জেলায় জেলায় প্রাথমিক শিক্ষকদের বিক্ষোভ
Published: 9th, November 2025 GMT
দশম গ্রেডসহ তিন দাবি বাস্তবায়নে এবং পুলিশের হামলার প্রতিবাদে সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করেছেন শিক্ষকরা। রবিবার (৯ নভেম্বর) সকালে পাঠাদান বন্ধ রেখে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। ফলে স্কুলে এসে ক্লাস না করে ফিরে যেতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।
শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। এর আগে, ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন সহকারী শিক্ষকরা।
আরো পড়ুন:
শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করা নিয়ে যা জানাল পুলিশ
যৌন হয়রানি: বেরোবি শিক্ষককে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি
টাঙ্গাইল: জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন। ফলে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসলেও পাঠদান হচ্ছে না।
সরেজমিন শহরের টাউন প্রাইমারী স্কুলে গিয়ে কোন শিক্ষার্থীকে পাওয়া যায়নি। সেখানকার শিক্ষকরা জানান, ক্লাস না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা চলে গেছে।অপরদিকে, মডেল প্রাইমারিসহ অন্য স্কুলে শিক্ষার্থী থাকলেও শিক্ষকরা ক্লাসে যাননি।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি শামসুদ্দিন মাসুদ কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণা বাস্তবায়নে টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর, দেলদুয়ার, গোপালপুর, কালিহাতীসহ প্রতিটি উপজেলার বেশির ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।
সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম জাকারিয়া হায়দার বলেন, “শিক্ষকরা বেতন বৃদ্ধি, মর্যাদা বৃদ্ধির দাবি করতে পারেন। এখন নভেম্বর মাস চলছে, সামনে বার্ষিক পরীক্ষা। এ সময়ে তারা আন্দোলন না করলেও পারতো। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় আন্দোলন না করে নির্বাচিত সরকারের সময় তারা আন্দোলন করতে পারতেন। সকাল থেকেই প্রাথমিক স্কুলে যে পাঠদান চলছে না বিষয়টি আমরা জানি।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাহাব উদ্দিনের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের পাঁচ উপজেলার ৮৬২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষকদের কর্মবিরতির কারণে স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হয়েও ক্লাস না করে ফিরে গেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো কথা বলতে রাজি হননি শিক্ষকরা।
স্কুল থেকে ফিরে যাচ্ছে দুই শিক্ষার্থী
ঝালকাঠি: আজ সকালে শহরের প্রাথমিক স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীরা আসলেও পাঠদান বন্ধ রেখেছেন সহকারী শিক্ষকরা। ফলে শ্রেণিকক্ষে শিশুদের অলস সময় কাটে। শিক্ষকদের কর্মবিরতির কথা জানতে পেরে অনেক অভিভাবক পরে স্কুলে গিয়ে তাদের সন্তানদের বাড়ি নিয়ে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষকরা জানান, ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলনরত সহকারী শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনা ন্যাক্কারজনক। এ ঘটনার বিচার এবং ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই কর্মবিরতি চলবে।
কর্মবিরতি পালন করছেন ঝালকাঠির একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা
ঝালকাঠি পৌর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসী বেগম বলেন, “আমাদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে।”
ঢাকা/কাওছার, বাদাল, অলোক/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষকদ র শ ক ষকর সহক র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘সরকার প্রধান থেকে বিচার প্রধান দুর্নীতিতে রসগোল্লার মতো ডুবে ছিল
দেশের সরকার প্রধান থেকে শুরু করে বিচার প্রধান দুর্নীতিতে রসগোল্লার মতো ডুবে ছিল বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলী আকবর আজিজী।
রবিবার (৯ নভেম্বর) পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়ামে দিনভর গণশুনানি আয়োজনে তিনি এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
৫২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ, মামলা হচ্ছে ৬ রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে
রোগী সেজে সাভার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান দুদকের
দুদক কমিশনার বলেন, ‘‘আপনাদের যুবক সন্তানেরা জীবন বাজি রেখে পথে নেমেছিল এবং অন্যায়ের প্রতিকার করেছে। এত দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে যে এখন আমরা সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরতে পারি না।’’
মিঞা মুহাম্মদ আলী আকবর আজিজী বলেন, ‘‘একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে, এটাকে সারানোর চাইতে দুর্নীতি যেন আর কেউ না করে, কোনো কর্মচারী যেন দুর্নীতি করার দুঃসাহস না দেখায়; সেই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। সেবা গ্রহিতারা একটু পেছন থেকে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার প্রলোভন যেন না দেন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘যারা সেবা গ্রহণ করবার জন্য গিয়েছিন, তাদের অন্তত ওই নীতিবোধ থাকতে হবে; আমি অন্যের অধিকার ক্ষুণ্ন করছি বাড়তি কিছু দিয়ে। তাতে দুটি অপকার হচ্ছে। যার প্রাপ্যতা ছিল তাকে বঞ্চিত করলাম। আর যে মানুষটি এই সেবা দেওয়ার জন্য নিয়োজিত, তার ঈমানটা নিলামে তুলে দিলাম।’’
দুদকের এই কমিশনার আরো বলেন, ‘‘আমরা যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, আমাদেরও লোভ সংবরণ করতে হবে। সেবা গ্রহিতাদের ট্যাক্সের টাকায় আমাদের বেতন হয়। আমরা এটি ভুলে যাই। কখনো কখনো মাথায় কারো হাত থাকলে আমরা লাইনচ্যুত হই। হতে পারেন তিনি বড় ভাই, রাজনীতিবিদ বা আর কেউ। কিন্তু আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত না, ওই বড় ভাই একদিন হাত সরিয়ে নিবেন বা তিনি একদিন থাকবেন না।’’ দুর্নীতি প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
গণশুনানিতে অন্যদের মধ্যে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন, জেলা প্রশাসক সাবেত আলী, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ডা. খালেদ তৌহিদ পুলকসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
গণশুনানিতে সরকারি বেসরকারি ৪২টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১৮১টি অভিযোগ জমা হয়। তার মধ্য ১১৮টির শুনানি হয়। যার মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ নিষ্পত্তিও করা হয়। জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় ঠাকুরগাঁও দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় গণশুনানির আয়োজন করে।
ঢাকা/নাঈম/বকুল