মৃত্যুর ৩ মাস পর পরিবার পেল প্রবাসীর মরদেহ
Published: 17th, May 2025 GMT
মৃত্যুর তিন মাস পর সৌদি আরব প্রবাসী নুর আলম খানের (৩৬) মরদেহ পেয়েছেন স্বজনরা। শুক্রবার (১৬ মে) রাতে তার মরদেহ ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায়।
শনিবার (১৭ মে) সকালে স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
নুর আলম গোবিন্দপুর গ্রামের উমর আলী খানের ছেলে। এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক তিনি। তার স্ত্রী বর্তমাসে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
আরো পড়ুন:
রেললাইনের ওপর পড়ে ছিল খণ্ড-বিখণ্ড মরদেহ
গলায় ইট-বালুর বস্তা বাঁধা মরদেহ ভাসছিল নদীতে
এলাকাবাসী জানান, ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য ২০২৪ সালের শেষের দিকে সৌদি আরবে যান নুর আলম খান। দুই মাসের মাথায় গত ২০ জানুয়ারি দেশটির রিয়াদে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন তিনি। পরে তাকে রিয়াদ ক্যান্টনমেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জীবন বাঁচাতে তার দুটি পা কেটে ফেলেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি মারা যান নুর আলম। তার মৃত্যুর খবরে বাড়িতে নেমে আসে শোকের ছায়া।
নিহতের ভায়রা-ভাই মাহফুজ খান বলেন, “ধার-দেনা করে বিদেশে গেছিল আমার ভায়রা-ভাই নুর আলম খান। পৈতৃক ভিটা বাদে তার কোনো জমি নেই। তার মৃত্যুতে পুরো পরিবারে অন্ধকার নেমে এসেছে।”
তিনি বলেন, “মারা যাওয়ার তিন মাস পর নুর আলমের মরদেহ দেশে আসল। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।”
ঢাকা/তামিম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ প রব স র মরদ হ ন র আলম
এছাড়াও পড়ুন:
এবার কবরস্থানের সভাপতি পদ নিয়ে নির্বাচনি লড়াই!
ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি বা জনপ্রতিনিধি নির্বাচন সচরাচর দেখা যায়। এছাড়া বিভিন্ন সংগঠনে নেতৃত্ব নির্বাচনের সাথেও সবাই পরিচিত। কিন্তু শুনলে অবাক হবেন কবরস্থান পরিচালনা কমিটি নিয়ে নির্বাচন এবং ভোট গ্রহণ হবে।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য উত্তরের জেলা পাবনার চাটমোহরে এমনই এক ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে স্থানীয় একটি কবরস্থান কমিটির সভাপতি পদ নিয়ে।
ইতোমধ্যে এই নির্বাচনকে সামনে রেখে গঠন করা হয়েছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষণা করা হয়েছে তফশিল। শুধু কী তাই? দুইজন প্রার্থী মনোনয়ন কেনার পর তা দাখিলও করেছেন। সেই সাথে দেওয়া হয়েছে প্রতীক বরাদ্দ। দুই প্রার্থী নিজেদের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য চষে বেড়াচ্ছেন ভোটার এলাকা।
বিষয়টি পুরো উপজেলা জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে বেশ উৎসাহ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নে বালুদিয়ার, মহরমখালী ও জগতলা (আংশিক) তিন গ্রামের সমাজ নিয়ে গঠিত ‘জান্নাতুল বাকি’ কবরস্থান কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর স্থানীয়ভাবে সভাপতিসহ কমিটি গঠনের জন্য তোড়জোড় শুরু হয়। স্থানীয় বিএনপি'র নেতারা সভাপতির পথ দখল করতে মরিয়া হয়ে ওঠে।
তাহলে সভাপতি কে হবেন? এমন প্রশ্নে দুই পক্ষের মধ্যে তৈরি হয় উত্তেজনা। পরে বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়ায়। এলাকাবাসী থানার ওসির কাছে দাবি জানান ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচন করা হোক।
এদিকে, কবরস্থান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন মাস্টারকে নির্বাচন কমিশন প্রধান করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ঘোষণা করা হয় তফশিল। বালুদিয়ার, মহরমখালী ও জগতলা (আংশিক) তিন গ্রামের প্রতিটি পরিবার থেকে একজন পুরুষকে ভোটার করে ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। মোট ৮০০ জন ভোটার গোপন ব্যালটে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে আগামী তিন বছরের জন্য কবরস্থান কমিটির ‘সভাপতি’ নির্বাচিত করবেন।
আগামী ২৪ মে (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কবরস্থান সংলগ্ন ঈদগাহ্ ময়দানে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের মতোই এই নির্বাচন এলাকায় উৎসাহের আমেজ সৃষ্টি করেছে। চলছে প্রার্থীদের প্রচারণা আর আপ্যায়ন। ভোটারদের মন জয় করতে দিচ্ছেন কবরস্থান উন্নয়নের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি।
নির্বাচন কমিশন প্রধান ও কবরস্থান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন মাষ্টার বলেন, “জান্নাতুল বাকি কবরস্থান পরিচালনা কমিটি গঠনে ‘সভাপতি’ পদ নিয়ে স্থানীয় বিএনপির মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি হয়। বেশ কয়েকজন সভাপতি হতে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে আমরা চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জের (ওসি) স্মরণাপন্ন হই। তিনি নির্বাচনের পরামর্শ দেন। অতঃপর আমাকে নির্বাচন কমিশন প্রধান করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়।”
তিনি জানান, নির্বাচনী তফশিল ঘোঘণা করার পর সভাপতি পদের জন্য ৩০ হাজার টাকা জমা দিয়ে দুইজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র ক্রয় করার পর তা দাখিলও করেছেন। বাছাই শেষে তাদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রার্থী দুজন হলেন আব্দুল কুদ্দুস (ছাতা মার্কা) এবং শরিফুল ইসলাম (চেয়ার মার্কা)। মনোনয়নপত্র বিক্রি বাবদ প্রাপ্ত ৬০ হাজার টাকায় নির্বাচন পরিচালনা করা হবে।
এ ব্যাপারে চাটমোহর থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম বলেন, “কবরস্থানের সভাপতি নির্বাচন করা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ হয়। পরে পূর্বের কমিটি বিষয়টি আমাকে জানায়। তবে, এখনো দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জেনেছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এদিকে সভাপতি পদের দুই প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুস (ছাতা) এবং শরিফুল ইসলাম (চেয়ার) নিজেদের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। নির্বাচনের দিন প্রশাসনের কঠোর নজরদারি দাবি করেন তারা।
ঢাকা/শাহীন/এস