ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনার প্রভাব পড়েছে ক্রীড়াঙ্গনেও। ভারত আইপিএল স্থগিত করেছে, পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এর মধ্যেই পাকিস্তানে অবস্থান করা বিদেশি ক্রিকেটারদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। সেই তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেন।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ আজ এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, রিশাদ ও নাহিদকে আজ রাতেই বিশেষ বিমানে পাকিস্তান থেকে দুবাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

ফারুক আহমেদ বলেন, 'ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আমাদের জন্যও চিন্তার বিষয়। দুই দেশের এই সামরিক দ্বন্দ্ব ক্রিকেটেও প্রভাব ফেলছে। আমাদের জাতীয় দলের দুজন ক্রিকেটার বর্তমানে পিএসএল খেলতে পাকিস্তানে অবস্থান করছেন। আমরা খবর পাওয়ার পর থেকেই তাদের নিরাপত্তা ও ফেরানোর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।'

তিনি জানান, বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের সমন্বয়ক শাহরিয়ার নাফীস শুরু থেকেই সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। পিএসএলের সিইওর সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন ফারুক নিজেও, পাশাপাশি বার্তা পাঠিয়েছেন পিসিবি সভাপতিকে।

তিনি বলেন, 'বিদেশি ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিয়ে পিসিবি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে কাজ করছে। সবার জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে চেষ্টা চলছে। গতকাল এক জরুরি সভা হয়েছে, আজকের মধ্যেই সকল ক্রিকেটারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশা করছি। বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিলিটারি অ্যাটাশের সঙ্গেও আমরা সমন্বয় করেছি।'

শুধু ক্রিকেটার নয়, পাকিস্তানে অবস্থানরত বাংলাদেশের দুই ক্রীড়া সাংবাদিকের বিষয়েও বিসিবি সতর্ক রয়েছে বলে জানান ফারুক আহমেদ। 'আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের অনুরোধ করেছি যেন ক্রিকেটারদের সঙ্গে একত্রে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়। যদিও তারা সাংবাদিকতার দায়িত্বে গিয়েছেন, তবু তাদের নিরাপত্তাও আমাদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।'

শেষে বিসিবি সভাপতি আশাবাদ প্রকাশ করেন, 'আমি বিশ্বাস করি, খুব দ্রুত একটি কার্যকর সমাধান আসবে। পিসিবি আজ বিকেলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে। আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছি এবং সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি যাতে আমাদের ক্রিকেটার ও সংশ্লিষ্টরা নিরাপদে দেশে ফিরতে পারেন।'

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প এসএল ন র পদ আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান

‘প্রত্যেকটা জেলায় শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য যেমন হাসপাতাল আছে তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সিনেমা হল থাকা দরকার। সুস্থ বিনোদন থাকলে মানুষ নেশা, হানাহানি ও মব জাস্টিস থেকে দূরে থাকবে। আমাদের যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থান দরকার তেমনি বিনোদনের জন্য সিনেমা হল দরকার।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানী বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘উৎসব’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী শেষে কথাগুলো বলছিলেন নন্দিত অভিনেতা জাহিদ হাসান।

‘উৎসব’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান। চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। শুটিংয়ের বহুদিন পেরিয়ে গেলেও জাহাঙ্গীর চরিত্রের মধ্যে থেকে এখনো বের হতে পারেননি বলেন জানালেন এই অভিনেতা।

জাহিদ হাসান বলেন, ‘এখনো আমি এই চরিত্রটার মধ্যে ডুবে আছি। সিনেমার আমার চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। আসলে আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের মাঝে জাহাঙ্গীর লুকিয়ে আছে। কারণ, আমাদের প্রত্যেকটি মানুষের মাঝে হিরোইজম আছে, ভিলেন আছে। আছে উপলব্ধি করার ক্ষমতা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের সেই রিয়েলাইজেশনের সময়টা আছে। কখন মৃত্যু হয় আমরা জানি না। এই রিয়েলাইজ যদি আমাদের মধ্যে থাকে তাহলে আজ আমরা যারা জাহাঙ্গীরের মত আছি, কাল আমরা ভালো হয়ে যাবো।’

ঈদের সিনেমা মানেই এখন যেন অ্যাকশন অথবা থ্রিলার। গত কয়েক বছরে ঈদে বাজিমাত করা সিনেমাগুলোর দিকে তাকালে এমনটাই মনে হতে পারে। সেসব থেকে বেরিয়ে হাস্যরস পরিবার এবং সম্পর্কের গল্পে এবার ঈদে বাজিমাত করেছে ‘উৎসব’। এই সফলতার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করলেন প্রত্যেক শিল্পীর সততাকে।

জাহিদ হাসানের কথায়, ‘প্রডাক্টশন বয় থেকে শুরু করে এই সিনেমার সঙ্গে আমরা যারা যুক্ত ছিলাম তারা প্রত্যেকেই অনেক সৎ ছিলাম। অভিনয় নিয়ে কোনো অসৎ অবস্থার মধ্যে আমরা যাইনি। এটাই মনে হয় আমাদের সফলতার বড় বিষয়। এই সিনেমার প্রত্যেকটি দৃশ্যের সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে।’

করোনা মহামারির পর অভিনয়ে খুব একটা দেখা যায়নি জাহিদ হাসানকে। নির্মাতাদের সঙ্গে অভিনয় নিয়ে খুব একটা কথা হয়নি তার। কারোনার পর ‘উৎসব’-ই তার প্রথম সিনেমা।

তার ভাষ্য, ‘করোনার পর খুব একটা অভিনয় করা হয়নি। আমাকে অভিনয়ে নেওয়া বা না নেওয়াটা নির্মাতাদের দায়িত্ব। বলতে গেলে গত কয়েকবছর সেভাবে সুযোগও আসেনি। ‘উৎসব’ সিনেমার মধ্যে সেই সুযোগটা এলো। অভিনয় করলাম। দর্শক প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝেছি অনন্ত ফেল করিনি।’

সিনেমার হলের সংখ্যা কম হওয়ায় দেশের সিনেমা সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছচ্ছে না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন জাহিদ হাসান। সেইসঙ্গে জেলা প্রশাসকদের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।

জাহিদ হাসান বলেন, ‘আমার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। আমার বোন ফোন করে বললেন এখানে তো সিনেমা হলে নেই। তাই আমরা সিনেমা দেখতে পারছি না। এই কথা শুনে কষ্ট পেয়েছি। এটা সত্য সিরাজগঞ্জের মত দেশের অনেক বড় শহরে সিনেমা হল নেই। জেলা প্রশাসকসহ দায়িত্বশীল পর্যায়ে যারা আছে তাদের সবাইকে অনুরোধ করবো তারা যেন প্রত্যেকটি জেলায় সিনেমা হলের ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়ে তার বাস্তবায়ন করেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ