ঝালকাঠিতে ছেলের বিরুদ্ধে মারধর ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলে মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ১১০ বছর বয়সী মা আমিরুল নেছা। তার অভিযোগ, ছেলে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুুপুরে ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আমিরুল নেছা বাদী হয়ে তার ছেলে ইউনুস মোল্লার বিরুদ্ধে মামলা করেন। বিচারক রুবেল শেখ অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। 

আরো পড়ুন: ছেলের বিরুদ্ধে মারধরের মামলা শতবর্ষী আমিরুল নেছার  

আরো পড়ুন:

চরমপন্থি নেতা নাসিমকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় মামলা

ছেলের বিরুদ্ধে মারধরের মামলা শতবর্ষী আমিরুল নেছার  

এদিকে, মামলা তুলে নিতে বৃদ্ধা আমিরুল নেছাকে বারবার হুমকি দিচ্ছেন ইউনুস মোল্লা। এমনকি বড় ভাই আনোয়ার মোল্লা ও মাসুদ মোল্লাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও প্রকাশ্যে ঘুরে বেরাচ্ছেন তিনি। 

ইউনুস মোল্লা ঝালকাঠি এলজিইডির গাড়ি চালক পদে কর্মরত। তিনি ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়নের ধারাখানা গ্রামের বাসিন্দা। 

মামলার বাদী আমিরুল নেছা শনিবার (২১ জুন) বলেন, “ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে আজ আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি। মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে সে।” 

বৃদ্ধার নাতি মো.

সোহেল মোল্লা বলেন, ‍“এ ঘটনায় আজ রাতে ঝালকাঠি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হবে।”

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ইউনুস মোল্লার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রী ফোন রিসিভ করেন। তিনি জানান, তার স্বামী বাসায় নেই। ফিরলে তাকে যোগাযোগ করতে জানাবেন তিনি।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, আমিরুল নেছা তিন বছর আগে জমি বিক্রি করে তিন লাখ টাকা তার ছোট ছেলে ইউনুছ মোল্লার কাছে জমা রাখেন। গত ১২ জুন চিকিৎসার জন্য এই টাকা চাইতে গেলে ছেলে মায়ের ওপরে ক্ষিপ্ত হন। এক পর্যায়ে মাকে লাথি মারেন ইউনুস মোল্লা। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতলে চিকিৎসা করানো হয়। গত বৃহস্পতিবার দুপরে আদালতে মামলা দায়ের হয়। 

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ সোলায়মান গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এটা দুঃখজনক যে, ছেলের বিরুদ্ধে মায়ের মামলা করতে হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত বৃদ্ধা আমিরুল নেছার অভিযোগ আমলে নিয়ে সরাসরি ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছেন। আমরা আশা করছি, তিনি ন্যায়বিচার পাবেন।’’

ঢাকা/অলোক/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ ইউন স ম ল ল আম র ল ন ছ ঝ লক ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

শতবর্ষী পুকুর ভরাট করে যুবলীগ নেতার দোকান

শত বছরের সরকারি পুকুরের শ্রেণি পরিবর্তন করে খাসজমি করা হয়। সেই জমি ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেন প্রভাবশালী আ. হালিম। জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়লে বন্দোবস্ত বাতিল করে প্রশাসন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই জমি ফের দখলে নিয়ে ২১টি দোকান নির্মাণ করেছেন হালিমের ছেলে যুবলীগ নেতা মাসুদ রানা নান্টু। 
দখল-বাণিজ্যের এ চিত্র দেখা গেছে ডুমুরিয়া উপজেলা সদরে। দখলে জড়িত মাসুদ রানা নান্টু স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ক্ষমতার দাপটে তিনি কাউকে তোয়াক্কা করেন না। 
খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০০ বছর আগে তৎকালীন জমিদার অক্ষয় ভট্টাচার্য্য গ্রামবাসীর সুপেয় পানির সমস্যা সমাধানে ৫৩ শতাংশ জমির ওপর পুকুরটি খনন করেন। দানবীর হাজী মুহাম্মদ মহসিনের গড়ে তোলা সৈয়দপুর ট্রাস্টের আওতায় আসে জমিটি।  বর্তমানে জমিটি ট্রাস্টের নামে রেকর্ড আছে। ১৯৬৬ সালে প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের সহায়তায় জালিয়াতি করে পুকুরের শ্রেণি পরিবর্তন করেন আবদুল হালিম। এরপর ৯৯ বছরে জন্য বন্দোবস্ত নেন। ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর প্রশাসনের তদন্তে জালিয়াতি ধরা পড়ে। এরপর তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শান্তি মনি চাকমা অবৈধ ওই দখলদারের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। 
আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করলে ওই জমি দখলে নেন আবদুল হালিমের ছেলে যুবলীগ নেতা মাসুদ রানা নান্টু। এরপর পুকুরের জায়গা ভরাট করে চারপাশে ২১টি পাকা দোকান নির্মাণ করেন। দোকানগুলো মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দিয়েছেন। ৩টি দোকানের পজেশন বিক্রি করেছেন। এভাবে তিনি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সরকারি পুকুরটির রক্ষায় প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 
কয়েকজন ভাড়াটিয়া বলেন, দোকান ভাড়া নেওয়ার সময় এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা অগ্রিম নিয়েছেন নান্টু। প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা ভাড়া দেওয়া হয় তাঁকে। ৩টি ঘর ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকায় পজেশনও বিক্রি করে দিয়েছেন।  
স্থানীয় বাসিন্দা অধীর কুমার ও আমিন আলী জানান, আগে এ পুকুরের পানি খাওয়া জন্য ব্যবহার করা হতো। এখনও অনেক মানুষ গোসল করেন। সরকারি পুকুর ভরাট করে দোকান করে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। এতে সরকারের কোনো লাভ হচ্ছে না। জনস্বার্থে পুকুরটি দখলমুক্ত করা দরকার।
এ বিষয়ে কথা বলতে সদর ইউনিয়নের যুবলীগের সদস্য মাসুদ রানা নান্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর দাবি, ১৯৬৬ সালে তাঁর বাবা আ. হালিম জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে জমিটি ৯৯ বছরের জন্য লিজ নেন। এ কারণে তারা ৬ ভাইবোন মিলে পুকুরের পাড় ঘেঁষে কিছু পাকা ঘর করে ভাড়া দিয়েছেন। কোনো পজেশন বিক্রি করা হয়নি। তিনি আরও বলেন, কিছু আইনি জটিলতায় পুকুরটি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান। 
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান সহকারী নাছিমুল হক জানান, সরকারি পুকুর জনগণের সম্পত্তি। দ্রুত পুকুরটি দখলমুক্ত করা প্রয়োজন।
ইউএনও মুহাম্মদ আল-আমিন বলেন, পুকুরটি সৈয়দপুর ট্রাস্টের নামে রয়েছে। সরকারি সম্পদ উদ্ধার করা হবে। অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘শতবর্ষ বেঁচে থাকার তো কোন দরকার নেই’
  • শতবর্ষী পুকুর ভরাট করে যুবলীগ নেতার দোকান
  • ছেলের বিরুদ্ধে মারধরের মামলা শতবর্ষী আমিরুল নেছার