যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার ডহর মশিয়াহাটি গ্রামে ২০টি সংখ্যালঘু পরিবারের বসতঘরে ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও মারধরের ঘটনায় পাঁচ দিনেও অপরাধী গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় সংগঠনটি।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দুর্বৃত্তরা বাড়িঘরে হামলা করে সব মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করেছে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ২০টি পরিবারকে বাস্তুহারা করেছে। নারীদের শারীরিক নির্যাতন করেছে। বর্তমানে ভুক্তভোগী পরিবারের পুরুষ সদস্যরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মিলন কান্তি দত্ত, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি শিমুল সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার কুণ্ডু, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদীপ্ত শর্মা, যশোর জেলা ঐক্য পরিষদের সভাপতি সন্তোষ কুমার দত্ত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় রাসেল মণ্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক তিমির ঘোষ জয়, অভয়নগর উপজেলা ঐক্য পরিষদ সভাপতি শংকর কুমার সিংহসহ অভয়নগর কমিটির নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মতুয়া সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে লুটপাটের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

যশোরের অভয়নগরে সনাতন ধর্মাবলম্বী মতুয়া সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার স্বরখোলা গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

এর আগে বড়েদাপাড়ায় সংঘটিত নওয়াপাড়া পৌর কৃষক দলের সভাপতি তরিকুল ইসলাম সরদার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হন চারজন। তরিকুল হত্যার পর মতুয়া সম্প্রদায়ের দরিদ্রপল্লিতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে ১৯টি পরিবারের অন্তত ৪৯ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হামলার ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে দায়ের করা মামলায় বাদী কল্পনা বিশ্বাস ক্ষয়ক্ষতির এই পরিমাণ উল্লেখ করেছেন। কল্পনা ভুক্তভোগী সুশান্ত বিশ্বাসের স্ত্রী। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, স্থানীয় সরখোলা গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে ইমন হোসেন (৩০), মতিয়ার রহমান মোল্যার ছেলে রিফাতুল ইসলাম রাতুল (২৩) ও বুইকারা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (২৭)। 

মামলার বাদী কল্পনা বিশ্বাস বলেন, গত ২২ মে কৃষক দল নেতা তরিকুল ইসলাম সরদার হত্যাকাণ্ডের পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় ১০০ থেকে ১৫০ জন দেশীয় অস্ত্র ও পেট্রোলসহ আমার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা ঘরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে এবং নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মালপত্র লুট করে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। একইভাবে ১৯টি পরিবারের বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সব মিলিয়ে ১৯ পরিবারের প্রায় ৪৯ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

অভয়নগর থানার ওসি মো. আব্দুল আলীম বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনকে বুধবার আদালতে পাঠালে বিচারক কারাগারে পাঠিয়েছেন। এ ছাড়া তরিকুল হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত ফিরোজ খান, সাগর বিশ্বাস, দিনেশ ও সুমন নামে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের ডহর মশিয়াটি গ্রামের বড়েদাপাড়ায় পিল্টু বিশ্বাসের বাড়িতে নওয়াপাড়া পৌর কৃষক দলের সভাপতি তরিকুল ইসলাম সরদার খুন হন। মৎস্যঘেরের জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জন অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা তরিকুলকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। ওই রাতে তরিকুলের অনুসারীরা পিল্টু বিশ্বাসের বাড়িসহ মতুয়া সম্প্রদায়ের ১৯টি পরিবারের ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মতুয়া সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে লুটপাটের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩
  • অভয়নগরে ১৯ বাড়িঘরে লুটপাট-আগুন: পাঁচ দিন পর মামলা, আটক ৩
  • ৫-৬ মিনিটে তরিকুলকে তিনটি গুলি ও ৩৫ কোপ দিয়ে চলে যায় তারা
  • গ্রামবাসীর আতঙ্ক কাটেনি, দিনে বাড়ি এলেও রাতে থাকছেন অন্যত্র
  • অভয়নগরে পুড়ে যাওয়া ২০ বাড়ি পরিদর্শন করলেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা