ফেসবুকে প্রেম, গোপনে বিয়ে, এরপর হত্যার ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড
Published: 13th, November 2025 GMT
ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্রে প্রেম। পরে বন্ধুদের উপস্থিতিতে ব্যাংক কর্মকর্তা রেজাউল করিম রেজার সঙ্গে বিয়ে হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকার। বিয়ের দুই বছর পরে জন্মদিন পালনের কথা বলে তাঁকে একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যান রেজাউল। সম্পর্ক নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে জান্নাতুলকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন তিনি।
প্রায় তিন বছর আগের এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার রেজাউলের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। জান্নাতুলের বাবা শফিকুল আলমের করা মামলায় এই রায় দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো.
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন জানান, আদালত তাঁর বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে সেখানে গাইনি অ্যান্ড অবস বিষয়ে একটি কোর্সে অধ্যয়নরত ছিলেন জান্নাতুল। ২০১৯ সালের শেষের দিকে রেজাউলের সঙ্গে তাঁর প্রেম হয়। ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর বন্ধুদের উপস্থিতিতে তাঁরা বিয়ে করেন। বিয়ের পরদিন উভয়ে পরিবারকে বিষয়টি জানান। উভয়ের পরিবার জান্নাতুলের বড় বোনের বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়ে অপেক্ষা করতে সম্মত হয়।
মামলার নথিতে আরও বলা হয়েছে, রেজা মাঝেমধ্যে জান্নাতুলদের বাসায় যেতেন। আবার কখনো হোটেলে একসঙ্গে থাকতেন। ২০২২ সালের ১০ অগাস্ট জান্নাতুলের জন্মদিন পালনের জন্য রাজধানীর পান্থপথের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যান রেজাউল। সেখানে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কথা–কাটাকাটি, বাগ্বিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে জান্নাতুলকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করেন তিনি। পরে গলা কেটে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
ঘটনার পরদিন ১১ আগস্ট রেজাউলকে আসামি করে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেন জান্নাতুলের বাবা শফিকুল আলম।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পান কলাবাগান থানার পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ মাহফুজুল কবির। ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রেজাউলকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তিনি। ২০২৪ সালের ৭ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়।
আসামি পলাতক হওয়ায় রায়ের সময় আজ তাঁর পক্ষে কোনো আইনজীবীও উপস্থিত ছিলেন না।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জ উল
এছাড়াও পড়ুন:
রানের পাহাড়ে চড়ে গলায় রেকর্ডের মালায়
আয়ারল্যান্ডের ঢিলেঢালা বোলিংয়ে ব্যাটিংটা হলো একেবারে যুৎসই। প্রভাব বিস্তার করে অনায়েসে রান তুলেছেন ব্যাটসম্যানরা। সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন দুজন। সুযোগ ছিল আরো। হয়নি। তাতে কি? স্কোরবোর্ডে বিশাল পুঁজি পেয়ে বড় কিছু রেকর্ডে নিজেদের যুক্ত করেছেন জয়, সাদমান, লিটন, শান্তরা।
সিলেটে আয়ারল্যান্ডকে ২৮৬ রানে থামিয়ে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে তুলেছে ৮ উইকেটে ৫৮৭ রান। লিড পেয়েছে ৩০৭ রানের। স্কোরবোর্ডে তিনশ রানের লিডে চোখ ছিল দলের। নয়তো দ্বিতীয়বারের মতো টেস্টে ৬০০ করার সুযোগ হাতছাড়া করতো না কোনোভাবেই।
আরো পড়ুন:
আয়ারল্যান্ড শিবিরে প্রথম আঘাত রানার
আয়ারল্যান্ডের ঢিলেঢালা বোলিংয়ে বাংলাদেশের ‘রান উৎসব’
রান পাহাড়ে চড়ে বেশ কিছু অর্জনে নিজেদের জড়িয়ে নিয়েছে দল। সেগুলোতেই চোখ বুলানো যাক—
এক.
টেস্ট ক্রিকেটে এটি বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। সর্বোচ্চ সংগ্রহ ৬৩৮। গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৩ সালে করেছিল বাংলাদেশ। এরপর ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে বাংলাদেশ নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেটে ৫৯৫ রান করেছিল। সিলেটে বাংলাদেশ আজ ইনিংস ঘোষণা করে ৫৮৭ রানে।
দুই.
দেশের মাটিতে এটি আবার সর্বোচ্চ সংগ্রহ। দেশের মাটিতে এর আগে সর্বোচ্চ রান ছিল ৬ উইকেটে ৫৬০। ২০২০ সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই রান করেছিল দল।
তিন.
১১৭.৩ ওভারে বাংলাদেশের দলীয় রান ৫০০ ছুঁয়ে ফেলে। টেস্ট ক্রিকেটে যা বাংলাদেশের দ্রুততম দলীয় ৫০০ রান। এর আগে ২০১৭ সালে ১২১.২ ওভারে দলীয় ৫০০ পেরিয়েছিল বাংলাদেশ। ম্যাচটি হয়েছিল ওয়েলিংটনে, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে।
চার.
নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম চার ব্যাটসম্যানেরই ফিফটি করার ঘটনা এবারই প্রথম বাংলাদেশের। জয় করেছেন ১৭১ রান। সাদমান ইসলাম ৮০ রানে থেমে যান। মুমিনুল হক করেছেন ৮২ রান। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে আসে ১০০ রান। পাঁচে নামা মুশফিকুর রহিম ২৩ এবং ছয়ে লিটন নেমে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে করেন ৬০ রান। প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের পাঁচজনের ফিফটি পাওয়ার ঘটনাও এবারই প্রথম।
পাঁচ.
কমপক্ষে ৫০০ দলীয় রান হয়েছে এমন ইনিংসে রান রেটে এবারের ইনিংসই এগিয়ে। এই ইনিংসের রান রেট ৪.১৬। এর আগে একবারই রান রেট ৪ ছুঁয়েছিল। ২০১৫ সালে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ছিল ৪.০৮।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল