মানুষ নির্বাচনে যেতে চাচ্ছে, তবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
Published: 20th, November 2025 GMT
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘নাগরিকেরা একদিকে নির্বাচনের দিকে যেতে চাচ্ছে, আবার অন্যদিকে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। নিরাপত্তাহীনতা সার্বিক। তবে কোনো কোনো বিশেষ বর্গের মানুষ বিশেষ করে নারীরা, বিভিন্ন ধরনের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এই নিরাপত্তাহীনতা বেশি অনুভব করছেন। নিরাপত্তার অভাব দূর করার সাথে সাথে যে দুর্নীতি চারিদিকে ছেয়ে আছে, নতুন সরকারের কাছে মানুষ আর এই দুর্নীতি দেখতে চান না।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনায় নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রাক্-নির্বাচনী আঞ্চলিক পরামর্শ সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। সকালে খুলনা নগরের একটি হোটেলে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ও তা পূরণের উপায় নিয়ে এই নাগরিক সংলাপের আয়োজন করা হয়।
সভায় দুর্যোগ সহনশীলতা বৃদ্ধি, লবণপানির চিংড়ি চাষ নিয়ন্ত্রণ, কৃষি খাতে ভর্তুকি বাড়ানো, টেকসই বেড়িবাঁধ, সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটনশিল্পের উন্নয়ন, ইসিএর মধ্যে শিল্প স্থাপনা নিষিদ্ধকরণ, কাঁকড়া চাষের প্রতিবন্ধকতা দূর, মাঠপর্যায়ে নারীদের প্রশিক্ষণ, নিরাপদ পানির উৎস নিশ্চিত করা, মৃতপ্রায় নদী-খাল খনন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা, খুলনার শিল্প পুনরুজ্জীবন, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ নানা বিষয় উঠে আসে।
সভা শেষে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে মানুষের কথায় এক নম্বরে যেটা উঠে এসেছে, তারা নিরপেক্ষ প্রশাসন চায়। নিরপেক্ষ প্রশাসন ব্যতিরেকে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না বলে মনে করছে মানুষ। একই সঙ্গে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর নিরপেক্ষতার কথা বলেছে তারা। এ জন্য তারা প্রশাসনিক নিরাপত্তাকে এক নম্বরে রেখেছে।
সিপিডির এই ফেলো আরও বলেন, এই নির্বাচন কমিশনকে যোগ্যতা ও সাহসিকতা দেখাতে হবে। নির্বাচন কমিশনকেও নিরপেক্ষ থাকতে হবে। উদ্বেগের বিষয় হলো নির্বাচন কমিশনের বর্তমান উদ্যোগ, প্রচেষ্টা বা নীতি প্রণয়ন নিয়ে সবাই সন্তুষ্ট নয়। জনগণ এখনো আশঙ্কায় আছে, এই নির্বাচন কমিশন যথেষ্ট যোগ্যতার সঙ্গে একটু সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারবে কি না? সবাই প্রত্যাশা করে সরকার ও নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে মানুষের মনে যে শঙ্কা এখনো রয়েছে, সেটা দূর করবে।
বন্দর ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের বন্দরব্যবস্থা অনেক উন্নত করতে হবে। বন্দর ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের জন্য হয়তো বৈদেশিক বিনিয়োগেরও দরকার পড়বে। কিন্তু সঠিক সংস্কার যদি বেঠিক পদ্ধতিতে হয়, তাহলে সেই সংস্কার ফল দেয় না। বন্দর ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যে দ্রুততা, যে অস্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে করা হলো, তা একটা ভালো কাজের সুফল থেকে আমরা বঞ্চিত হব। এ দ্রুততা এই অস্বচ্ছতা কেন করার প্রয়োজন পড়ল, এই প্রশ্ন এখন আমাদের মনে রয়ে গেছে। এ ধরনের সংস্কারগুলোতে স্বচ্ছভাবে, যোগ্যতার সাথে, জনমানুষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে করলে পরে এগুলো টেকসই হবে।’
খুলনার আঞ্চলিক পরামর্শ সভা নিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের বিশেষ সংকটগুলো আলোচনায় সবচেয়ে প্রাধান্য পেয়েছে। নিরাপদ পানির অভাব, চিংড়ি চাষ, লবণাক্ততা, বেড়িবাঁধ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ঘাটতি স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। উপকূলের পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের চাহিদা স্পষ্ট। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়নের ত্রুটি, অনগ্রসর ও বৈষম্যের চিত্রও সামনে এসেছে। তিনি বলেন, সুশাসন, ন্যায়বিচার ও দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ-মানুষের প্রধান দাবি হিসেবে উঠে এসেছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, খুলনার আলোচনায় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আত্মোপলব্ধি তাঁদের চমৎকৃত করেছে। জনগণের কথা যদি তাঁরা নিয়মিত না শোনেন, তাহলে তাঁদের আবার ‘না দেশ ছেড়ে পালাতে হয়’—এমন উপলব্ধি তাঁদের হয়েছে। নির্বাচনের পর তাঁরা একটি নিরপেক্ষ, মেধাভিত্তিক প্রশাসন গড়ে তোলা এবং একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়ন সম্ভাবনা বহুদিন ধরে আলোচিত হলেও বাস্তবায়ন এখনো দৃশ্যমান নয়। পদ্মা সেতু চালুর পরও প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়নি। জমির মূল্য বৃদ্ধি পেলেও কর্মসংস্থান বা শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি বাড়েনি। নতুন প্রজন্মের শ্রমিককে আকৃষ্ট করতে অঞ্চলভিত্তিক শিল্পায়ন জরুরি। খুলনা অঞ্চলে কৃষিভিত্তিক শিল্প, চিংড়ি ও মাছ উৎপাদন এবং পর্যটন খাতে বড় সম্ভাবনা রয়েছে। সুন্দরবন ও সাংস্কৃতিক সম্পদকে কেন্দ্র করে বৃহৎ পর্যটন শিল্প গড়ে উঠতেও পারে।
সভায় সমাপনী বক্তব্য দেন সিপিডির ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জামায়াতে ইসলামীর খুলনা মহানগরের আমির মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর হোসাইন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের খুলনা মহানগরের সহসভাপতি শেখ মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আদমজী ইপিজেড হাসপাতালে চাকরির সুযোগ
আদমজী ইপিজেড হাসপাতাল ট্রাস্টি বোর্ডের অধীন বিভিন্ন গ্রেডের চারটি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে আবেদন করতে হবে।
পদের নাম ও বিবরণ১. গাইনোকোলজিস্ট ও অবস
পদসংখ্যা: ০১
শিক্ষাগত অন্যান্য ও যোগ্যতা: সংশ্লিষ্ট ফিল্ডে এফসিপিএস/এমএস ডিগ্রি/৪ বছরের অভিজ্ঞতাসহ ডিজিও ডিগ্রি বা বিএমডিসি কর্তৃক স্বীকৃত সমমানের ডিগ্রি এবং বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত।
বেতন স্কেল: ৪৩,০০০-৬৯,৮৫০ টাকা (গ্রেড-০৫)
বয়স: সর্বোচ্চ ৪২ বছর
২. মেডিকেল অফিসার
পদসংখ্যা: ০১
শিক্ষাগত অন্যান্য ও যোগ্যতা: এমবিবিএস ডিগ্রিধারী এবং বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত।
বেতন স্কেল: ২২,০০০-৫৩,০৬০ টাকা (গ্রেড-০৯)
বয়স: সর্বোচ্চ ৩২ বছর
আরও পড়ুন৪৩তম বিসিএস: চাকরি হারালেন তিন সহকারী কমিশনার, প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ নেই কারণ৫ ঘণ্টা আগে৩. সিনিয়র স্টাফ নার্স
পদসংখ্যা: ০২
শিক্ষাগত অন্যান্য ও যোগ্যতা: সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান থেকে নার্সিং ডিপ্লোমাধারী এবং নার্সিং কাউন্সিল থেকে রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত।
বেতন স্কেল: ১৬,০০০-৩৮,৬৪০ টাকা (গ্রেড-১০)
বয়স: সর্বোচ্চ ৩২ বছর
আরও পড়ুনবিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে বড় নিয়োগ, পদ ১৫৯৬১৯ নভেম্বর ২০২৫আবেদনের নিয়মনির্ধারিত চাকরির আবেদন ফরমে সদস্যসচিব, আদমজী ইপিজেড হাসপাতাল ট্রাস্টি বোর্ড, আদমজী ইপিজেড, আদমজীনগর, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ১৪৩১ বরাবর অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে পৌঁছাতে হবে। সরাসরি কোনো দরখাস্ত গ্রহণ করা হবে না। আবেদনপত্রের নমুনা বেপজার ওয়েবসাইট www.bepza.gov.bd থেকে ডাউনলোড করা যাবে।
আরও পড়ুনইউনেস্কোতে চাকরি, ঢাকায় কাজের সুযোগ৩৫ মিনিট আগেআবেদন ফি২০০ টাকা।
*আদমজী ইপিজেড হাসপাতাল, আদমজী ইপিজেড, আদমজীনগর, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ–১৪৩১–এর অনুকূলে ব্যাংকড্রাফট/পে-অর্ডার করতে হবে।
আবেদনের শেষ তারিখ২০ ডিসেম্বর ২০২৫