বিমানবন্দরে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন প্রধান উপদেষ্টা
Published: 21st, November 2025 GMT
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আগামী শনিবার সকালে ঢাকায় আসছেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাঁকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যথাযথ মর্যাদায় অভ্যর্থনা জানাবেন।
পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, প্রধান উপদেষ্টা ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাবেন। বিমানবন্দরে গার্ড অব অনার গ্রহণ করার পর ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
সফরকালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন। এরপর দুই দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, যোগাযোগ, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ, পর্যটন, সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া, শিল্পসহ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করা হবে।
পররাষ্ট্রসচিব জানান, বাংলাদেশ ভুটানকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্য, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কৃষি, পর্যটন ও ক্রীড়াসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রস্তাব দিতে পারে এবং ভুটানে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, পানি ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশি পেশাদারদের নিয়োগে ভুটান সরকারের সহযোগিতা চাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পররাষ্ট্রসচিব আরও বলেন, আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় বিষয়গুলোও আলোচনায় আসতে পারে।
পররাষ্ট্রসচিব জানান, বৈঠক শেষে ভুটানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ, ভুটানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ এবং কৃষি সহযোগিতাবিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়গুলো এখনো আলোচনাধীন।
বাংলাদেশ সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলও ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) ভুটানের প্রধানমন্ত্রী থিম্পুর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তাঁকে বিমানবন্দরে বিদায় জানাবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট রসচ ব পরর ষ ট র সহয গ ত
এছাড়াও পড়ুন:
‘কটকট’ শব্দ থেকেই কি মহাস্থানের মজাদার খাবার কটকটির নামকরণ
হজরত শাহ সুলতান বলখি মাহিসাওয়ার একাদশ শতাব্দীর মুসলিম ধর্মপ্রচারক। পুণ্ড্রবর্ধন, অর্থাৎ এখনকার বগুড়া জেলা এবং সন্দ্বীপে ইসলাম প্রচার করেছিলেন তিনি। বগুড়ার শিবগঞ্জের মহাস্থানে তাঁর সমাধী, যেটি ‘হজরত শাহ মাহমুদ বলখি মাহিসাওয়ার (রহ.)-এর মাজার শরীফ’ নামেই পরিচিত।
এখনকার মতো অনেক আগে থেকেই এই মাজার জিয়ারত করতে আসতেন তাঁর অনুসারীরা। জিয়ারত শেষে সবার মধ্যে বিলানো হতো একধরনের চারকোনা, শক্ত, মিষ্টি খাবার, যা খাওয়ার সময় ‘কটকট’ শব্দ হতো। স্থানীয়দের ধারণা, সেখান থেকেই খাবারটির নাম হয় ‘কটকটি’।
কালক্রমে সেই কটকটি হয়ে উঠেছে এ অঞ্চলের মানুষের এক অন্যতম প্রিয় খাবার, কারও কাছে সেটা নস্টালজিয়া বা স্মৃতিকাতরতা। আর কেবল বগুড়াই নয়, কটকটি সুপরিচিত সারা দেশে।
এ অঞ্চলের যাঁরা বিদেশে বসবাস করছেন, তাঁরাও স্থানীয় যেসব জিনিস মিস করেন, তার মধ্যে মহাস্থানের কটকটি অন্যতম। আর তাই অনেকে দেশে এসে গ্রামের হাতে বানানো বিভিন্ন খাবারের পাশাপাশি কটকটিও লাগেজে ভরে নেন। এভাবেই বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী মহাস্থানের কটকটি দেশের সীমানা ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে ইউরোপ-আমেরিকায়।
একদিন কটকটির বাজারেএকসময় ফেরি করে যে কটকটি বিক্রি হতো মহাস্থানের আশপাশে, সেটাই এখন রূপ নিয়েছে স্থায়ী দোকানের ব্যবসায়। কেউ কেউ তো দেড় শ বছরের বেশি সময় ধরে বংশপরম্পরায় চালাচ্ছেন কটকটির দোকান!
আবালবৃদ্ধবণিতা—সবার কাছেই খাবারটি লোভনীয়। মহাস্থানে হাট বসে সপ্তাহের শনি ও বুধবার। হাটবারে অধিকাংশ হাটুরে কেনাকাটা শেষে পরিবারের জন্য কটকটি নিতে ভোলেন না। কারণ, আর কিছু নিতে ভুললেও মাফ মেলে, কটকটি কিনতে ভুললে রক্ষা নেই!
স্থানীয় দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মহাস্থানগড় এলাকায় কটকটির দোকানের সংখ্যা চার শতাধিক। একেকটি দোকানে প্রতিদিন এক থেকে দেড় মণ কটকটি বিক্রি হয়। তবে শুক্রবার মহাস্থানগড়ে দর্শনার্থী বেশি থাকায় সেদিন বিক্রি বেড়ে যায়। প্রতি শুক্রবার তিন থেকে চার মণ কটকটি বিক্রি হয় বলে জানালেন বিক্রেতা আহসান হাবিব।
মৌসুম ভেদে কটকটির বিক্রি সবচেয়ে বেশি হয় শীতকালে