ওজন কেন বাড়ে

মূলত আমাদের ওজন দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। দৈনন্দিন ক্যালরি গ্রহণ ও দৈনন্দিন ক্যালরি ব্যয়। কায়িক শ্রম ও কাজের ধরনের ওপর নির্ভর করে আমাদের ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত। যদি দিনের পর দিন ক্যালরি গ্রহণ, ক্যালরি ব্যয়ের তুলনায় বাড়তি থাকে, তবে ধীরে ধীরে বাড়তি ক্যালরি চর্বি হিসেবে জমা হতে থাকবে ও ওজন বাড়তে থাকবে। একসময় তা নাগালের বাইরে চলে যাবে। তবে পুরো বিষয়টা আসলে এত সরল নয়। এর মধ্যে কাজ করে আরও নানা কিছু। আছে জিনগত বিষয়, হরমোন ও নিউরোট্রান্সমিটারের খেলা, আছে মনের বা সাইকোলজিক্যাল কিছু উপাদান। অনেকে পারিবারিকভাবেই একটু মোটা ধাঁচের। আবার কিছু জিনগত রোগে ওজন বাড়ে, যেমন প্রাডার–উইলি সিনড্রোম, পলিজেনিক ওবেসিটি ইত্যাদি। কিছু হরমোনজনিত রোগ, যেমন হাইপোথাইরয়েডিজম বা কর্টিসোল হরমোনের আধিক্য, হাইপোথ্যালামিক ডিজঅর্ডার, পিসিওএসে ওজন বৃদ্ধি পায়। কিছু ওষুধ যেমন স্টেরয়েড, ইনসুলিন, সালফোনিল ইউরিয়া গোত্রের ওষুধ, কিছু অ্যান্টি ডিপ্রেসেন্ট বা অ্যান্টি সাইকোটিক খেলে ওজন বাড়তে পারে। মানসিক চাপ বা রোগের কারণে কেউ কেউ বিঞ্জ ইটিং বা অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করেন, কারও ফুড ক্রেভিং বেশি, ইমোশনাল ইটিং বা ফুড এডিকশন রয়েছে কোনো কোনো খাবারের প্রতি। তারও গভীরে, শরীরের কিছু রাসায়নিক আমাদের খাদ্যাভ্যাস, ফুড চয়েস, তৃপ্তি ও খিদের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসে রয়েছে হাঙ্গার সেন্টার ও স্যাটাইটি (তৃপ্তি) সেন্টার। এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে কিছু হরমোন ও রাসায়নিক (যেমন লেপটিন, গ্রেলিন, ইনসুলিন, গ্লুকাগন লাইক পেপটাইড, পেপটাইড ওয়াই ইত্যাদি)। এসব রাসায়নিকের ওঠানামা আমাদের খাদ্যাভ্যাস, আচরণ এবং ওজন ওঠানামার সঙ্গে জড়িত। তবে মোটাদাগে ওজন বৃদ্ধির পেছনে আমাদের মন্দ খাদ্যাভ্যাস ও কায়িক শ্রমহীনতাই দায়ী।

স্থূলতা বা ওবেসিটিকে এখন বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অসংক্রামক ব্যাধি হিসেবে বিবেচনা করা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র গ রহণ ওজন ব হরম ন

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ