অগ্রগতি হয়েছে।’
ট্রাম্প পরে সাংবাদিকদের বলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে হাঙ্গেরিতে পুতিনের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হতে পারে।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বলেছেন, উপদেষ্টাদের সঙ্গে রুবিওর বৈঠকের এক সপ্তাহ পর পুতিন ও ট্রাম্পের মধ্যে আলোচনা হতে পারে।
আরও পড়ুনপুতিন যুদ্ধ না থামালে ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেবেন ট্রাম্প১৩ অক্টোবর ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইউক র ন বল ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
মহাকাশ থেকে দেখা গেল আটলান্টিকের রহস্যময় কাঠামো
মহাকাশে থেকে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আটলান্টিক মহাসাগরের অসাধারণ একটি ছবি তুলেছেন বিজ্ঞানীরা। ছবিতে আটলান্টিক মহাসাগরের ৮ হাজার ৮৫০ কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে বাদামি ফিতার মতো একটি কাঠামো দেখা যায়। ছবিটি দেখে প্রথমে বিজ্ঞানীরা ক্যামেরার ত্রুটি আছে বলে মনে করেছিলেন। তবে পরে বাদামি ফিতার মতো কাঠামোটিকে গ্রেট আটলান্টিক সারগাসাম বেল্ট বলে চিহ্নিত করা হয়।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, আটলান্টিক মহাসাগরে সারগাসাম নামে পরিচিত বাদামি সামুদ্রিক শৈবালের বিশাল উত্থান হয়েছে। বিশালাকার এই শৈবাল কাঠামোর নাম দেওয়া হয়েছে গ্রেট আটলান্টিক সারগাসাম বেল্ট। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় শৈবাল কাঠামো। পশ্চিম আফ্রিকার উপকূল থেকে মেক্সিকো উপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত এই কাঠামোকে আটলান্টিকের বাদামি সাপও বলা হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আটলান্টিক মহাসাগরে থাকা গ্রেট আটলান্টিক সারগাসাম বেল্ট তৈরির পেছনে সমুদ্রের রসায়ন ও মানুষের প্রভাব রয়েছে। গত এক দশকে আমাজন, কঙ্গো ও মিসিসিপি নদীর মাধ্যমে আটলান্টিক মহাসাগরে কৃষিকাজে ব্যবহৃত সার, অপরিশোধিত বর্জ্য, নগরীর আবর্জনাসহ বিভিন্ন বস্তু জমা হয়েছে। নদীগুলোর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ নাইট্রোজেন ও ফসফরাসও আটলান্টিক মহাসাগরে প্রবেশ করেছে। এসব আবর্জনা ও রাসায়নিক পদার্থ সারগাসাম নামে পরিচিত বাদামি সামুদ্রিক শৈবালের দ্রুত বৃদ্ধিতে সারের মতো কাজ করেছে। এ ছাড়া সাহারা মরুভূমি থেকে উড়ে আসা সূক্ষ্ম ধূলিকণার কারণে আটলান্টিক মহাসাগরের লৌহ উপাদান বেড়ে যাওয়ায় শৈবালের বিস্তার দ্রুত হয়েছে।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, আটলান্টিক মহাসাগরের স্রোতের ধরন পরিবর্তনও বিশাল এই শৈবাল কাঠামো তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ২০১০ সালের দিকে নর্থ আটলান্টিক অসিলেশন স্রোতের ধরন পরিবর্তনের কারণে বাতাসের দিক ও স্রোতের গতি পরিবর্তন হয়েছে। এর ফলে সারগাসাম তার নির্দিষ্ট অবস্থান থেকে সরে গিয়ে দ্রুত বাড়তে থাকার পাশাপাশি উপসাগরীয় স্রোত ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বায়ুর মাধ্যমে বিশাল অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
স্বাভাবিকভাবে সারগাসাম শৈবাল সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি মাছ, কচ্ছপ ও অন্যান্য সামুদ্রিক জীবনের জন্য খাদ্য ও আশ্রয় সরবরাহ করে। তবে গ্রেট আটলান্টিক সারগাসাম বেল্ট বিশাল এলাকাজুড়ে থাকায় প্রবাল প্রাচীর ও সি-গ্রাস বেডে ঠিকমতো সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারে না। এতে সালোকসংশ্লেষণে বাধা সৃষ্টির পাশাপাশি পানিতে অক্সিজেন কমে যেতে পারে। ফলে গুরুতর পরিবেশগত সমস্যা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া