শ্রীপুরে ভূমিকম্পে কারখানা থেকে নামার সময় তাড়াহুড়িতে দেড় শতাধিক শ্রমিক আহত
Published: 21st, November 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরের ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে বহুতল ভবন থেকে তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে দেড় শতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের দিকে কেওয়া পূর্ব খন্ড গারোপাড়া এলাকায় ডেনিমেক নামের একটি পোশাক কারখানায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন ১৩০ জন। এ ছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য আরও ২০ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন মামুনুর রহমান।
আরও পড়ুনরূপগঞ্জে ভূমিকম্পে দেয়াল ধসে শিশু নিহত, মাসহ আহত দুজন৩০ মিনিট আগেশ্রমিক ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ভূমিকম্প শুরু হলে ডেনিমেক কারখানার বহুতল ভবনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন তলার শ্রমিকেরা আতঙ্কে একসঙ্গে নিচে নেমে আসার চেষ্টা করেন। এ সময় হুড়াহুড়িতে পদপৃষ্ট হয়ে ওই শ্রমিকেরা আহত হন।
কয়েকজন শ্রমিকের অভিযোগ, ভূমিকম্পের আতঙ্কের মধ্যে কারখানার মূল ফটকটি কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক খুলতে রাজি হয়নি। এতে আরও বেশি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আহতের সংখ্যা বেড়েছে।
গাজীপুরের শ্রীপুরে তাড়াহুড়া করে বহুতল ভবন থেকে নামতে গিয়ে আহত এক নারী শ্রমিককে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন সহকর্মীরা। আজ সকালে কেওয়া পূর্ব খন্ড গারোপাড়া এলাকায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে হলভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত অন্তত ৪
ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ভবন থেকে লাফ দিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত চারজন শিক্ষার্থী।
সব মিলিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আজ সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির তীব্রতা ছিল ৫ দশমিক ৭। উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী। ভূমিকম্পটিকে মাঝারি মাত্রার বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
হাজী মুহাম্মদ মহসিন হলের চারতলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে তানজীর হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ছাড়া এই হলের আরও দুজন শিক্ষার্থী ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের এক শিক্ষার্থী লাফ দিয়ে আহত হয়েছেন। তাঁর পা ভেঙে গেছে।
এ ছাড়া কবি জসিম উদ্দীন হল, সূর্যসেন হল, ফজলুল হক মুসলিম হল, ড. মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ হলের কয়েকজন শিক্ষার্থীর আহত হওয়ায় খবর পাওয়ায় গেছে।
ভূমিকম্পে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ভবনের পলেস্তারা খসে পড়েছে। মহসিন হলসহ কয়েকটি হলে এমন ঘটনা ঘটেছে।
মহসিন হলের শিক্ষার্থী হেলাল উদ্দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে লিখেন, তিনি শুয়ে ছিলেন। ভূমিকম্প এত সময় ধরে হওয়ায় তাঁর হাত-পা কাজ করছিল না। দিশেহারা হয়ে ছাদে চলে যান। কয়েকজনকে তিনতলা, চারতলা থেকে লাফিয়ে পরতে দেখেছেন, আহত হতে দেখেছেন। কয়েকজনকে অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী কারীব চৌধুরী ফেসবুকে লিখেছেন, বড় ধরনের কোনো ট্র্যাজেডি না হলে এই প্রশাসনের টনক নড়বে না। প্রাণের বিনিময় ছাড়া কোনো উদ্যোগ তারা নেয় না। শিক্ষার্থীদের ভাঙা বিল্ডিংয়ে রেখে তারা নতুন বিল্ডিংয়ে আরামে ঘুমায়। তারপর জগন্নাথ হল ট্র্যাজেডির মতো শিক্ষার্থীদের জীবন যাবে। আর তারা শিক্ষকদের নিয়ে একটা শোক দিবস পালন করবে।
ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ ফেসবুকে লিখেছেন, আজকের ভূমিকম্পে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি হলের কিছু ভবনে পলেস্তারা খসে পড়েছে। ২টি হলে দেয়ালের ইট ভেঙে কিছু কিছু টুকরো অংশ ভেঙে পড়েছে। এই সব জীর্ণ দেয়ালের অবস্থা দেখে শিক্ষার্থীরা ভীত হয়ে কেউ কেউ লাফ দিয়ে বা দ্রুত বের হতে গিয়ে আহত হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যমতে, পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। ছাত্রী হলে কিছু বোনেরা সেন্সলেসও হয়েছে।