ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন
Published: 9th, November 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে দীর্ঘ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে উপজেলা সদর থেকে বাঙ্গরা বাজার পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে উপজেলা বিএনপির এক পক্ষের কর্মী–সমর্থক ও সাধারণ জনগণ।
গত সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তিনি জানান, বাকি আসনে প্রার্থীদের নাম দ্রুত ঘোষণা করা হবে। প্রার্থী তালিকায় দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো.
কাজী নাজমুল হোসেনের সমর্থকেরা দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লার কোম্পানীগঞ্জ সড়কের নবীনগর উপজেলা সদর থেকে জিনোদপুর ইউনিয়নের বাঙ্গরা বাজার পর্যন্ত দুই পাশে ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধনে উপজেলাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা অংশ নেন। তাঁদের পাশাপাশি পৌর এলাকাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের সাধারণ জনগণও এতে অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নবীনগর পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মাঈন উদ্দিন, জেলা বিএনপির সদস্য হযরত আলী, আবু সাঈদ প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মো. আবদুল মান্নান ২০০১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নবীনগরে ছিলেন না। আওয়ামী লীগের সময়ে হরতালসহ বিভিন্ন আন্দোলনে নাজমুল হোসেনের নেতৃত্বে তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা মাঠে ছিলেন। তাঁরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে নাজমুল হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়ার অনুরোধ জানান।
জেলা বিএনপির সদস্য হজরত আলী বলেন, ২০১৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগবিরোধী সব আন্দোলনে যাঁরা মাঠে সক্রিয় ছিলেন, তাঁরা সবাই কাজী নাজমুল হোসেনের পক্ষে–বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হোক—এটি শুধু বিএনপির নেতা–কর্মীদের চাওয়া নয়, উপজেলার সব মানুষের চাওয়া। তাই এখানে মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য দলের কাছে আহ্বান জানাতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। মনোনয়নপ্রাপ্ত আবদুল মান্নান একবার উপজেলা নির্বাচন করেছিলেন কিন্তু জামানত হারিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি ২০০১, ২০০৮ জাতীয় নির্বাচন ও ২০১৪ সালের পৌরসভার নির্বাচনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে কাজী নাজমুল হোসেনের পক্ষে ধানের শীষে ভোট দিতে আসেননি। তাঁকে উপজেলায় দেখা যায়নি।
একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোন না ধারায় মনোনয়ন পাওয়া মো. আবদুল মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
কাজী নাজমুল হোসেন বলেন, ‘সব আন্দোলন–সংগ্রামে মাঠে সক্রিয় ছিলাম। দুর্দিনে তৃণমূল নেতাদের পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব। আমরা কেউ দলের ঊর্ধ্বে নই, দলের জন্য কাজ করছি। পুনর্বিবেচনা হলে মনোনয়ন পেতে পারি। দলই সবার আগে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ম ন ন ন ব র হ মণব ড় য় ব এনপ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নৃশংসভাবে বিড়াল হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় মাছ খাওয়ায় একটি বিড়ালকে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে এবং পথপ্রাণী, পোষা প্রাণী ও বন্য প্রাণীর ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে বগুড়ার সাতমাথা মোড়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের আয়োজন করে সরকারি আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ—তীর’। এ সময় সংগঠনটির সদস্যরা প্ল্যাকার্ড, পোস্টার হাতে প্রাণী সুরক্ষার দাবি জানান। এ ছাড়া প্রাণী আইন লঙ্ঘন না করার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে প্রচারপত্র বিলি করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে আদমদীঘি উপজেলার দত্তবাড়িয়া গুচ্ছগ্রামে বিড়াল হত্যার অভিযোগ ওঠে বুলবুলি বেগম (২৬) নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। পরদিন বুধবার তাঁর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এমরান হোসেন। পরে পুলিশ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পায়। শুক্রবার বুলবুলি বেগমকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন তীর–এর সভাপতি আশা মনি, সহসভাপতি হৈমন্তী সরকার, সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান।
পুলিশ সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে বুলবুলির বাড়িতে একটি বিড়াল ঢোকে। একপর্যায়ে প্রাণীটি রান্না করা মাছ খেয়ে ফেলে। গত মঙ্গলবার রাতে বিড়ালটি দ্বিতীয় দফায় বুলবুলির ঘরে ঢোকে। এ সময় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বিড়ালটিকে ধরে বঁটি দিয়ে গলা কেটে ফেলেন। এভাবে হত্যার পর একটি ধানখেতে ফেলে দেন। বিষয়টি জানার পর প্রতিবেশী ইসাহাক আলীর স্ত্রী শামছুন্নাহার বুধবার সকালে বিড়ালটির ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নেন। মৃত বিড়ালটি বরফ দিয়ে সংরক্ষণের পর তিনি পুলিশে খবর দেন। বিষয়টি জানাজানির পর বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়।
আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিড়াল হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযুক্ত বুলবুলি বেগম উত্তেজিত হয়ে বঁটি হাতে স্থানীয় লোকজনকে লক্ষ্য করে তেড়ে আসেন এবং কুপিয়ে হত্যার হুমকি দেন। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ ফোন পেয়ে পুলিশ ওই নারীকে আটক করে ১৫১ ধারায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। বিড়াল হত্যার ঘটনায় থানায় জিডি হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।