ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে বিলাওয়ালের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল ভারত
Published: 5th, May 2025 GMT
চলমান উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট ভারতে বন্ধ (ব্লক) করে দেওয়া হয়েছে। এর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও দেশটির সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা আইএসপিআরের অ্যাকাউন্টও ভারতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
এমন সময় বিলাওয়াল ভুট্টোর অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হলো, যার কয়েক দিন আগে তিনি ভারতের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘মোদি জেনে রাখুন, সিন্ধু নদ আমাদের। এই নদে হয় আমাদের পানি প্রবাহিত হবে, না হয় আপনাদের রক্ত।’
পিপিপির সিনেটর শেরি রেহমান বলেন, বিলাওয়ালের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার মধ্য দিয়ে পেহেলগাম হামলার সত্য উন্মোচন হয়ে যাওয়া নিয়ে ভারতের ভয়ের বহিঃপ্রকাশ ঘটল। তিনি দাবি করেন, ভারতের এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে, তারা আন্তর্জাতিক মঞ্চে সত্য প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়ে আছে।
পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের প্রাণঘাতী হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছে নয়াদিল্লি। তবে এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে পাকিস্তান। ওই হামলার পর থেকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রতিবেশীর মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে।
কিছুদিন আগে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি ভারতকে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে তাঁর দল যেমন একটি বিতর্কিত খাল প্রকল্পে হতে দেয়নি, ঠিক একইভাবে পাকিস্তানের জনগণ সিন্ধু নদের ওপর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন ও এর সমুচিত জবাব দেবেন।
সে সময় বিলাওয়াল বলেন, ভারতের ‘অবৈধভাবে’ দখল করা জম্মু ও কাশ্মীরে একটি সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে। নয়াদিল্লি এ জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান জোরালোভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়। পাকিস্তানই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নরসিংদীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক
নরসিংদীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়েছে, দেখা দিচ্ছে শয্যা সংকট। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তার মশা নিধনে ড্রেনগুলো দ্রুত পরিষ্কারের জন্য পৌরসভার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসেই প্রায় ১০০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। অক্টোবর মাসের প্রথম তিনদিনে ভর্তি হয়েছেন ১৭ জন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রতিদিনই জ্বর, শরীর ব্যথা ও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে আসছেন রোগীরা। যাদের অবস্থা গুরুতর, তাদেরকেই ভর্তি করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
বাঁশবাগানে পাওয়া সেই নবজাতক মারা গেছে
রোগীর স্বজন নাসরিন আক্তার বলেন, “আমার ভাই পাঁচদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। প্রথমে বুঝতেই পারিনি তার ডেঙ্গু হয়েছে। এখন প্লাটিলেট কমে গেছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, অবস্থা গুরুতর। খুব দুশ্চিন্তায় আছি। হাসপাতালের চিকিৎসকরা যথাসাধ্য করছেন, শয্যার সংকট আর ওষুধের জোগান সবসময় মেলে না।”
আরেক রোগীর বাবা মো. সাহেব আলী বলেন, “আমার ছোট ছেলের বয়স ১০ বছর। জ্বর নিয়ে ভর্তি করাতে হয়েছিল তাকে। ওর ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। হাসপাতালে জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। আমরা গরিব মানুষ, ছেলেকে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সমর্থ্য নেই।”
হাসপাতালের সামনে অপেক্ষমাণ এক রোগীর চাচা মাহবুব হোসেন বলেন, “হাসপাতালে জায়গা হচ্ছে না। ডেঙ্গু যে এত ভয়াবহ হবে বুঝতে পারিনি। প্রশাসন যদি আগে ব্যবস্থা নিত, তাহলে এমন অবস্থা হতো না।”
স্থানীয় কলেজছাত্র জুবায়ের হোসেন বলেন, “জুলাইয়ের শেষ দিক থেকেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে, অথচ পৌরসভা থেকে মশা নিধনের কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা হয়নি অনেকদিন। আমরা খুব চিন্তায় আছি। শুধু ওষুধ আর হাসপাতাল দিয়ে এই রোগ ঠেকানো যাবে না। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, “বিভিন্ন কারণে এডিস মশার প্রজনন বাড়ছে। প্রতিদিন প্রচুর রোগী আসছেন জ্বর নিয়ে। অনেকেরই অবস্থা গুরুতর। সীমিত সামর্থ্যে আমরা চেষ্টা করছি সাধ্যমতো সেবা দিতে। রোগীর চাপ ক্রমেই বাড়ছে।”
ঢাকা/হৃদয়/মাসুদ