নরসিংদীতে ভূমিকম্পে দুজন নিহত, আহত ৬৭
Published: 21st, November 2025 GMT
নরসিংদীতে ভূমিকম্পে দুজন নিহত এবং কমপক্ষে ৬৭ জন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন—পলাশ উপজেলার কাজল আলী এবং গাবতলীর ওমর মিয়া।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে পলাশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনির হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা একজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হয়েছি। এখনো উদ্ধার তৎপরতা চলছে।”
গাবতলীতে ভূমিকম্পে দেয়াল ধসে পড়ে আহত হন ওমর মিয়া। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নরসিংদী জেলা সদর ও আশপাশের বিভিন্ন স্থানে মোট ৬৭ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
ভূকম্পনে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন স্থানে অনেক ভবনে ফাটল ধরেছে। কিছু ভবন হেলে পড়েছে। বেশকিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
সুমন মিয়া নামের এক ব্যক্তি সাংবাদিকদের বলেছেন, “এত জোরে কাঁপছিল যে, দৌড়ে বাইরে বের হওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। আমাদের বাড়ির দেয়ালে বড় ফাটল ধরেছে।”
দোকানি রহিম উদ্দিন বলেছেন, “দোকানের কাঁচের শোকেস ভেঙে গেছে। মালামাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। জীবনে এমন ভয়াবহ কম্পন দেখিনি।”
নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা.
ভূমিকম্পের পরপরই ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। জেলা প্রশাসন ক্ষয়-ক্ষতির নিরূপণে কাজ করছে।
ঢাকা/হৃদয়/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বছরে ৫ বিলিয়ন ডলারের জুতা রপ্তানির সক্ষমতা আছে দেশের কারখানাগুলোর
পাল্টা শুল্ক আরোপের পর মার্কিন ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলো চীন থেকে ক্রয়াদেশ সরাচ্ছে। তাদের অনেকেই বাংলাদেশের উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে জুতার ক্রয়াদেশ নিয়ে আলোচনা করছে। এর ফলে কিছু প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে নতুন ক্রয়াদেশ পেয়েছে। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান ক্রয়াদেশ পাওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
অবশ্য মার্কিন বড় ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের কাজ পাওয়া আমাদের জন্য কিছু কঠিন। কারণ, আমাদের সরবরাহ ব্যবস্থায় বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। আমরা সবচেয়ে বেশি ভুগছি বন্ড জটিলতায়। ধরুন, আমার প্রতিষ্ঠান দেড় লাখ জোড়া জুতার ক্রয়াদেশ পেয়েছে। এই জুতার পুরো কাঁচামাল আমদানির প্রাপ্যতার অনুমতি দেয় না বন্ড কর্তৃপক্ষ। আমাদের ভাগ ভাগ করে কাঁচামাল আনতে হয়। তাতে সময়সমতো পণ্য জাহাজীকরণ আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই আমাদের জুতা রপ্তানি বছরের পর বছর ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের আশপাশেই ঘুরছে। অথচ দেশে রপ্তানিমুখী ১০০-এর বেশি কারখানায় যে যন্ত্রপাতি স্থাপন করা আছে, তাতে বছরে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলারের জুতা রপ্তানি করা সম্ভব। অর্থাৎ, এখনই বছরে ৫ বিলিয়ন ডলারের জুতা রপ্তানির সক্ষমতা দেশের কারখানাগুলোর আছে।
বন্ড জটিলতা নিরসনে মূল্য সংযোজনের শর্ত দিয়ে কাঁচামাল আমদানির অনুমতি দেওয়া উচিত। যেমন ১০০ ডলারের কাঁচামাল আনলে ১২৫ ডলারের পণ্য রপ্তানি করতে হবে। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেটি না করলে আমদানি করা কাঁচামালের ওপর শুল্ক আরোপ হবে, এমন ব্যবস্থা করলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। চীন, কোরিয়া, জাপানসহ বিভিন্ন দেশ কাঁচামাল আমদানিতে মূল্য সংযোজন ব্যবস্থা চালু করে উন্নতি করেছে।
আমাদের আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, সাভারের চামড়াশিল্প নগরের দূষণ। এ কারণে আমাদের চামড়া বিশ্বের বড় ব্র্যান্ডগুলো কিনছে না। চামড়াশিল্প নগরের ব্যবস্থাপনা বিসিকের কাছ থেকে নিয়ে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) কাছে হস্তান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সেটি হলে হয়তো পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
উৎপাদন প্রক্রিয়ায় অটোমেশন হলেও জুতাশিল্প বরাবরই শ্রমনিবিড়। সে কারণে বাংলাদেশ প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় একটা জায়গায় এগিয়ে রয়েছে। শ্রমিকের কম মজুরির জন্য বাংলাদেশ যে দামে জুতা দিতে পারে, তা অন্য দেশ পারে না। সে জন্য মার্কিন পাল্টা শুল্কের কারণে যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, সেটি কাজে লাগাতে আমাদের দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
মো. নাসির খান, সহসভাপতি, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি)