নাগরিক জীবনের ভোগান্তি কবে দূর হবে
Published: 21st, June 2025 GMT
রাজধানীর অন্যতম অভিজাত এলাকা গুলশান। কিন্তু এ আভিজাত্যের আড়ালেই লুকিয়ে আছে এক চরম বাস্তবতা—গুলশান লেকের দুরবস্থা। লেকটি গুলশান এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছিল, স্বস্তি দিয়েছিল স্থানীয় অধিবাসীদেরও। সেটিই এখন চরম জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, সেই লেক এখন বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। সেখান থেকে ছড়াচ্ছে অসহনীয় দুর্গন্ধ। এটি কেবল পরিবেশের ক্ষতিই করছে না, জনস্বাস্থ্যকেও হুমকির মুখে ফেলছে।
ইউনাইটেড হাসপাতাল পার হয়ে বারিধারা ডিওএইচএসের দিকে গেলেই উৎকট গন্ধ নাকে এসে লাগে। গুলশান লেকের শেষাংশের জমাটবাঁধা বর্জ্য থেকেই সেই দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, লেকের পানির ওপর চার-পাঁচ ইঞ্চি পুরু ময়লার স্তর। সেই স্তর মূলত পচনশীল আবর্জনার স্তূপ। কোরবানির ঈদের পর পশুর নাড়িভুঁড়ি ও রক্ত মিশে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। লেকের দুই পাশে গড়ে ওঠা বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দারা দুর্গন্ধের কারণে বারান্দা বা ছাদে দাঁড়াতে পারছেন না, এমনকি দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। অভিজাত এলাকায় বসবাস করেও এমন ভোগান্তি নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক।
এ অব্যবস্থাপনার পেছনে স্পষ্টতই দায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনাহীনতা ও দায়িত্বহীনতা। এখানে আছে নাগরিক সচেতনতারও চরম অভাব। বছরের পর বছর ধরে লেকে ফেলা হচ্ছে চিপসের প্যাকেট, পানির বোতল, পলিথিন। সবচেয়ে গুরুতর হলো আশপাশের ভবনগুলোর পয়োবর্জ্যও লেকে এসে পড়ছে। যদিও ঢাকা ওয়াসা দাবি করছে যে গুলশান-বনানী এলাকার কোনো পয়োবর্জ্য লেকে পড়ছে না এবং সেগুলো দাশেরকান্দি পয়োবর্জ্য শোধনাগারে যাচ্ছে। কিন্তু লেকের বর্তমান চিত্র তাদের এ দাবির সত্যতা প্রমাণ করে না। জনগণের পয়োবর্জ্য শোধনের জন্য যে বিল পরিশোধ করা হয়, তা যদি লেকেই ফেলা হয়, তবে এটি জনগণের অর্থের চরম অপচয় এবং তাঁদের সঙ্গে একধরনের প্রতারণাও।
গুলশান সোসাইটি জানাচ্ছে, নিজেদের খরচে লেক পরিষ্কার করা হলেও পয়োবর্জ্য ফেলা বন্ধ না হওয়ায় কোনো লাভ হচ্ছে না। বারবার সিটি করপোরেশন ও ওয়াসাকে বিষয়টি জানানোর পরও তাদের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে লেকটির আজ করুণ দশা এবং আশপাশের বাসিন্দারাও চরম দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না।
অবিলম্বে গুলশান লেকে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। গুলশান-বনানী এলাকার পয়োবর্জ্য শোধনাগারে সঠিকভাবে প্রক্রিয়াকরণ নিশ্চিত করা হোক, লেকে তা ফেলা বন্ধ করা হোক। লেকদূষণের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক। লেক পরিষ্কার এবং এর জলজ পরিবেশ পুনরুদ্ধারের জন্য একটি সমন্বিত ও বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হোক। গুলশান লেকের হারানো সৌন্দর্য ফিরিয়ে এনে একটি স্বাস্থ্যকর ও বসবাসযোগ্য পরিবেশ নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সারা দেশে দাঁড়িপাল্লার গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে: গোলাম পরওয়ার
আগামী নির্বাচনে ইসলামী আদর্শের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, সারা দেশে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের অনুকূলে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। জনগণ অবাধ ও নির্বিঘ্নে নিজেদের ভোট প্রয়োগ করতে পারলে ইসলামী আদর্শের শক্তিকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে দেশ শাসনের দায়িত্ব অর্পণ করবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সিলেটের বিয়ানীবাজারের একটি মিলনায়তনে উপজেলা জামায়াত আয়োজিত এক জনশক্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার এ কথাগুলো বলেন। আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এই তথ্য জানানো হয়।
সমাবেশে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট-বাকশালী আওয়ামী লীগ সরকার ভিন্ন একটি দেশের প্রেসক্রিপশনে ক্ষমতায় এসে দেশের আলেম-ওলামাদের ওপর জেল–জুলুম চালিয়েছে। ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমে তাদের লজ্জাজনক পতন হয়েছে। তাই আগস্ট বিপ্লবকে অর্থবহ ও টেকসই করতে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
রাষ্ট্রের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে পতিত স্বৈরাচারের অনুসারীরা সক্রিয় রয়েছে বলে মন্তব্য করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘তাই ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আসন্ন নির্বাচনে প্রতিটি আসনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে হবে। আগামী নির্বাচনে দেশে ভোট বিপ্লব ঘটানোর জন্য নেতা-কর্মীদের এখন থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা ও সিলেট-৬ আসনের জন্য দলটির মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘দেশের মানুষ এখন ইসলামী দলগুলোকে নেতৃত্বের আসনে দেখতে চায়। দেশে ইসলামের পক্ষে যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, তাতে অচিরেই জনগণের সে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে, ইনশা আল্লাহ। কোনো ষড়যন্ত্রই জনতার বিজয়কে ঠেকাতে পারবে না।’
বিয়ানীবাজার উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ফয়জুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে পৌর জামায়াতের আমির মাওলানা জমির হোসাইনসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।