ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় সেই মা
Published: 21st, June 2025 GMT
ঝালকাঠিতে ছেলের বিরুদ্ধে মারধর ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলে মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ১১০ বছর বয়সী মা আমিরুল নেছা। তার অভিযোগ, ছেলে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুুপুরে ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আমিরুল নেছা বাদী হয়ে তার ছেলে ইউনুস মোল্লার বিরুদ্ধে মামলা করেন। বিচারক রুবেল শেখ অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
আরো পড়ুন: ছেলের বিরুদ্ধে মারধরের মামলা শতবর্ষী আমিরুল নেছার
আরো পড়ুন:
চরমপন্থি নেতা নাসিমকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় মামলা
ছেলের বিরুদ্ধে মারধরের মামলা শতবর্ষী আমিরুল নেছার
এদিকে, মামলা তুলে নিতে বৃদ্ধা আমিরুল নেছাকে বারবার হুমকি দিচ্ছেন ইউনুস মোল্লা। এমনকি বড় ভাই আনোয়ার মোল্লা ও মাসুদ মোল্লাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও প্রকাশ্যে ঘুরে বেরাচ্ছেন তিনি।
ইউনুস মোল্লা ঝালকাঠি এলজিইডির গাড়ি চালক পদে কর্মরত। তিনি ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়নের ধারাখানা গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার বাদী আমিরুল নেছা শনিবার (২১ জুন) বলেন, “ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে আজ আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি। মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে সে।”
বৃদ্ধার নাতি মো.
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ইউনুস মোল্লার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার স্ত্রী ফোন রিসিভ করেন। তিনি জানান, তার স্বামী বাসায় নেই। ফিরলে তাকে যোগাযোগ করতে জানাবেন তিনি।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, আমিরুল নেছা তিন বছর আগে জমি বিক্রি করে তিন লাখ টাকা তার ছোট ছেলে ইউনুছ মোল্লার কাছে জমা রাখেন। গত ১২ জুন চিকিৎসার জন্য এই টাকা চাইতে গেলে ছেলে মায়ের ওপরে ক্ষিপ্ত হন। এক পর্যায়ে মাকে লাথি মারেন ইউনুস মোল্লা। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতলে চিকিৎসা করানো হয়। গত বৃহস্পতিবার দুপরে আদালতে মামলা দায়ের হয়।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ সোলায়মান গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এটা দুঃখজনক যে, ছেলের বিরুদ্ধে মায়ের মামলা করতে হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত বৃদ্ধা আমিরুল নেছার অভিযোগ আমলে নিয়ে সরাসরি ওয়ারেন্ট ইস্যু করেছেন। আমরা আশা করছি, তিনি ন্যায়বিচার পাবেন।’’
ঢাকা/অলোক/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ ইউন স ম ল ল আম র ল ন ছ ঝ লক ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
এখনো কুপিবাতির আলোয় জমজমাট শতবর্ষী মিরতিংগার হাট
সন্ধ্যা নামতেই যেন ‘আবার আকাশে অন্ধকার ঘন হয়ে উঠছে’। ‘আলোর রহস্যময়ী সহোদরার মতো এই অন্ধকার’—আরও রহস্যময় করে তুলেছে মিরতিংগার হাটকে। চা-বাগানের ভেতর একটুকরা পণ্যের হাট। কালের যাত্রা থেকে বহুদূর ছিন্ন পালকের মতো পড়ে থাকা একদল শ্রমজীবী মানুষের হাট এটি। ‘সমস্ত দিনের শেষে’ ক্লান্তি নিয়ে এই মানুষেরা এখানে আসেন। তাঁদের অর্থবিত্ত কম, চাওয়া-পাওয়ার তালিকাটাও ছোট। হাটের পণ্যে সেই অল্প চাওয়ার চিহ্ন লেগে আছে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার একটি চা-বাগান মিরতিংগা। মিরতিংগা চা-বাগানে পুরোনো সময়ের গন্ধমাখা এই হাটের বয়স এখন কত, তা নিশ্চিত করতে পারেন না কেউ। তবে তা যে শত বছরের কাছাকাছি হবে, এ নিয়ে কারও দ্বিধা নেই।
স্থানীয় লোকজন জানান, হাটটি আগে মিরতিংগা চা-বাগানেরই অন্য একটি স্থানে বসত। পরে কোনো একসময় বর্তমান স্থানটিতে হাট বসছে। চা-শ্রমিক, তাঁদের পরিবারের লোকজনই এ হাটের প্রধান ক্রেতা। তবে বেশির ভাগ ব্যবসায়ীই আসেন আশপাশের এলাকা থেকে। এই হাটের সঙ্গে অনেক ব্যবসায়ীর নাড়ির সম্পর্ক। কারও বাপ-দাদা এই হাটে পণ্য নিয়ে আসতেন। কারও হাটে নিয়মিত আসার বয়স হয়ে গেছে ২৫-৩০ বছর। চা-শ্রমিকদের সঙ্গে তাঁদের লেনদেনের এক অলিখিত নগদ-বাকির রোজনামচা আছে, এটা দুই পক্ষই মেনে চলে।
সপ্তাহে দুই দিন বসে মিরতিংগা বাজার—সোম ও বৃহস্পতিবার। বিকেল তিনটার পর থেকে একটু একটু করে হাটটি জমতে শুরু করে। সন্ধ্যায় একদম জমজমাট। সন্ধ্যার পর শ্রমক্লান্ত মানুষের থাকে ঘর ফেরার তাড়া। হাটটি ফাঁকা হতে থাকে। রাত নয়টার দিকে হাট ভেঙে যায়। এর মধ্যে সোমবারের হাটটি অতটা জমে না। এদিন চা-শ্রমিকদের হাতে টাকা থাকে না। যাঁরা ওই দিন (সোমবার) বাজারে আসেন, তাঁদের অনেকেই বাকিতে পণ্য কেনেন। কেউ মজা করে বলেন, সোমবার হচ্ছে বাকির হাটবার। বৃহস্পতিবারেই বাজারটি ভালো জমে। এদিন ‘তলববার’, শ্রমিকেরা সপ্তাহের মজুরি পান। অনেকের হাতে হাজারখানেকের মতো টাকা আসে। তা দিয়েই বাকির টাকা পরিশোধ করেন, সম্ভব হলে মাছ কেনেন। নয়তো চাল, আনাজ-তরকারি, তেল-নুন, যা না কিনলেই নয়। সেগুলো নিয়ে ঘরে ফেরেন। এই একটা নিয়মে সেই কবেকার সময় থেকে মিরতিংগা বাজার চলছে।
সন্ধ্যা নামতে নামতেই জমে ওঠে হাট। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মিরতিংগা হাটে