গিলের এক ভুল ‘টি-শার্ট’ ২৫০ কোটি রুপি ক্ষতির মুখে বিসিসিআই
Published: 10th, July 2025 GMT
ইংল্যান্ড সফরে শুভমান গিল যেন রানের ফুলঝুরি ছুটিয়েছেন। টেস্ট ক্রিকেটের নতুন এই ভারতীয় অধিনায়ক হেডিংলি আর এজবাস্টনে খেলেছেন স্বপ্নময় ইনিংস। দুই ম্যাচে করেছেন ৫৮৫ রান। গড় ১৪৬.২৫। যার মধ্যে রয়েছে দুটি সেঞ্চুরি ও একটি ডাবল সেঞ্চুরি। ব্যাটে যেমন রাজত্ব, নেতৃত্বেও প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।
কিন্তু এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের মাঝেই ঘটেছে এক বিপত্তি। যার জের ধরে বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বিসিসিআই।
দ্বিতীয় টেস্টে, ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হওয়ার আগে ড্রেসিংরুম থেকে মাঠে নামেন গিল। কিন্তু তার পরনে ছিল নাইকির একটি কালো স্ট্রেচ টি-শার্ট। আর সেখানেই সমস্যা। কারণ, ভারতীয় দলের অফিসিয়াল কিট স্পন্সর অ্যাডিডাস।
আরো পড়ুন:
দ.
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টি-টোয়েন্টি পরিসংখ্যান
২০২৩ সালের মে মাসে অ্যাডিডাস এবং বিসিসিআইয়ের মধ্যে হয় ২৫০ কোটি রুপির চুক্তি। যার মেয়াদ ২০২৮ সাল পর্যন্ত। এই চুক্তি অনুযায়ী, খেলোয়াড়রা ম্যাচ চলাকালীন কিংবা মাঠে সংলগ্ন সময়েও কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যান্ডের পোশাক পরতে পারেন না।
শুভমান গিলের ব্যক্তিগত চুক্তি আছে নাইকির সঙ্গে। তিনি সেই ব্র্যান্ডের শুভেচ্ছাদূত। তবে জাতীয় দলের জার্সির বাইরে প্রকাশ্যে সেই পরিচয় তুলে ধরা চুক্তিভঙ্গের সামিল। বিশেষ করে মাঠে নামার মতো সময়ে।
বোর্ডের ধারণা, হয়তো তাড়াহুড়ার কারণেই নিয়মটি ভুলে গিয়েছিলেন গিল। তবে বিষয়টি হালকাভাবে নিচ্ছে না বিসিসিআই। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হতে পারে। এমনকি স্পন্সর প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস চাইলে চুক্তি বাতিল বা বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতীয় বাজারে নিজেদের দাপট বজায় রাখতে অ্যাডিডাস হয়তো তাৎক্ষণিক কড়া পদক্ষেপ নেবে না। তবে গিল কিংবা বিসিসিআই দু’পক্ষকেই স্পষ্ট বার্তা দিতে পারে তারা।
এই একটি টি-শার্ট বদলে দিতে পারে ২৫০ কোটি রুপির চিত্র। বিসিসিআই এর আগে কখনও এমন পরিস্থিতিতে পড়েনি, যেখানে একজন ক্রিকেটারের পোশাক–সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বোর্ডের আর্থিক নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলেছে।
যদিও এখনই মারাত্মক কিছু ঘটেনি। তবে স্পন্সরশিপের মতো সূক্ষ্ম ও সংবেদনশীল বিষয়ে এ ধরনের ভুল যে ভবিষ্যতে বড় মূল্য চোকাতে পারে—তা নিঃসন্দেহে বিসিসিআই ও ক্রিকেটারদের জন্য একটি সতর্কবার্তা।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’