বিজিবির অভিযানে এপ্রিলে শত কোটি টাকার পণ্যসামগ্রী জব্দ
Published: 9th, May 2025 GMT
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অভিযানে গত এপ্রিল মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে মোট ১০১ কোটি ৩৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরনের চোরাচালান ও পণ্যসামগ্রী জব্দ করা হয়েছে।
শুক্রবার (৯ মে) এ তথ্য জানিয়েছে বিজিবি।
বিজিবি জানায়, জব্দ করা চোরাচালান পণ্যের মধ্যে রয়েছে ১ কেজি ৪৭৮ গ্রাম স্বর্ণ, ২৫ কেজি ১২৫ গ্রাম রুপা, ৪ হাজার ৭৫ পিস শাড়ি, ২ হাজার ৩৪২টি থ্রিপিস-শার্টপিস-চাদর-কম্বল, ৩ হাজার ৯৫১টি তৈরি পোশাক, ১ হাজার ৯৯ মিটার থান কাপড়, ৫ লাখ ৩৭ হাজার ১৩১টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ৯০টি ডায়মন্ডের নাকফুল, ২ হাজার ৩৫৫টি ইমিটেশন সামগ্রী, ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ৭৯৯টি আতশবাজি, ৪ হাজার ৩৮৫ ঘনফুট কাঠ, ১ হাজার ৫৪৬ কেজি চা পাতা, ৩৩ হাজার ৬৭ কেজি সুপারি, ১ লাখ ৫৬ হাজার ২৫৭ কেজি চিনি, ৪৮ হাজার ১৫ কেজি সার, ২৩ হাজার ১৫০ কেজি কয়লা, ৫২৫ কেজি সুতা-কারেন্ট জাল, ৫০০টি মোবাইল, ২ হাজার ৩১০টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৪০ হাজার ২৫টি চশমা, ১ হাজার ৬৪৯ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল, ৩ হাজার ২১৮ কেজি ভোজ্যতেল, ১ হাজার ২২ কেজি পিঁয়াজ, ৩ হাজার ২৭২ কেজি রসুন, ১ হাজার ১৫৪ কেজি জিরা, ৩৯ হাজার ৮৭৪ কেজি ফুচকা, ২ হাজার ৩১২ কেজি শুঁটকি মাছ, ৪ লাখ ৮১ হাজার ৫০৯ পিস চিংড়ি মাছের পোনা, ২ হাজার ১৪১ কেজি কফি, ৬ লাখ ৫ হাজার ৪৮ পিস চকোলেট, ৮৩২টি গরু-মহিষ, ৩টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ১৮টি ট্রাক-কাভার্ডভ্যান, ৫টি পিকআপ, ৬টি প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস, ১টি ট্রলি, ৩৬টি নৌকা, ২৯টি সিএনজি-ইজিবাইক, ৫০টি মোটরসাইকেল এবং ১৯টি বাইসাইকেল।
আরো পড়ুন:
ঝিনাইদহ সীমান্তে নারী-শিশুসহ আটক ৪৪
এবার পাটগ্রাম সীমান্তে দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ১টি জি-৩ রাইফেল, ১টি এয়ার রাইফেল, ১টি দেশীয় পিস্তল, ১টি গাদা বন্দুক, ৯৯টি ককটেল এবং ৪০টি পেট্রোল বোমা।
এছাড়া গত মাসে বিজিবি বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে। জব্দ করা মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৬ লাখ ৬৬ হাজার ২৫৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৩ কেজি ৮৩৪ গ্রাম হেরোইন, ১ কেজি ৬১৫ গ্রাম কোকেন, ৮ হাজার ১৫৩ বোতল ফেনসিডিল, ১১ হাজার ৩৯১ বোতল বিদেশি মদ, ৮৭ লিটার বাংলা মদ, ২ হাজার ৫০ বোতল ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৩০৩ কেজি গাঁজা, ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৬০ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ৩১ হাজার ৩০৭টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট-ইনজেকশন, ৩ হাজার ৬২৯ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৬ লাখ ৩৫ হাজার ১৯৯ পিস বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ও ট্যাবলেট, ৮ বোতল এলএসডি এবং ৮৮ হাজার ৭৭৬টি এ্যানেগ্রা-সেনেগ্রা ট্যাবলেট।
সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪৩ জন চোরাচালানি এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৪০০ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও ১৩ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৪৬৪ জন মিয়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/এমআর/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এ রায় সামনের দিনের জন্য উদাহরণ: সালাহউদ্দিন আহমদ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলায় যে রায় হয়েছে, তাতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, এই বিচার, এই রায় সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে, আসামিদের অপরাধের তুলনায় এই সাজা যথেষ্ট কম। কিন্তু, আইনে এর ওপরে কোনো সাজা নেই।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বেলা ৩টার দিকে সাংবাদিকদের কাছে এ প্রতিক্রিয়া জানান সালাহউদ্দিন আহমদ। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেক আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করেন। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই রায়ের মধ্য দিয়ে কয়েকটি জিনিস প্রমাণিত হয়েছে- ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার যত শক্তিশালী হোক, যত দীর্ঘদিনই রাষ্ট্রক্ষমতা অবৈধভাবে পরিচালিত করুক, ক্ষমতা ভোগ করুক, একদিন না একদিন আদালতের কাঠগড়ায় তাঁদের দাঁড়াতেই হবে।
আরও যেসব মামলা আছে, সেই মামলাগুলোতেও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই বিচার অপরাধের তুলনায় যথেষ্ট নয়। কিন্তু, এটা শুধু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা নয়, সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ। ভবিষ্যতে যাতে এই রাষ্ট্রে কেউ আর ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম না করতে পারে, ফ্যাসিস্ট না হয়ে উঠতে পারে, একনায়কতন্ত্র যাতে প্রতিষ্ঠা না হয়, তার একটি উদাহরণ। এটা ভবিষ্যতের জন্য একটা শিক্ষা। শুধু অতীতের জন্য বিচার নয়, এটা মনে রাখতে হবে।
ঢাকা/রফিক