আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু হয়েছে বুধবার। তবে বাংলাদেশের জন্য টুর্নামেন্ট শুরু হচ্ছে আজ, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুরের পর মুখোমুখি হবে দুই দল। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের বিপক্ষে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে ভারতের আধিপত্য স্পষ্ট। ওয়ানডে ফরম্যাটে দুই দলের ৪১ বার মুখোমুখি হওয়ার মধ্যে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে মাত্র ৮ ম্যাচে।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ, তবে দুইবারই আগে ব্যাট করে হেরেছে। ২০১৮ সালের এশিয়া কাপের ফাইনালে ২২২ রানে অলআউট হয়েছিল টাইগাররা, যেখানে লিটন দাস করেছিলেন ১২১ রান। সেই ম্যাচে ভারত জয় পায় ৩ উইকেটে। এছাড়া ২০১৮ এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ১৭৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ, ভারত ম্যাচটি জিতে নেয় ৮২ বল হাতে রেখেই। যদিও একই আসরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৩৭ রানের বড় জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে মুশফিকুর রহিম করেছিলেন ১৪৪ রান, যা এই স্টেডিয়ামে কোনো বাংলাদেশি ব্যাটারের সর্বোচ্চ ইনিংস।
এই মাঠে মুশফিক সর্বমোট ১৭০ রান করেছেন ৩ ম্যাচে। লিটন দাস আছেন দ্বিতীয় স্থানে, ৩ ম্যাচে তার রান ১২৮। মেহেদী হাসান মিরাজ ৩ ম্যাচে করেছেন ৮৯ রান। বোলিংয়ে মুস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন ও মাশরাফী বিন মর্তুজা এই মাঠে ৪টি করে উইকেট নিয়েছেন। তবে এবারের দলে আছেন কেবল মুস্তাফিজ ও মিরাজ।
অন্যদিকে ভারতের ব্যাটারদের মধ্যে বাংলাদেশের বিপক্ষে সবচেয়ে সফল বিরাট কোহলি। ১৬ ম্যাচে তিনি করেছেন ৯১০ রান, যেখানে আছে ৫টি সেঞ্চুরি ও ৩টি ফিফটি। দ্বিতীয় স্থানে আছেন রোহিত শর্মা, যিনি ১৭ ম্যাচে ৭৮৬ রান করেছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে কেএল রাহুল ৬ ম্যাচে ২২৫ রান করেছেন, শুভমান গিল ২ ম্যাচে ১৭৪ রান করেছেন।
ভারতের বোলারদের মধ্যে রবীন্দ্র জাদেজা বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৩ ম্যাচে নিয়েছেন ১৪ উইকেট। জাসপ্রিত বুমরাহ ৫ ম্যাচে ১২ উইকেট, মোহাম্মদ শামি ৪ ম্যাচে ৯ উইকেট এবং ওয়াশিংটন সুন্দর ৩ ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়েছেন।
ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক সাকিব আল হাসান (৭৫১ রান), যদিও তিনি এবারের স্কোয়াডে নেই। দ্বিতীয় স্থানে আছেন মুশফিকুর রহিম (৭০৩ রান) ও তৃতীয় স্থানে তামিম ইকবাল (৫৯৬ রান), তিনিও নেই দলে। বোলিংয়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি সাকিব (২৯ উইকেট)। দ্বিতীয় স্থানে আছেন মুস্তাফিজ (১২ ম্যাচে ২৫ উইকেট) এবং তাসকিন আহমেদ ৭ ম্যাচে নিয়েছেন ১৪ উইকেট।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের রেকর্ড ও দুই দলের পরিসংখ্যান বলছে, আজকের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ভালো করতে হলে বাংলাদেশকে ব্যাটিং ও বোলিং উভয় বিভাগেই সেরা পারফরম্যান্স করতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ন কর ছ ন উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আমাদের সন্তানেরা জীবন বাজি রেখে রাস্তায় নেমেছিল, আমরাও তাদের সঙ্গে ছিলাম। তারা ফ্যাসিবাদকে বিদায় করেছে। এক বছর আগেও মানুষ চিন্তা করতে পারেনি যে তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু আজ সারা দেশের জনগণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই সর্বময় ক্ষমতার মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন এবং ইচ্ছেমতো কেড়েও নেন। তা আমরা জুলাই বিপ্লবে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছি।’
আজ সোমবার সন্ধ্যায় খুলনার খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘সহযোগী সদস্য সংগ্রহ অভিযান-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথাগুলো বলেন।
২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচন নিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘২০১৪ সালে তারা ষড়যন্ত্র করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছিল। কেউ নির্বাচনে যায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল ইতিহাসের আরেক কালো অধ্যায়। যেখানে রাতেই ভোট হয়ে গিয়েছিল। আর এসব নির্বাচনে হাসিনাকে সঙ্গ দিয়েছে জাতীয় পার্টি। আমরা একটা কালো যুগ পার করেছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের সব অধিকার হরণ করেছিল। মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। মানুষকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেয়নি। তারা মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেয়নি।’ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘যারা হাত-পা হারিয়েছে, যারা নির্যাতিত হয়েছে, তারা কখনোই এসব খুনিকে ক্ষমা করবে না। খুনিদের বিচার করতে হবে এবং সব স্তরে সংস্কার করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে, যেখানে কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাব থাকবে না। নির্বাচন জনগণের অধিকার। জনগণই তাঁদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। যাঁরা নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির ব্যবহার করতে চাইবেন, জনগণ তাঁদের প্রতিহত করবেন।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতার দম্ভে মানুষের ওপর লাগামহীন জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবিলা না করে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জেল-জুলম, গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। তারা মনে করেছিল যে তাদের এমন অপশাসন ও দুঃশাসন কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হবে। কিন্তু আল্লাহ জালিমদের ছাড় দিলেও ছেড়ে দেন না।’
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে, বেকারত্ব ও চাঁদাবাজি থাকবে না। যেখানে মা-বোনেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে না। আমরা সাম্যের ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও বায়তুল মাল সেক্রেটারি হাফেজ আমিনুল ইসলাম। গণসংযোগের সময় স্থানীয় মার্কেটের ব্যবসায়ী, পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দা, গাড়িচালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দাওয়াত দেওয়া হয়।