জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন: খোকন
Published: 19th, June 2025 GMT
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন বলেছেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তন করে দেশে বহু দলীয় গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। যে আওয়ামী লীগকে বিলুপ্ত করে বাকশাল বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ মানুষের মূখে শাল ঢুকিয়ে বহু দলীয় গণতন্ত্র হত্যা করে ছিলেন। সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা হরণ করে ছিলেন, এ দেশে কোন আইনের শাসন ছিলো না, ন্যায় বিচার ছিলো না, মানবধিকার ছিলো না, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছিলো না, মৌলিক অধিকার ছিলো না, তখন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দেশের মানুষের এ অধিকার গুলো ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তখন তাকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছে। এ দেশ থেকে বিএনপিকে নো পার্টি বলে ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু জনগণ তাদের মূখে চুন কালি মেখে প্রমান করেছে, বিএনপি বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ একক দল সেটা প্রমাণ করেছে দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং দেশ নায়ক তারেক রহমান। বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন করে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে তিনি আপোষহীন দেশনেত্রীর খেতাব পেয়েছেন এবং গণতন্ত্র পুনঃ উদ্ধার করেছেন। তারেক রহমান দীর্ঘ ১৬ বছর আন্দোলন করে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার খুনি সরকার, জালিম সরকারের পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশে একটি মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন।
মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকায় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খায়রুল কবির খোকন এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বলেছিলেন জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। তিনি জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য, জনগণকে স্বনির্ভর করার জন্য কাজ করেছিলেন। আমাদের নেতা তারেক রহমানও জনগণের ক্ষমতায়ন ও কল্যানের জন্য আগামী দিনে কিভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন তার একটি রুপরেখা জাতীর সামনে দিয়েছেন। তিনি কিভাবে শ্রমিকদের অধিকার, যুবকদের জন্য নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা, ন্যায়বিচারসহ জনগণের সামগ্রিক কল্যাণের জন্য ৩১ দফা কর্মসূচী দিয়েছেন। সেভাবেই রাষ্ট্র পরিচালনা হবে। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ গত পনের বছর জনগণের অধিকার কিভাবে কেড়ে নিয়েছিল তা আপনারা জানেন। আর বিএনপি জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে গত পনের বছর কিভাবে জুলুম-নির্যাতন মোকাবেলা করেছে তবুও জনগণকে ছেড়ে যায়নি তা-ও আপনারা দেখেছেন। আগামী দিনে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যদি বিএনপিকে সমর্থন দেয় তাহলে বিএনপি জনগণের কল্যাণের জন্য সকল কর্মসূচী গ্রহন করবে। বিএনপি জনগণের দল। তাই জনগণকে সংঙ্গে নিয়ে এবং জনগণের সঙ্গে থেকেই দেশের জন্য কাজ করবে।
মহানগর যুবদল সদস্য মো:এরশাদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য অকিল উদ্দিন ভূঁইয়া, ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি বাবুল প্রধান, ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সামসুদ্দিন শেখ, ২ নং ওয়ার্ড বিএনপি'র সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি গাজী মনির হোসেন৭সহ বিএনপি ও অংগসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র জন ত ন র য়ণগঞ জ জনগণ র ক কর ছ ন র জন য ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ মিনার থেকে এক দফা ঘোষণা
ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নির্বিচার গুলি ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং ৯ দফা দাবিতে ৩ আগস্ট সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। সেদিন দুপুরের আগেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শহীদ মিনারে উপস্থিত হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির ছয় সমন্বয়ক। তখন সমাবেশ চলছিল। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা করেন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম (এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক)।
সেদিন নাহিদ তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এক দফা দাবির সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। দফাটি হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এই সরকারের পতন ও ফ্যাসিবাদের বিলোপ।’
সেদিন সকালে শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গণভবনে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করে শহীদ মিনারের সমাবেশে নাহিদ বলেছিলেন, ‘আপনি দরজা খুলে অপেক্ষা করুন। আমরা সংলাপ নয়, আপনাকে উৎখাত করার জন্য আসব।’
শহীদ মিনারের সমাবেশ থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণাও দেন নাহিদ। তাঁর বক্তব্যের পর আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া (এখন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা) সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচিকে ঘিরে কিছু জরুরি নির্দেশনা দেন।
ওই সমাবেশ চলার সময় শহীদ মিনারের সামনের সড়কে শেখ হাসিনার তিনটি কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
সেদিনের সেই সমাবেশ ও এক দফা ঘোষণার বিষয়ে নাহিদ ইসলাম গতকাল শনিবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতন ও ফ্যাসিবাদ বিলোপের এক দফা দাবি জনগণের মধ্য থেকেই উঠে এসেছিল। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা তখন জনগণের চৈতন্যের শীর্ষবিন্দুতে চলে গিয়েছিল। আমরা জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে জনগণের প্রাণের দাবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভাষা দিয়েছি।’
এক দফা ঘোষণার আগের রাতেই (২ আগস্ট, ২০২৪ সাল) একটি মহল সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা করতে কয়েকজন সমন্বয়ককে চাপ দিয়েছিল উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এটা ছিল ফ্যাসিবাদকে টিকিয়ে রাখার একটা ফাঁদ। ছাত্ররাজনীতিতে আমাদের প্রায় অর্ধযুগের সক্রিয়তা ও বোঝাপড়ার জায়গা থেকে রাজনৈতিক ফাঁদের ব্যাপারে আমরা সতর্ক ছিলাম। সেই জায়গা থেকে আমরা বলেছি, এক দফার ঘোষণা আসতে হবে মাঠ থেকে। সেভাবেই আমরা এক দফা ঘোষণা করি। জনগণ জীবন বাজি রেখে এক দফার পক্ষে রাজপথে ছিল।’
শহীদ মিনারের সমাবেশের পাশাপাশি ৩ আগস্ট বিকেলে ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে সংগীতশিল্পীদের প্রতিবাদী সমাবেশ থেকেও সরকারের পদত্যাগ দাবি করা হয়।
সেনা সদরে ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’
জুলাইয়ের হত্যাকাণ্ড সামরিক বাহিনীর ভেতরেও প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছিল। সে রকম একটি পরিস্থিতিতে ৩ আগস্ট ঢাকায় সেনা সদরের হেলমেট অডিটরিয়ামে নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ (সেনা কর্মকর্তাদের মতবিনিময়) হয়। ওই মতবিনিময়ে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বিভিন্ন পর্যায়ের সেনা কর্মকর্তাদের বক্তব্য শোনেন।
সেদিন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের জনগণের আস্থার প্রতীক। জনগণের স্বার্থে এবং রাষ্ট্রের যেকোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।