র্যাব পরিচয়ে বাস থেকে নামিয়ে দুই প্রবাসীকে অপহরণ, ৩৬ লাখ টাকা লুটের অভিযোগ
Published: 16th, May 2025 GMT
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় র্যাব পরিচয়ে একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে দুই প্রবাসীকে অপহরণ করে ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার ফেরিঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীরা হলেন শ্রীনগর উপজেলার চারিপাড়া গ্রামের জসিম শেখ ও কবুতর খোলা গ্রামের সুজন খান। সম্প্রতি তাঁরা সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছিলেন। গতকাল রাজধানী ঢাকা থেকে স্বর্ণ বিক্রির টাকা নিয়ে নিজেদের এলাকায় ফিরছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
জসিম ও সুজন জানান, সৌদি থেকে বৈধভাবে আনা স্বর্ণ বিক্রি করতে গতকাল তাঁরা ঢাকায় যান। সন্ধ্যায় বিক্রির টাকা নিয়ে নগর পরিবহনের একটি বাসে তাঁরা সেখান থেকে বালাসুর ফিরছিলেন। সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে শ্রীনগরের ফেরিঘাটে পৌঁছালে একদল লোক বাসটি থামায়। তারা বাসে উঠে নিজেদের র্যাব পরিচয় দিয়ে জসিম ও সুজনকে জোর করে নামিয়ে নিয়ে যায়। পরে তারা জসিমের সঙ্গে থাকা ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং সুজনের কাছ থেকে ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকার সঙ্গে মুঠোফোন লুট করে নেয়। একপর্যায়ে তাঁদের রাজধানীর আবদুল্লাহপুর এলাকায় ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
এ ঘটনায় র্যাবের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন র্যাব-১০–এর ভাগ্যকুল ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আনোয়ার হোসেন। তিনি জানান, অপহরণকারীরা র্যাবের সদস্য নয়। তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। চক্রটিকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য র্যাব ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে।
এদিকে অপহরণ ও লুটের অভিযোগের তদন্ত শুরুর কথা জানিয়েছেন শ্রীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান। আজ বেলা একটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় শ্রীনগর থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনার সঙ্গে যে বা যারা জড়িত, তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ র নগর
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ার শেরপুরে মামলা তুলে না নেওয়ায় কলেজছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ
বগুড়ার শেরপুরে আদালতে বিচারাধীন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলা তুলে নিতে এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে গতকাল সোমবার রাতে একটি মামলা করেছেন।
ভুক্তভোগী একটি কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে। তাদের বাড়ি উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নে। মামলায় মাহমুদুল হাসান (২১) নামের এক তরুণকে প্রধান আসামি করে মোট আটজনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত সবার বাড়ি উপজেলার মহিপুর কলোনি গ্রামে। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি মাহমুদুল হাসান দীর্ঘদিন ধরে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করছিলেন। এ ঘটনায় ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। পরে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্রও দেয়। পরে জামিনে মুক্ত হয়ে আসামিরা ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিতে থাকে। গত শনিবার সকালে ওই ছাত্রী কোচিং শেষে বাড়ি ফেরার পথে গাড়িদহ ইউনিয়নের একটি সেতুর কাছে পৌঁছালে তাকে মামলার প্রধান আসামিসহ কয়েকজন একটি অটোরিকশায় তুলে নেয়। এরপর ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে একটি নির্জন বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তার মুখ বেঁধে নির্যাতন করে মুঠোফোন, স্কুলব্যাগ, শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার ও কিছু টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর তাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরানো হয় এবং সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে ওই মাইক্রোবাস শেরপুরের মহাসড়কের মহিপুর এলাকায় একটি হোটেলের সামনে থামালে ওই ছাত্রী চিৎকার শুরু করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে অপহরণে জড়িত ব্যক্তিরা দ্রুত পালিয়ে যান।
ওই ছাত্রীর স্বজনেরা জানান, অপহরণের খবর পেয়ে মহিপুরের ওই হোটেলের সামনে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানে চিকিৎসক তাঁর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেন।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সোমবার রাতে অপহরণের ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।