ভারতের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রামিক নেওয়া পরিচালক এসএস রাজামৌলি। তার নির্মিত পরবর্তী সিনেমা ‘বারাণসী’। তেলেগু ভাষার এ সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন—দক্ষিণী সিনেমার তারকা অভিনেতা মহেশ বাবু, পৃথ্বীরাজ সুকুমারান, বলিউড-হলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। কয়েক দিন আগে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটির ৩ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের টিজার। ভিজ্যুয়াল, সময়ের ব্যাপকতা ও আকাঙ্ক্ষা সম্পন্ন গল্প বলার স্টাইলে বুঁদ হয়ে আছেন দর্শকরা। 

‘বারাণসী’ সিনেমার বাজেট
টাইম-ট্রাভেল ঘরানার ‘বারাণসী’ সিনেমার বাজেট ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩০০ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৮০৩ কোটি টাকা); যা ইতিহাস তৈরি করেছে। এই অর্থের মধ্যে প্রিন্ট ও প্রচারের খরচ অন্তর্ভুক্ত নয়। কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক লোকেশনগুলোতে শুটিং থাকায় বাজেট আরো বাড়তে পারে। বাজেটের বড় অংশই তারকাদের পারিশ্রমিক, বিশ্বব্যাপী শুটিং, উন্নত ভিএফএক্স এবং শীর্ষ প্রযুক্তিবিদদের পেছনে ব্যয় করা হচ্ছে। ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পে নির্মিত সর্বাধিক ব্যয়বহুল সিনেমাগুলোর অন্যতম হতে যাচ্ছে ‘বারাণসী’। 

আরো পড়ুন:

জাস্টিন ট্রুডো-কেটি পেরির প্রেম: প্রাক্তন স্ত্রীর আবেগঘন বক্তব্য

সম্মানসূচক অস্কার পেলেন টম ক্রুজ

তবে এই বাজেটকে ‘কম’ বলে মন্তব্য করেছেন ট্রেড সংশ্লিষ্টরা। বলিউড হাঙ্গামাকে একটি সূত্র বলেন, “এসএস রাজামৌলির বিশাল দৃষ্টিভঙ্গিকে পর্দায় রূপ দিতে ১৩০০ কোটি রুপি বাজেট তুলনামূলক কমই। যেখানে ‘এ৬’ এবং ‘রামায়ণ’ এর মতো চলচ্চিত্রগুলো ১৫০০-২০০০ কোটি রুপি বাজেটে তৈরি হচ্ছে, সেখানে এসএস রাজামৌলি আরো বড়সড় একটি সিনেমা বানাতে চলেছেন; যা অনেক কম বাজেটে।”

এক দৃশ্যে ব্যয় ৩০ দিন
‘বারাণসী’ সিনেমার একটি দৃশ্য রামায়ণ থেকে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন পরিচালক রাজামৌলি। রামায়ণের গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনার উপর ভিত্তি করে সিক্যুয়েন্সটি তৈরি। এই দৃশ্যের শুটিংয়ের বিষয়ে রাজামৌলি বলেন, “এই দৃশ্যটির শুটিং করতে পুরো টিমের ৬০ দিন সময় লেগেছে। কারণ ব্লকের প্রতিটি অংশের জন্য বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রয়োজন হয়েছিল। আমার বিশ্বাস, সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর এই দৃশ্য ‘বারাণসী’ সিনেমার অন্যতম স্মরণীয় অংশ হয়ে উঠবে।”

বৈশ্বিক প্রচারে ব্যয় ২০০ কোটি রুপি
পরিচালক রাজামৌলি বিশ্ব প্রচারণার কৌশল বা শ্রেণি সম্পর্কে অবগত। ‘বারাণসী’ সিনেমা বিশ্ব চলচ্চিত্রের বাইরে নয়। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধু সিনেমাটির প্রচারের জন্য প্রায় ২০০ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৭৭ কোটি টাকা) বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পরিচালক বিশ্বের দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে চান। কেবল তাই নয়, ‘বাহুবলি’ ও ‘ট্রিপল আর’ সিনেমার চেয়েও বেশি প্রভাব আন্তর্জাতিকভাবে তৈরি করতে চান। হায়দরাবাদে যখন সিনেমাটির বিষয়ে প্রথম ঘোষণা দেন, তখনই খরচ হয়েছিল ১৫-২০ কোটি রুপি। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য মহেশ বাবু ও প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মতো তারকারা বিশাল অঙ্কের পারিশ্রমিক পেয়েছেন বলে জানা গেছে। ইভেন্টের টেলিকাস্ট করার জন্য ‘জিওহটস্টার’ ৬-৭ কোটি রুপি প্রদান করেছে বলে জানা যায়।

‘বারাণসী’ সিনেমার মুক্তির তারিখ
‘ট্রিপল আর’ সিনেমা বিশ্বব্যাপী সাফল্যের পর, রাজামৌলি সৃষ্টিশীল ও বাণিজ্যিক দিক থেকে ‘বারাণসী’ সিনেমাকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। সম্প্রতি সংগীত পরিচালক এমএম কীরাবাণি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ২০২৭ সালের গ্রীষ্মে সিনেমাটি মুক্তির পরিকল্পনা করা হয়েছে। 

তথ্যসূত্র: সিয়াসাত ডটকম, বলিউড হাঙ্গাম

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া ভারতীয় ৭ পরিচালক

ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিগুলোর একটি; যা তাদের সাংস্কৃতিক প্রভাব ও বিশাল বৈশ্বিক দর্শকশ্রেণির জন্য পরিচিত। ভারতীয় সিনেমা, বিশেষ করে বলিউড ও সাউথ ইন্ডিয়ার ব্লকবাস্টার সিনেমাগুলো কেবল ভারতেই নয়, চীন, নাইজেরিয়া, আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ আয় করে থাকে। 

সময়ের সঙ্গে বিদেশি বাজার আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠায় দেশটির চলচ্চিত্র নির্মাতারাও অভূতপূর্ব খ্যাতি ও আর্থিক সাফল্য অর্জন করছেন। দশকের পর দশক ধরে অভিনেতারাই লাইমলাইটের সিংহভাগ আলো কেড়ে নিতেন, আর পরিচালকরা আড়ালে থেকে খুবই কম স্বীকৃতি পেতেন। কিন্তু পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গেছে। ইদানীং পরিচালকরা অভিনেতাদের মতোই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন, অনেক সময় তাদের সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গির জন্য আরো বেশি পারিশ্রমিকও পাচ্ছেন। চলতি বছরে ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত ৭ পরিচালককে নিয়ে এই প্রতিবেদন—

আরো পড়ুন:

ভেঙে গেল মীরার তৃতীয় সংসার

আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না: এসএস রাজামৌলি

এসএস রাজামৌলি
‘বাহুবলি’ সিনেমা খ্যাত পরিচালক এসএস রাজামৌলি। কেবল নির্মাতাই নন, তার পরিচালিত ৯৯ ভাগ সিনেমার চিত্রনাট্যকারও তিনি। ক্যারিয়ারে ১৪টি সিনেমা নির্মাণ করেছেন তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির এই তারকা পরিচালক। এরই মধ্যে তার ‘ট্রিপল আর’ সিনেমা অস্কারও জিতে নিয়েছে। ভারতের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া পরিচালকের তালিকায় সবার শীর্ষে অবস্থান করছেন রাজামৌলি। তার পরবর্তী সিনেমা ‘বারাণসী’। এ সিনেমার জন্য রাজামৌলি পারিশ্রমিক নিয়েছেন ২০০ কোটি রুপি। 

সন্দীপ রেড্ডি ভাঙা
তেলেগু ও হিন্দি সিনেমার পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি ভাঙা। ক্যারিয়ারে মাত্র তিনটি সিনেমা নির্মাণ করেছেন ‘অর্জুন রেড্ডি’খ্যাত এই পরিচালক। এসব সিনেমা হলো—‘অজুর্ন রেড্ডি’, ‘কবীর সিং’ ও ‘অ্যানিমেল’। পরিচালনার পাশাপাশি এসব সিনেমার চিত্রনাট্যও রচনা করেছেন তিনি। ভারতের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া পরিচালকের তালিকায় তার অবস্থান দ্বিতীয়। তার পরবর্তী সিনেমা ‘স্প্রিরিট’, ‘অ্যানিমেল পার্ক’। ১০০-১৫০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নেন সন্দীপ রেড্ডি ভাঙা।

অ্যাটলি কুমার
ভারতের দক্ষিণী সিনেমার তারকা পরিচালক অ্যাটলি কুমার। ২০১৩ সালে তামিল ভাষার ‘রাজা রানি’ সিনেমার মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটে। নির্মাণ ক্যারিয়ারে সাতটি সিনেমা উপহার দিয়েছেন। তার মধ্যে অধিকাংশ সিনেমাই ব্যবসাসফল। তার নির্মিত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো—‘থেরি’, ‘মের্শাল’, ‘বিগিলি’, ‘জওয়ান’। ‘জওয়ান’ সিনেমার মাধ্যমে নির্মাতা হিসেবে বলিউড পা রাখেন অ্যাটলি। সিনেমাটিতে প্রথমবার শাহরুখ খানের সঙ্গে কাজ করেন এই নির্মাতা। ২০২৩ সালে মুক্তি পায় এটি। সিনেমাটি বক্স অফিসে ঝড় তুলেছিল। আল্লু অর্জুনকে নিয়ে ‘এএ২২×এ৬’ শিরোনামে সিনেমা নির্মাণ করছেন অ্যাটলি। এ সিনেমার জন্য ১০০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন এই পরিচালক।

প্রশান্ত নীল 
কন্নড় ও তেলেগু সিনেমার পরিচালক প্রশান্ত নীল। ভারতের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া নির্মাতার তালিকায় অ্যাটলির সঙ্গে যৌথভাবে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন তিনি। নির্মাণ ক্যারিয়ারে খুব বেশি সিনেমা পরিচালনা করেননি। তার নির্মিত পাঁচটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। এ তালিকায় রয়েছে—‘কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান’, কেজিএফ চ্যাপ্টার টু’, ‘সালার’ সিনেমা। অ্যাটলির মতো প্রশান্ত নীলও প্রতি সিনেমার জন্য শতকোটি রুপি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন। 

রাজকুমার হিরানি
ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক রাজকুমার হিরানি। নির্মাণ ক্যারিয়ারে বেশ কিছু ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন। এ তালিকায় রয়েছে—‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’, ‘থ্রি ইডিয়টস’, ‘পিকে’, ‘ডাঙ্কি’ এর মতো সিনেমা। বলিউডের ইতিহাসে পরিচালক হিসেবে রাজকুমার হিরানির নামটি অনবদ্য। দাদাসাহেব ফালকের বায়োপিকের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। প্রতিটি সিনেমার জন্য এখন ৮০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন এই পরিচালক। 

সুকুমার
তেলেগু সিনেমার আলোচিত পরিচালক সুকুমার। নির্মাণ ক্যারিয়ারে ১০টি সিনেমা উপহার দিয়েছেন। আল্লু অর্জুনকে নিয়ে ‘আরিয়া’ নির্মাণ করেই নজর কাড়েন। এটি ছিল তার অভিষেক সিনেমা। তারপর ‘আরিয়া টু’, ‘রাঙ্গাস্থালাম’ নির্মাণ করে প্রশংসা কুড়ান। তবে আল্লু অর্জুন অভিনীত ‘পুষ্পা’ ও ‘পুষ্পা টু’ সিনেমা উপহার দিয়ে হইচই ফেলে দেন এই পরিচালক। এখন ‘পুষ্পা থ্রি’ নির্মাণের পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন। প্রতিটি সিনেমার জন্য এ পরিচালক পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন ৭৫ কোটি রুপি। 

সঞ্জয়লীলা বানসালি
‘পদ্মশ্রী’ বিজয়ী পরিচালক সঞ্জয়লীলা বানসালি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক আলোচিত ও ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন। এ তালিকায় রয়েছে—‘হাম দিল দে চুকে সনম’, ‘দেবদাস’, ‘সাওয়ারিয়া’, ‘পদ্মাবত’ প্রভৃতি। ভারতের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত পরিচালকের তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছেন সঞ্জয়লীলা বানসালি। ‘লাভ অ্যান্ড ওয়ার’ সিনেমার কাজ নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিটি সিনেমার জন্য ৬৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন এই নির্মাতা।

তথ্যসূত্র: সিয়াসাত ডটকম

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া ভারতীয় ৭ পরিচালক