রাজধানীর অন্যতম অভিজাত এলাকা গুলশান। কিন্তু এ আভিজাত্যের আড়ালেই লুকিয়ে আছে এক চরম বাস্তবতা—গুলশান লেকের দুরবস্থা। লেকটি গুলশান এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছিল, স্বস্তি দিয়েছিল স্থানীয় অধিবাসীদেরও। সেটিই এখন চরম জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, সেই লেক এখন বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। সেখান থেকে ছড়াচ্ছে অসহনীয় দুর্গন্ধ। এটি কেবল পরিবেশের ক্ষতিই করছে না, জনস্বাস্থ্যকেও হুমকির মুখে ফেলছে।

ইউনাইটেড হাসপাতাল পার হয়ে বারিধারা ডিওএইচএসের দিকে গেলেই উৎকট গন্ধ নাকে এসে লাগে। গুলশান লেকের শেষাংশের জমাটবাঁধা বর্জ্য থেকেই সেই দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, লেকের পানির ওপর চার-পাঁচ ইঞ্চি পুরু ময়লার স্তর। সেই স্তর মূলত পচনশীল আবর্জনার স্তূপ। কোরবানির ঈদের পর পশুর নাড়িভুঁড়ি ও রক্ত মিশে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। লেকের দুই পাশে গড়ে ওঠা বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দারা দুর্গন্ধের কারণে বারান্দা বা ছাদে দাঁড়াতে পারছেন না, এমনকি দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। অভিজাত এলাকায় বসবাস করেও এমন ভোগান্তি নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক।

এ অব্যবস্থাপনার পেছনে স্পষ্টতই দায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনাহীনতা ও দায়িত্বহীনতা। এখানে আছে নাগরিক সচেতনতারও চরম অভাব। বছরের পর বছর ধরে লেকে ফেলা হচ্ছে চিপসের প্যাকেট, পানির বোতল, পলিথিন। সবচেয়ে গুরুতর হলো আশপাশের ভবনগুলোর পয়োবর্জ্যও লেকে এসে পড়ছে। যদিও ঢাকা ওয়াসা দাবি করছে যে গুলশান-বনানী এলাকার কোনো পয়োবর্জ্য লেকে পড়ছে না এবং সেগুলো দাশেরকান্দি পয়োবর্জ্য শোধনাগারে যাচ্ছে। কিন্তু লেকের বর্তমান চিত্র তাদের এ দাবির সত্যতা প্রমাণ করে না। জনগণের পয়োবর্জ্য শোধনের জন্য যে বিল পরিশোধ করা হয়, তা যদি লেকেই ফেলা হয়, তবে এটি জনগণের অর্থের চরম অপচয় এবং তাঁদের সঙ্গে একধরনের প্রতারণাও।

গুলশান সোসাইটি জানাচ্ছে, নিজেদের খরচে লেক পরিষ্কার করা হলেও পয়োবর্জ্য ফেলা বন্ধ না হওয়ায় কোনো লাভ হচ্ছে না। বারবার সিটি করপোরেশন ও ওয়াসাকে বিষয়টি জানানোর পরও তাদের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে লেকটির আজ করুণ দশা এবং আশপাশের বাসিন্দারাও চরম দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না।

অবিলম্বে গুলশান লেকে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। গুলশান-বনানী এলাকার পয়োবর্জ্য শোধনাগারে সঠিকভাবে প্রক্রিয়াকরণ নিশ্চিত করা হোক, লেকে তা ফেলা বন্ধ করা হোক। লেকদূষণের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক। লেক পরিষ্কার এবং এর জলজ পরিবেশ পুনরুদ্ধারের জন্য একটি সমন্বিত ও বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হোক। গুলশান লেকের হারানো সৌন্দর্য ফিরিয়ে এনে একটি স্বাস্থ্যকর ও বসবাসযোগ্য পরিবেশ নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বরগুনার পূর্বের তিনটি আসন পুনর্বহাল দাবি 

বরগুনার পূর্বে বিদ্যমান তিনটি আসন পুর্নবহালের দাবি জানিয়েছেন জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে বরগুনার তিনটি সংসদীয় আসন পুনর্বহাল বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

এ সময় লিখিত বক্তব্যে বরগুনা জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ওমর আব্দুল্লাহ শাহীন বলেন, “এ জেলায় প্রায় ১১ লাখ ভোটার। অষ্টম জাতীয় নির্বাচনের পর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের কিছু সুবিধাভোগী নেতা বরগুনাবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে তিন আসনকে বিলুপ্ত করে দুটি আসন করে।”

তিনি বলেন, “এই দাবি শুধুই একটি জেলার পূর্বের তিনটি সংসদীয় আসন পুর্নবহালের দাবি নয়, এটি গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও জনগণের কণ্ঠস্বরের দাবি।আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বরগুনার পূর্বের তিনটি সংসদীয় আসন ফেরত দেন, বরগুনার অধিকার ফিরিয়ে দেন। জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেন এবং অবহেলিত বরগুনা জেলাবাসীর সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেন।”

শাহীন বলেন, “আমরা আমাদের ন্যায্য দাবিতে হাইকমিশনারে রিট করেছি। প্রধান উপদেষ্টা বরাবর আবেদন জানিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার এই ১১ লাখ ভোটারদের দাবি আমলে নিয়ে এ জেলায় তিনটি আসন পুনর্বহাল করবে।”

তিনি বলেন, “বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা, নয়টি খরস্রোতা নদীবেষ্টিত এক অনন্য জেলা বরগুনা। এই জেলার নদী, খাল, উপকূল, কৃষি ও মৎস্য সম্পদ শুধু বরগুনার নয় বরং বাংলাদেশের অর্থনীতি ও ব্লু-ইকোনমির ভবিষ্যতের চালিকাশক্তি। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, বরগুনা জেলার নির্বাচনি সীমানা পরিবর্তনের কারণে আমরা পূর্বের তিনটি সংসদীয় আসন হারিয়েছি। সংসদে বরগুনার জনগণের প্রতিনিধিত্বের অধিকার হারিয়েছি, উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছি।”

শাহীন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যদি নির্বাচন কমিশন আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে না নেয়, তাহলে আমরা বরগুনাবাসী কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করব, ইনশাআল্লাহ।”

সংবাদ সম্মেলনে জেলার রাজনৈতিক দলের নেতা, বিভিন্ন পেশাজীবি এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

ঢাকা/নাজমুল/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনা উচিত: নাহিদ ইসলাম
  • বাগেরহাটে আসন বহালের দাবিতে ফের বিক্ষোভ 
  • ‘নির্বাহী আদেশে নয়, আ.লীগকের আইনের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করতে হবে’
  • হাসিনা আমলের পরিবেশ বিধ্বংসী প্রকল্প এখনো কেন চলছে
  • সরকার একটি দলের পকেটে ঢোকার চেষ্টা করছে: রফিকুল ইসলাম
  • ‌দূষণকারীদের নাম প্রকাশে আনুন, কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে: রিজওয়ানা
  • অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণের মনের ভাষা বুজতে হবে: গয়েশ্বর রায়
  • যেকোনো মূল্যে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক 
  • পিআর পদ্ধতি চাইলে জনগণের কাছে যান: ডা. জাহিদ
  • বরগুনার পূর্বের তিনটি আসন পুনর্বহাল দাবি