অভয়নগরে ১৯ বাড়িঘরে লুটপাট-আগুন: পাঁচ দিন পর মামলা, আটক ৩
Published: 28th, May 2025 GMT
যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের ডহর মশিয়াহাটী গ্রামে ১৯ বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পাঁচ দিন পর থানায় মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভুক্তভোগী সুশান্ত বিশ্বাসের স্ত্রী কল্পনা বিশ্বাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে অভয়নগর থানায় মামলা করেছেন। তবে, বিষয়টি জানাজানি হয় বুধবার (২৮ মে)। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে আটক করেছে।
আটককৃতরা হলেন- উপজেলার সরখোলা গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে ইমন হোসেন (৩০), একই গ্রামের মতিয়ার রহমান মোল্যার ছেলে রিফাতুল ইসলাম রাতুল (২৩) ও বুইকরা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (২৭)।
আরো পড়ুন:
শেরপুরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় ৫৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
জবি ডিবেটিং সোসাইটির সম্পাদকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
মামলার বাদী কল্পনা বিশ্বাস অভিযোগ করেছেন, ‘‘কৃষক দল নেতা তরিকুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের পর অজ্ঞাতপরিচয় ১০০ থেকে ১৫০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তারা ঘরে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মালামাল লুট করে বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘হামলাকারীরা এরপর আমার প্রতিবেশী শংকর বিশ্বাস, মহিতোষ বিশ্বাস, দিলীপ বিশ্বাস, বিষ্ণু বিশ্বাস, বিপ্রজিৎ বিশ্বাস, অজিত বিশ্বাস, বিকাশ বিশ্বাস, প্রতাপ বিশ্বাস, প্রণব বিশ্বাস, বাসুদেব বিশ্বাস, সুকৃতি বিশ্বাস, পরিতোষ বিশ্বাস, বারিন বিশ্বাস, মনিশান্ত বিশ্বাস, পবন বিশ্বাস, অমর বিশ্বাস, সমর বিশ্বাস ও দিনেষ বিশ্বাসের বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। সব মিলিয়ে ১৯টি বাড়িঘরে সলুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এতে মোট ৪৯ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’’
অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.
গত ২২ মে কৃষক দল নেতা তরিকুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার কিছু সময়ের মধ্যেই ডহর মশিয়াহাটী গ্রামের হিন্দুদের ১৯ ঘরবাড়িতে হামলা চালানো হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঢাকা/রিটন/রাজীব
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক ল ইসল ম ব ড় ঘর ল টপ ট ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
মতুয়া সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে লুটপাটের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩
যশোরের অভয়নগরে সনাতন ধর্মাবলম্বী মতুয়া সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার স্বরখোলা গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে বড়েদাপাড়ায় সংঘটিত নওয়াপাড়া পৌর কৃষক দলের সভাপতি তরিকুল ইসলাম সরদার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হন চারজন। তরিকুল হত্যার পর মতুয়া সম্প্রদায়ের দরিদ্রপল্লিতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে ১৯টি পরিবারের অন্তত ৪৯ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হামলার ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে দায়ের করা মামলায় বাদী কল্পনা বিশ্বাস ক্ষয়ক্ষতির এই পরিমাণ উল্লেখ করেছেন। কল্পনা ভুক্তভোগী সুশান্ত বিশ্বাসের স্ত্রী। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, স্থানীয় সরখোলা গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে ইমন হোসেন (৩০), মতিয়ার রহমান মোল্যার ছেলে রিফাতুল ইসলাম রাতুল (২৩) ও বুইকারা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (২৭)।
মামলার বাদী কল্পনা বিশ্বাস বলেন, গত ২২ মে কৃষক দল নেতা তরিকুল ইসলাম সরদার হত্যাকাণ্ডের পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় ১০০ থেকে ১৫০ জন দেশীয় অস্ত্র ও পেট্রোলসহ আমার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা ঘরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে এবং নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মালপত্র লুট করে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। একইভাবে ১৯টি পরিবারের বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সব মিলিয়ে ১৯ পরিবারের প্রায় ৪৯ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
অভয়নগর থানার ওসি মো. আব্দুল আলীম বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনকে বুধবার আদালতে পাঠালে বিচারক কারাগারে পাঠিয়েছেন। এ ছাড়া তরিকুল হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত ফিরোজ খান, সাগর বিশ্বাস, দিনেশ ও সুমন নামে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের ডহর মশিয়াটি গ্রামের বড়েদাপাড়ায় পিল্টু বিশ্বাসের বাড়িতে নওয়াপাড়া পৌর কৃষক দলের সভাপতি তরিকুল ইসলাম সরদার খুন হন। মৎস্যঘেরের জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জন অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা তরিকুলকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। ওই রাতে তরিকুলের অনুসারীরা পিল্টু বিশ্বাসের বাড়িসহ মতুয়া সম্প্রদায়ের ১৯টি পরিবারের ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।