রাজধানীর আরমানিটোলায় হেলে পড়েছে ৬ তলা ভবন
Published: 21st, November 2025 GMT
পুরান ঢাকার আরমানিটোলার কসাইটুলি এলাকায় ভূমিকম্পে একটি ছয় তলা ভবন হেলে পড়েছে। তবে, শুক্রবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ভবন হেলে পড়ার খবর পেয়ে সদরঘাট ও সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশন থেকে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গেছে।
ফায়ার সার্ভিস তদন্ত করে জানিয়েছে, পুরনো ভবনটিতে বড় ধরনের কোনো কাঠামোগত ক্ষতি হয়নি। কেবল পলেস্তারার আলগা অংশ ও কিছু ইট খসে পড়েছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৫.
ভূমিকম্পে কসাইটুলিতে একটি ভবনের রেলিং ভেঙে পড়ে তিনজন পথচারী নিহত হয়েছেন। এ পর্যন্ত রাজধানীসহ সারা দেশে ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ঢাকা/এমআর/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফাইনালে আশা জাগিয়ে কোন রাউন্ডে বাদ পড়লেন মিথিলা
থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত মিস ইউনিভার্সের ৭৪তম আসরে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশি মডেল ও অভিনেত্রী তানজিয়া জামান মিথিলা। মঞ্চে মিথিলা যাওয়ার আগপর্যন্ত বাংলাদেশকে অনেকে ‘দুধভাত’ হিসেবেই ধরেছিল। বিউটি প্যাজেন্ট নিয়মিত অনুসরণ করা বিদেশি ইনফ্লুয়েন্সার ও সাংবাদিকদের মুখে এমন কথা অনেকবার শোনা গেছে।
তবে দৃশ্যপট ধীরে ধীরে বদলে যায় ২ নভেম্বর মিথিলা মিস ইউনিভার্সের অনুষ্ঠানস্থলে পা রাখার পর থেকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীরা যখন আসতে থাকেন, তাঁদের ভিড়ে প্রথম দিন থেকেই বিশেষভাবে নজর কাড়তে শুরু করেন মিথিলা।
তাঁর পোশাক, সাজ, গয়না থেকে চলনবলন সবই ছিল আকর্ষণীয়। মিস ইউনিভার্সের ভেন্যুতে যাওয়ার আগে মিথিলা সপ্তাহখানেক নিজ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ নেন ফিলিপাইনের এক কোচের কাছে। যদিও সময়টা একেবারে কম, তারপরও যে কোচের কাছে তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাতে নিজের কিছু দিক উন্নত হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন মিথিলা।
মিস ইউনিভার্সের ইনাগুরেশন সেরিমনি থেকে টিভি ইন্টারভিউ—সবখানেই আলোচনায় আসেন মিথিলা। নজর কাড়েন প্রতিবেলার পোশাকেও। দেশ ছাড়ার আগে মিথিলা মোট ৮টি বড় আকারের লাগেজ ভর্তি করে নিয়েছিলেন দরকারি জিনিসপত্র।
মিস ইউনিভার্স চলাকালে মিথিলা জানান, এখানে নিজের লাগেজ ভালোভাবে গুছিয়ে রাখাটাও একটা বিশেষ গুণ হিসেবে ধরা হয়। কারণ, যেহেতু প্রতিযোগীদের মিনিটে মিনিটে সাজপোশাক বদলাতে হয়, তাই প্রতিদিনের হিসাব করে সবকিছু গুছিয়ে রাখাও জরুরি।
আরও পড়ুনকটাক্ষের শিকার মেক্সিকোর সেই ফাতিমা বশ জিতলেন মিস ইউনিভার্স ২০২৫–এর মুকুট৪ ঘণ্টা আগেথাইল্যান্ডের বিভিন্ন শহরে প্রতিযোগীদের গ্রুমিং ও ঘোরাফেরা ছাড়াও চলতে থাকে অলিখিত মার্কিং। তবে সবখানেই মিথিলা আলোচনায় উঠে আসেন শক্ত প্রতিযোগী হিসেবে।
অনলাইনে ভোটিং পর্ব শুরু হলে আলোচনা আরও বেড়ে যায়। এরপর মিস ইউনিভার্স আয়োজকেরাও বিশেষভাবে নজর রাখতে শুরু করেন মিথিলার দিকে। মানুষ নিয়মিত ভোট দিয়ে বিভিন্ন রাউন্ডে এগিয়ে রাখেন মিথিলাকে। অনলাইনে মিথিলা দর্শকের ভোট যেমন পেয়েছেন, সমালোচনার মুখেও পড়েছিলেন। কেউ কেউ মিথিলার প্রায় পাঁচ বছরের পুরোনো একটি ভিডিওর প্রসঙ্গ সামনে এনে তাঁর সমালোচনা করতে থাকেন।
এরপর পাতায়া শহরে অনুষ্ঠিত একটি পর্বে মিথিলা সুইমিং কস্টিউম পরলেও অনলাইনে নেতিবাচক কমেন্ট করেন কেউ কেউ। সেসব দেখে মিথিলা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। থাইল্যান্ড থেকে ফেসবুক লাইভে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। মিথিলা বলেন, ‘আমি দেশের নাম উজ্জ্বল করতে এত পরিশ্রম করছি; তারপরও কিছু মানুষ নেগেটিভ কমেন্ট করছেন। আমিও তো একটা মানুষ, আমারও ইমোশন আছে। আপনারা নিজের দেশের লোক হয়েই যদি এভাবে নেগেটিভিটি ছড়ান, তাহলে আমি কোনোভাবেই সামনে এগোতে পারব না।’
তারপরও সেসব সমালোচনা সামলে ‘ক্লোজ ডোর ইন্টারভিউ’ সেশনে ভালো করেন মিথিলা। বিদেশি সাংবাদিকেরাও মিথিলার সঙ্গে কথা বলার জন্য আগ্রহী হয়ে ওঠেন। অনলাইনে সেসব ভিডিওতে বিদেশিরাও ‘স্ট্রং কন্টেস্ট্যান্ট’ হিসেবে মিথিলার নাম সামনে আনেন। অনলাইন ভোটিংয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেও শেষ দিন মিথিলা জিততে পারেননি। তবে বিভিন্ন বিভাগে আলাদা ভোটে কোনোটায় প্রথম, কোনোটায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় হন। অনলাইন ভোটে যিনি সবচেয়ে এগিয়ে থাকেন, তিনি সরাসরি সেরা ৩০–এ জায়গা করে নিতে পারেন।
মিথিলা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করলেও ফিলিপাইনের প্রতিযোগীর কাছে অনলাইন ভোটে হেরে যান। তবে সেরা ৩০–এ জায়গা করে নেন নিজ যোগ্যতায়। এর আগে ১৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত একাধিক পর্বে মঞ্চে ভালো করেন মিথিলা। ইভনিং গাউন, ন্যাশনাল কস্টিউম, বিকিনি রাউন্ডে ছিলেন স্বচ্ছন্দ।
আরও পড়ুনমা বললেন, ‘মিথিলা ট্রাক চালানোও শিখে নিয়েছিল’৭ ঘণ্টা আগে২০ নভেম্বর সারা দিন ফাইনালের জন্য রিহার্সাল করেন ১৩০টি দেশের প্রতিযোগী। রাত ১২টায় রুমে ফিরে দুই ঘণ্টা ‘ন্যাপ’ নেওয়ার সময় পান মিথিলা। এরপর ২১ নভেম্বর রাত ৩টায় উঠে মেকআপ নিতে বসেন ফাইনালের জন্য। মেকআপ চলাকালে কিছুক্ষণের জন্য ফেসবুক লাইভে এসেছিলেন। সেখানে ফাইনালের জন্য সবার কাছে দোয়া চান। মিথিলা বলেন, ‘আমি আমার সেরাটা দিয়ে লড়াই করেছি। বাকিটা ভোরেই বোঝা যাবে।’
এরপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় শুরু হয় মিস ইউনিভার্স ২০২৫–এর চূড়ান্ত পর্ব। সেখানেই সেরা ৩০ প্রতিযোগীর নাম ঘোষণা করেন উপস্থাপক। আর প্রথমবারের মতো বিশ্বের অন্যতম সেরা সুন্দরী প্রতিযোগিতা মিস ইউনিভার্সের ‘টপ থার্টি’ (সেরা ৩০) তালিকায় ঘোষণা হয় বাংলাদেশের নাম।
এই সেরা ৩০ জনকে নিয়েই হয় পরের পর্ব। যেখানে সুইমস্যুট পরে একে একে মঞ্চে হাঁটেন ৩০ প্রতিযোগী। বিচারকেরা সেই হাঁটা দেখে বাছাই করেন সেরা ১২। আর এখানেই হাঁটতে গিয়ে সামান্য হোঁচট খান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে ভালোভাবে সামলে নিয়ে হাঁটা শেষ করেন মিথিলা। মিস ইউনিভার্সের নিয়মানুযায়ী, এসব ক্ষেত্রে ছোট্ট ভুল বা ছন্দপতনের কোনো সুযোগ নেই। ফলে একটা আশঙ্কা মাথায় উঁকি দেয়, ছোট্ট এই হোঁচটই কি মিথিলাকে সেরা ১২ থেকে ছিটকে ফেলল?
কিছুক্ষণ পর সেরা ১২ নাম ঘোষণার পর দেখা যায়, মিথিলা ছাড়াও ‘হেভিওয়েট’ প্রতিযোগীরাও একে একে অনেকে বাদ পড়ছেন। বাদ পড়াদের তালিকায় ছিলেন মিস ইউনিভার্স ইন্ডিয়া, মিস ইউনিভার্স ফ্রান্স, মিস ইউনিভার্স ব্রাজিল, মিস ইউনিভার্স যুক্তরাষ্ট্রও।
ফাইনালে মিস ইউনিভার্স ২০২৫ খেতাব জেতেন মেক্সিকোর ফাতিমা বশ। মুকুট, স্যাশে ও ফুলের তোড়া নিয়ে ছবি তোলার পর একে একে বাকি সব সুন্দরী মঞ্চে ওঠে আসেন। সেখানে মুকুটজয়ীকে জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা জানান তানজিয়া জামান মিথিলাও। ফাতিমার গাউনটি পেছনে অন্য একজনের পায়ের নিচ থেকে ছাড়িয়ে আনতেও সাহায্য করেন মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ।
বিজয়ীর সঙ্গে গাল মেলাচ্ছেন মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ মিথিলা