হত্যাসহ পৃথক পাঁচ মামলায় জামিন পেয়েছেন কারাগারে থাকা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী।

জামিন চেয়ে আইভির করা পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিন ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ (রুল অ্যাবসলিউট) রায় দেন।

আদালতে আইভির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন শুনানি করেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস এম হৃদয় রহমান প্রমুখ।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী। পরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পৃথক পাঁচ মামলায় রুল অ্যাবসলিউট ঘোষণা করে সেলিনা হায়াৎ আইভীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে হত্যার অভিযোগে তিনটি ও মারাত্মক জখমের অভিযোগ করা দুটি মামলা রয়েছে।

আইভির আইনজীবী এস এম হৃদয় রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মামলাগুলোতে তাঁর মক্কেলের (আইভি) বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। তিনি একজন নারী। তিনি ছয় মাস ধরে কারাগারে আছেন। এসব যুক্তিতে জামিন চাওয়া হয়।

চলতি বছরের ৯ মে ভোরে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন আইভী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের হওয়া তিনটি হত্যা ও দুটি হত্যাচেষ্টা মামলাসহ পৃথক মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

২০০৩-২০১১ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ছিলেন আইভী। পরে নবগঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তিনটি নির্বাচনে টানা জয়ী হন তিনি। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা মামলাসহ পৃথক মামলায় গ্রেপ্তার হন আইভী।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জেও মাফিয়াতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শেখ হাসিনা : রফিউর রাব্বি

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক রফিউর রাব্বি বলেছেন, সম্প্রতি তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব জানিয়েছে তদন্ত প্রায় শেষ অচিরেই অভিযোগপত্র দেয়া হবে। আমরা চাই ত্বকী হত্যার সাথে জড়িত সকলেই বিচারের আওতায় আসবে।

এ হত্যার নির্দেশদাতা শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমান, ক্যাডার শাহ নিজাম সহ হত্যার সাথে জড়িত সকলে অভিযোগপত্রে যুক্ত থাকবে। 

হত্যাকারীরা দলীয় বলে শেখ হাসিনা সাড়ে এগার বছর এ বিচারটি বন্ধ করে রেখেছিলেন। শেখ হাসিনা দেশের বিচার-ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ছিলেন। সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জেও মাফিয়াতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। 

তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার ১৫২ মাস উপলক্ষে ত্বকী সহ সকল হত্যার বিচারের দাবিতে শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

সংগঠনের সভাপতি মনি সুপান্থর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক দীনা তাজরিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব হালিম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দীপু, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা জিয়াউল ইসলাম কাজল, সিপিবি জেলা সভাপতি শীবনাথ চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বাসদ জেলা সংগঠক সেলিম মাহমুদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন, এনসিপির জেলা সদস্য সচিব আহমেদুর রহমান তনু ও সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা।

রফিউর রাব্বি অভিযোগ করেন, ২০১৪ সালের মার্চ মাসেও র‌্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন তদন্ত শেষ, অচিরেই অভিযোগপত্র জমা দেয়া হবে। কিন্তু একযুগেও তা আদালতে জমা পড়ে নাই।

সুতরাং আমরা আশা করব এ মাসেই অভিযোগপত্র জমা দেয়া হবে। ইতিমধ্যে ৯৮ বার আদালত থেকে সময় নেয়া হয়েছে। আমরা চাই এইটি যেন শত অতিক্রম না করে। তিনি সাগর-রুনী, তনু সহ নারায়ণগঞ্জের সকল হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করেন। 

সমাবেশে বক্তারা আশা প্রকাশ করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার জন আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে ত্বকী সহ দেশে সংঘটিত সকল হত্যার বিচার করবে। ওসমান পরিবার দ্বারা সংঘটিত নারায়ণগঞ্জের আশিক, চঞ্চল, মিঠু, বুলু সহ সকল হত্যা বিচার করবে।  

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুদিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।

৫ মার্চ ২০১৪ তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চারসেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে।

অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু এর তিন মাস পর শেখ হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, তিনি ওসমান পরিবারকে দেখে রাখবেন। তার পরেই বিচারকার্য সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।

সে অভিযোগপত্র আজো পেশ করা হয় নাই। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামীদের গ্রেপ্তার ও সকল হত্যার বিচারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৫ সেনা কর্মকর্তার আইনজীবী হিসেবে সরোয়ার হোসেনের নাম প্রত্যাহার
  • গাজায় গণহত্যার প্রমাণ মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যে
  • জেলা জাসাসের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত
  • নারায়ণগঞ্জেও মাফিয়াতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শেখ হাসিনা : রফিউর রাব্বি
  • মাটির নিচের কারাগারে আটক রাখা হয়েছে ফিলিস্তিনিদের
  • সাংবাদিকের ওপর চড়াও আইনজীবী, ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা
  • যুক্তরাষ্ট্রে ৬ বছরের ছাত্রের গুলিতে আহত শিক্ষককে কোটি ডলার ক্ষতিপূরণের নির্দেশ
  • আইনজীবীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, মেজবাহউদ্দীন ফরহাদকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান
  • পদে থেকেও নির্বাচন করা যায়: অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান