কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় বসতঘর থেকে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় সেখান থেকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাদের বাবাকে উদ্ধার করা হয়। আজ সোমবার সকালে উপজেলার তুলাকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত শিশুরা হলো মনিরা আক্তার (৯) ও সানজিদা আক্তার (৬)। তাদের বাবা মনু মিয়া পেশায় আসবাবের মিস্ত্রি। তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয় লোকজনের ধারণা, পানীয়র সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে দুই বাক্‌প্রতিবন্ধী কন্যাশিশুকে হত্যার পর তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

তুলাকান্দি গ্রামের একাধিক বাসিন্দা জানান, আজ সকালে মনিরা ও সানজিদাকে বাড়িতে রেখে প্রতিবেশীর বাড়িতে রান্না করতে যান তাঁদের মা হাসিনা আক্তার। এ সময় মনু মিয়া একটি মুদিদোকান থেকে ৩টি লাচ্ছি কিনে বাড়িতে ফেরেন। একপর্যায়ে হাসিনা বাড়ি ফিরে বসতঘরের দরজা বন্ধ পান। দীর্ঘ সময় ডাকাডাকির পর সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় দরজাটি ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দুই বোন ও বাবাকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে ওই ৩ জনকে উদ্ধার করে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে মনিরা ও সানজিদাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। মনুকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, লাচ্ছির সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে মনিরা ও সানজিদাকে পান করান মনু মিয়া। পরে তিনি নিজেও পান করেন।

প্রতিবেশীদের ধারণা, বর্তমানে কাঠমিস্ত্রির কাজ করে তেমন আয় করতে পারছিলেন না মনু। তিনিসহ পরিবারটির ৮ সদস্যই বাক্‌প্রতিবন্ধী। দুই বাক্‌প্রতিবন্ধী মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে তিনি কাজটি করতে পারেন। মনু ছাড়াও পরিবারটিতে তাঁর মা জোসনা বেগম, ভাই আল আমিন, সোহেল মিয়া, জুয়েল মিয়া ও একমাত্র বোন পারভীন আক্তারও কথা বলতে পারেন না।

আজ দুপুরে তুলাকান্দি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দুই মেয়েকে হারিয়ে বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়েছেন মা হাসিনা বেগম। আত্মীয়-স্বজনেরা বিলাপ করে কাঁদছিলেন।

তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সরফরাজ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, ওই দুই শিশুকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের মুখ থেকে কীটনাশকের গন্ধ পাওয়া গেছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। তিনি জানান, আশঙ্কাজনক অবস্থায় মনু মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র পাঠানো হয়েছে।

নিহত দুই শিশুর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিতাস থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদ উল্যাহ। তিনি বলেন, এ ঘটনায় তিতাস থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ