হোয়াটসঅ্যাপে রেজল্যুশন ঠিক রেখে ছবি বা ভিডিও পাঠানোর ৪ কৌশল
Published: 21st, November 2025 GMT
হোয়াটসঅ্যাপে ফোন গ্যালারি থেকে ছবি বা ভিডিও পাঠালে অ্যাপটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফাইল কমপ্রেস করে। এর ফলে আকারে বড় ছবি বা ভিডিওর মান কমে যায়। স্মার্টফোনে বর্তমানে আলট্রা হাই ডেফিনেশন মানের কনটেন্ট তৈরি হচ্ছে এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগ থেকে শুরু করে অফিস বা ব্যবসা—সব ক্ষেত্রেই হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার বাড়ছে। ফলে বড় ফাইল আসল মান বজায় রেখে পাঠানোর প্রয়োজনীয়তা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তবে চাইলেই হোয়াটসঅ্যাপে রেজল্যুশন ঠিক রেখে ছবি বা ভিডিও পাঠানো সম্ভব। কৌশলগুলো দেখে নেওয়া যাক।
১.
ডকুমেন্ট আকারে ফাইল পাঠানো
হোয়াটসঅ্যাপ ছবি বা ভিডিও অপশন দিয়ে পাঠানো ফাইল কমপ্রেস করে। তবে ডকুমেন্ট অপশন থেকে পাঠানো হলে ফাইলের মূল রেজল্যুশন অক্ষুণ্ন থাকে। এ জন্য প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপ খুলে নির্ধারিত চ্যাটে গিয়ে ক্লিপ আইকনে প্রেস করতে হবে। এরপর ডকুমেন্ট অপশন নির্বাচন করে ফোনের সংরক্ষিত ফাইলটি পাঠাতে হবে। দুই গিগাবাইট পর্যন্ত ছবি, ভিডিও, প্রেজেন্টেশন বা অন্যান্য বড় ফাইল পাঠাতে এই কৌশল সবচেয়ে কার্যকর।
২. গুগল ড্রাইভে আপলোড করে লিংক পাঠানো
ফাইলের আকার যদি দুই গিগাবাইটের চেয়ে বড় হয়, তাহলে ক্লাউড স্টোরেজ, বিশেষ করে গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ জন্য প্রথমে গুগল ড্রাইভে ফাইল আপলোড করতে হবে। আপলোড সম্পন্ন হলে ফাইলের মেনুতে গিয়ে শেয়ার বা অ্যাকসেস কন্ট্রোল অপশন থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী ‘এনি ওয়ান ক্যান ভিউ দ্য লিংক’ অপশনটি চালু করতে হবে। এরপর শেয়ারেবল লিংক কপি করে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে হবে।
৩. ফাইল ট্রান্সফার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার
উই ট্রান্সফারের মতো অনলাইন ফাইল ট্রান্সফার প্ল্যাটফর্ম বড় ফাইল পাঠানোর ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সুবিধাজনক। এ ধরনের প্ল্যাটফর্মে কোনো অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করার প্রয়োজন হয় না। ব্যবহারকারীদের শুধু নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট বা অ্যাপ খুলে নির্দিষ্ট ফাইল আপলোড করতে হয়। আপলোড শেষ হলে একটি ডাউনলোড লিংক পাওয়া যায়। সেই লিংক হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিলে গ্রহণকারী মূল রেজল্যুশনে ফাইলটি ডাউনলোড করতে পারেন।
৪. জিপ বা রার ফাইল তৈরি
একাধিক ফাইল একসঙ্গে পাঠাতে চাইলে জিপ বা রার ফরম্যাট অত্যন্ত কার্যকর। এ জন্য প্রথমে একটি জিপ বা রার অ্যাপ ইনস্টল করে প্রয়োজনীয় ফাইলগুলো একত্র করতে হবে। এরপর জিপ ফরম্যাটে সংরক্ষণ করে হোয়াটসঅ্যাপের ডকুমেন্ট অপশন থেকে ফাইলটি পাঠাতে হবে। যেহেতু হোয়াটসঅ্যাপ জিপ ফাইলকে ডকুমেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করে, তাই অ্যাপটি কোনো ধরনের কমপ্রেশন করে না। ফলে ছবির অ্যালবাম, বড় আকারের ফোল্ডার বা অনেক পেজের নথি পাঠাতে এটি দারুণ সুবিধাজনক উপায়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ য় টসঅ য প ব যবহ র আপল ড
এছাড়াও পড়ুন:
নিজেকে বোরিং পারসন মনে করেন মুশফিক
রংচটা ক্যাপ, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির গল্প, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা—মুশফিকুর রহিমের প্রায় মিনিট বিশেকের সংবাদ সম্মেলনে উঠে এল পুরো ২০ বছরের পথচলাই। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার উপলক্ষ ঘিরে গত কদিন ধরে তাঁর জন্য স্তুতিবাক্য ভেসে এসেছে সব জায়গা থেকেই।
সাবেক ও বর্তমান সতীর্থ, কোচ, ভক্ত, ক্রিকেট–সংশ্লিষ্ট সবার মুখেই মুশফিকের পরিশ্রম আর নিয়মানুবর্তিতার গল্প শোনা যাচ্ছে। শততম টেস্টের উপলক্ষের ম্যাচে মিরপুর টেস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে আরও রাঙিয়েছেন মুশফিক।
এরপর আজ সংবাদ সম্মেলনে এলে নিজের আয়নায় কেমন, তা জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে। মুশফিকের উত্তরের প্রথম বাক্যটা হাসির রোলই ফেলে দেয় সংবাদ সম্মেলনে, ‘সত্যি কথা যদি বলি, আমি একজন বোরিং পারসন।’
কেন নিজেকে ‘বোরিং পারসন’ মনে করেন, সেটির একটি ব্যাখ্যাও দেন মুশফিক, ‘প্রতিদিন অনুশীলনে আমি একই কাজ বারবার করে যাই। ২০ বছর ধরে করছি, নাকি পরে আরও ৪০ বছর বেঁচে থেকে তা করব, এটা কোনো ব্যাপার নয়। যদি নিজের ও দলের জন্য তা দরকারের হয়, আমি এটা করে যেতে পারব। পেশাদারির জায়গায় কোনো ছাড় নেই। আমি শূন্য করলাম নাকি ১০০, এটা আমার সাফল্য নয়; কারণ, এটা আমার হাতে নেই। চেষ্টা, প্রসেস, সততাটা আমার হাতে আছে। আমার জীবনে এটাই একমাত্র মোটো। এটা শুধু ক্রিকেটে না, আমার জীবনের সবকিছুতেই।’
২০০৫ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয় মুশফিকের। মিরপুরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে পূর্ণ হয়েছে ১০০ টেস্ট। এই পথচলায় ৩টি ডাবল সেঞ্চুরির সঙ্গে ১২টি সেঞ্চুরি করেছেন, এই সংস্করণে রান করেছেন সাড়ে ছয় হাজারের বেশি।
পুরো পরিক্রমায় নাকি প্রক্রিয়াটা একই ছিল মুশফিকের, ‘আমি টিম হাডলেও (মাঠে ঢোকার আগের রিচুয়াল) একটা কথা বলেছি, ১০০ টেস্ট খেলেছি কিন্তু আমার মনে হচ্ছে প্রথম ম্যাচ খেলছি। একই রকম রোমাঞ্চ ছিল। প্রতিটা টেস্ট ম্যাচই আমার কাছে বিশেষ, প্রতিটা ম্যাচ যখন খেলতে যাই, আমি সেই প্রথমবারের মতোই প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করি। নিজের সম্পর্কে এতটুকুই বলতে পারি।’
পুরো যাত্রায় অনেক ত্যাগও করতে হয়েছে মুশফিককে। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ক্রিকেটের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ কী ছিল তাঁর? এ প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য মুশফিক কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন স্ত্রী জান্নাতুল কিফায়াতের প্রতি।
মুশফিক বলেন, ‘সবচেয়ে বড় ত্যাগ আমার স্ত্রী করেছে। কারণ, আপনারাও হয়তো জানেন বা দেখেন যে আমি একটু অন্যদের তুলনায় বেশি অনুশীলন করি। কিন্তু এটা কখনো সম্ভব না, যদি আমার ঘরে এ রকম একটা পরিবেশ না থাকত।’
এরপর স্ত্রীর ত্যাগের উদাহরণও দেন মুশফিক, ‘আমরা জয়েন্ট ফ্যামিলি, দেখা যায় যে আমার স্ত্রীর ওপর যে প্রত্যাশা আছে এবং সবাইকে ওভাবে ম্যানেজ করা, কিছু হলেই ওকে ফোন দিয়ে এটা সমস্যা বা জরুরি টাকার দরকার হলে বলে। আমার দিকে না এনে ও সবকিছু করতে পারে।’
নিজের দুই সন্তানকে বড় করার ক্ষেত্রেও স্ত্রীর ভূমিকার কথা তুলে ধরেছেন মুশফিক, ‘আমার দুটো বাচ্চা আছে। রাতে স্বাভাবিক ছোট বাচ্চারা সারা রাত ঘুমায় না। কিন্তু আমার কখনো একটাও নির্ঘুম রাত কাটেনি। কারণ, সে পুরাটা সময় সেই রাত জেগে বাচ্চাদের মানুষ করেছে এবং আমাকে ওই টেনশন থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করেছে। যে জন্য আমি সব সময় তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।’
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে জান্নাতুল কিফায়াতকে বিয়ে করেন মুশফিক। তখন পর্যন্ত ৪০ ম্যাচের ৭৫ ইনিংসে ব্যাট করে ৩৩.৬০ গড়ে ২১৫২ রান করেন তিনি। তখনো সেঞ্চুরি ছিল মাত্র ৩টি। বিয়ের পর খেলা ৬০ টেস্টের ১০৮ ইনিংসে ৪১.৮৮ গড়ে ৪১০৫ রান করেছেন মুশফিক। এই সময়ে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১০ সেঞ্চুরি।
এমন বদলে দেওয়ার পেছনে স্ত্রীর ভূমিকার জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান মুশফিক, ‘আমার প্রায় ১১ বছরের মতো হয়েছে সংসারজীবন। কিন্তু আমি মনে করি যে আমার ক্রিকেটে যদি আপনারা ২০১৪–এর পর থেকে দেখেন, অনেক বড় প্রভাব পড়েছে। তাই তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’