দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে ঐক্যের বিকল্প নেই: তারেক রহমান
Published: 1st, February 2025 GMT
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচারের মাথাটা পালিয়ে গেছে। তবে স্বৈরাচারের কিছু কিছু অবশিষ্ট রয়ে গেছে বাংলাদেশে। যে কোনো সময় ভিন্ন আঙ্গিকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। যদি দেশকে রক্ষা করতে হয়, দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হয়, তাহলে ঐক্যের বিকল্প নেই। শনিবার বিকেলে আশুগঞ্জের আব্বাস উদ্দিন খান সোহাগপুর মডেল কলেজ মাঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষার অধিকার, স্বাস্থ্যের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বেকারত্ব দূর, কৃষি ও শিল্প খাতের উন্নয়ন ৩১ দফায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমরা কৃষককে ন্যায্যমূল্য দিতে চাই। তবে লাগামহীন দ্রব্যমূল্য যেন জনগণের মধ্য নাভিশ্বাসের কারণ না হয়।
তারেক রহমান বলেন, অচল কলকারখানা সচল করতে হবে। আমাদের অসংখ্য নদনদী খাল ভরাট হয়ে গেছে, এগুলো খনন করতে হবে। আগামী দিনে সংসদের মেয়াদ কত হবে, সংখ্যা কত হবে– গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এই বিতর্ক থাকতেই পারে। দিনশেষে আমরা এগুলো জনগণের ওপর ছেড়ে দেব। এই নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত বিতর্ক রাষ্ট্র মেরামতের কাজকে বিঘ্নিত করবে। তবে এর একমাত্র সহজ উপায় জাতীয় নির্বাচন। জনগণের ভোটের মাধ্যমে এর ফয়সালা হবে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকার ছিল না। জবাবদিহি ছিল না। অস্ত্রের মুখে সব অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আমরা ডামি নির্বাচন, ভোটারবিহীন নির্বাচন, ভোট ডাকাতির নির্বাচন দেখেছি। উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। বিএনপির কর্মী হিসেবে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে জাতিকে পথ দেখাতে হবে।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মো.
এ সম্মেলন ঘিরে জেলা বিএনপি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। গত ২৮ ডিসেম্বর ও ১৮ জানুয়ারি দুই দফা তারিখ নির্ধারণ করেও সম্মেলন করা যায়নি। পরে আজকের সম্মেলনে উভয় গ্রুপের উপস্থিতি দেখা গেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ত র ক রহম ন ব এনপ র জনগণ র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় স্থাপন–কার্যক্রম চালুর জন্য গেজেটসহ যাবতীয় কাজ শেষ করার আহ্বান
জরুরি ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের জন্য পৃথক সচিবালয় স্থাপন, সচিবালয়ের কার্যক্রম চালুর জন্য গেজেট প্রজ্ঞাপনসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
আজ সোমবার বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে খসড়া অনুমোদনের পর গতকাল রোববার সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ ২০২৫ জারি করেন রাষ্ট্রপতি। সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা হলে অধস্তন আদালত ও প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত সব প্রশাসনিক ও সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে এই সচিবালয়।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বিবৃতিতে বলেছে, জারি করা অধ্যাদেশের ধারা ১ (২)–এ উল্লেখ রয়েছে, ‘(২) সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় স্থাপন সম্পন্ন ও ইহার কার্যক্রম পূর্ণরূপে চালু হওয়া সাপেক্ষে সরকার, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সহিত পরামর্শক্রমে, ধারা ৭–এর বিধানাবলি সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা কার্যকর করিবে।’ অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার আইন হলেও তা বাস্তবায়ন হওয়ার আগপর্যন্ত বিচারকদের বদলি, পদায়ন, নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাবিধান–সংক্রান্ত বিষয় সরকারের অধীনই রয়ে গেছে। তাই অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে তার মেয়াদের মধ্যেই জরুরি ভিত্তিতে পৃথক সচিবালয় স্থাপন ও এর কার্যক্রম চালুর জন্য গেজেট প্রজ্ঞাপনসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বিবৃতিতে বলেছেন, তাঁরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দেশের জনগণের বহুল আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ ২০২৫ জারি করেছে। এই অধ্যাদেশ জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অন্যতম বন্দোবস্ত এবং ঐতিহাসিক দলিল হয়ে থাকবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ঐতিহাসিকভাবে আলোচিত হলেও তা বিভিন্ন কারণে এ দেশে বাস্তবায়ন করা হয়নি। ১৯৯৯ সালে বিখ্যাত মাসদার হোসেন মামলার রায়ে স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ২০০৭ সালে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ আলাদা হলেও কার্যত তা নির্বাহী বিভাগের অধীন থেকে যায়। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে আপামর জনগণ স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আশাবাদী হয়। অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথমবারের মতো তরুণ বিচারকদের সমন্বয়ে গঠিত ‘ইয়ং জাজেস ফর জুডিশিয়াল রিফর্ম’ তাদের ১২ দফা দাবি ঘোষণা করে। এর ১ নম্বর দফা ছিল সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় গঠন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশের প্রধান বিচারপতি সারা দেশের বিচারকদের সম্মুখে অভিভাষণের সময় স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন, যা বিচারকদের মনে অকৃত্রিম আশার সঞ্চার করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাসোসিয়েশন ২০২৪ সালের ২০ নভেম্বর অফিশিয়াল বিবৃতির মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানায়। পাশাপাশি প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি গত ১ বছরে স্বাধীন বিচার বিভাগ ও পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সব বিচারক এবং বিচার বিভাগ–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে মতবিনিময় সভা ও সেমিনারের আয়োজন করে।
‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মাইলফলক হয়ে থাকবে’
বিবৃতিতে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ৩০ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ ২০২৫ জারি করেছে, যা এ দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মাইলফলক হয়ে থাকবে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য অ্যাসোসিয়েশন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, সর্বোপরি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।