‘সংস্কারের নামে শেখ হাসিনার মতো উন্নয়নের ছবক শোনাচ্ছে এই সরকার’
Published: 4th, June 2025 GMT
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান (দুদু) বলেছেন, ‘যত দিন নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারব, তত দিন পর্যন্ত সংকট দূরীভূত হবে না। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত স্বৈরাচারের মূর্ত প্রতীক শেখ হাসিনাকে জায়গা দিয়েছে, সেই দেশ আমাদের বিরুদ্ধে লাগাতার অপপ্রচার চালাচ্ছে। সেই দেশকে রুখতে হলে নির্বাচিত সরকার ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই।’
আজ বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার কাঠেরপুল এলাকায় মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শামসুজ্জামান বলেন, ‘১০ মাস হতে চলল গণ–অভুত্থ্যানে স্বৈরতন্ত্রের পতন হলেও এখনো গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্বাচনের জন্য যে পদক্ষেপ, সেটা নিতে পারি নাই। সেটা হচ্ছে সাধারণ নির্বাচন, সেটাই আমরা করতে পারি নাই। সংস্কারের নামে শেখ হাসিনার মতো উন্নয়নের ছবক শোনাচ্ছে এই সরকার।’ তিনি আরও বলেন, যত দিন নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না হবে, তত দিন ফ্যাসিবাদকে দাফন কাফন করা যাবে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপি আছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই সরকারের সঙ্গে আমরা আছি, বিএনপি আছে। কিন্তু সরকার যেন বিভ্রান্ত না হয়, ভুল পথে না যায়, সে জন্য আমরা তাকে স্বাভাবিক গ্রহণযোগ্য পথে আনার জন্য সমালোচনা করি। এই সরকারকে অবশ্যই জনগণের পক্ষে থাকতে হবে। দেশের পক্ষে থাকতে হবে, গণতন্ত্রের পক্ষে থাকতে হবে, স্বাধীনতার পক্ষে থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের নিজেদের মধ্যে ঐক্য যাতে বিনষ্ট না হয়, এমন কোনো পদক্ষেপ বা বক্তব্য দেওয়া ঠিক হবে না, যে বক্তব্যের কারণে ঐক্য বিনষ্ট হবে। ঐক্য বিনষ্ট হলে স্বৈরতন্ত্রের সুবিধা, আমরা সেটা হতে দিতে পারি না।’
মহানগর মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন মৎস্যজীবী দলের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আবদুর রহিম, মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ, মহানগর মৎস্যজীবী দলের সদস্যসচিব নাসির উদ্দিন জাহান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫