দিনাজপুরে ভরা মৌসুমেও বাজারে চালের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ধরনভেদে প্রতি কেজি চালের দাম ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। চালের বাজার অস্থির হওয়ার পেছনে তারা মিলারদের সিন্ডিকেটকে দুষছেন।
জেলার সবচেয়ে বড় পাইকারি চালের আড়ত বাহাদুরবাজার ঘুরে জানা যায়, মিনিকেট জাতের চালের ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৩৭০০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ৩২০০ টাকা দরে। একইভাবে ২৫৫০ টাকার ব্রি-ঊনত্রিশ ২৯০০ টাকায়, ২৭০০ টাকার আটাশ ৩২০০ টাকায়, ২৭০০ টাকার সুমন স্বর্ণ ২৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সদ্য ওঠা সম্পাকাঠারি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০০ টাকায়। একই জাতের পুরাতন চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৮০০ টাকায়। খুচরা বাজারেও প্রতি কেজিতে ৩ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বেশি বেড়েছে আঠাশ ও মিনিকেট জাতের চালের দাম। ধানের ভরা মৌসুমে চালের দামের এমন ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।
শহরের রামনগর এলাকার মজিবর রহমান বলেন, ধান বেচতে গেলে দাম কম, চাল কিনতে গেলে দাম বেশি। এগুলো মিলারদের কারসাজি।
শহীদ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘মিলাররা বলছেন তারা বেশি দামে ধান কিনেছেন। এ কারণে চালের দাম বাড়াতে হয়েছে। আমরা সামান্য লাভ রেখে বিক্রি করছি। দাম বাড়ায় ১০ দিনে চালের বিক্রি কমে গেছে।’
সুফী রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী জাহিদ কামাল জাভেদ বলেন, ‘দাম বাড়ার কারণ মৌসুমি ব্যবসায়ী। তাদের কাছে টাকা আছে, তারা মজুত করে দাম বাড়িয়েছেন। তাদের নাম-ঠিকানা সরকারের কাছে থাকে না।’
খাদ্য ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী আলাল হোসেন বলেন, ‘১৫ দিনের ব্যবধানে ধানের দাম প্রতি বস্তায় ৫০০ টাকা বেড়েছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে এই অবস্থা।
বাংলাদেশ মেজর, অটো ও হাসকিং মিল মালিক সমিতির সহসভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন বলেন, ধানের দাম বাড়লে চালের দাম বাড়ে। ধানের দাম বাড়ুক এটি আমরা চাই। এতে কৃষক লাভবান হবেন। বর্তমানে কৃষকের গোলায় ধান নেই। মজুতদাররা এ সময় কারসাজি করে ধানের দাম বাড়াচ্ছে। অথচ দোষ দেওয়া হচ্ছে মিলারদের। আমরা চাই অভিযান হোক। যারা অবৈধভাবে মজুত করছেন তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই বিদেশি সংস্থার হাতে দেওয়া যাবে না
চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম। আজ সোমবার সংগঠনের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমানের গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই বিদেশি সংস্থার হাতে দেওয়া যাবে না।
বিবৃতি পাঠানোর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক শক্তির প্রাণকেন্দ্র বন্দর। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা শক্তির হাতে ব্যবস্থাপনাগতভাবে স্থানান্তর করার যেকোনো উদ্যোগ রাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে স্পষ্ট হুমকি এবং জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিতে পারে। এ ধরনের পদক্ষেপ দেশের ভবিষ্যৎ, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। কৌশলগত স্থাপনা পরিচালনার নামে কোনো বিদেশি আধিপত্য, বিশেষ সুবিধা বা গোপন চুক্তি জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পূর্ণ অসংগত ও অগ্রহণযোগ্য।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘জনগণের অগণিত ত্যাগ ও শ্রমে গড়ে ওঠা চট্টগ্রাম বন্দর–সম্পর্কিত যেকোনো সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা, জন আস্থার প্রতি সম্মান এবং রাষ্ট্রীয় কঠোর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে গ্রহণ করতে হবে। জনগণের অজান্তে বা গোপন আলোচনা ও চুক্তির মাধ্যমে দেশের সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টা আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি। জাতীয় সম্পদ রক্ষার প্রশ্নে কোনো শিথিলতা, সমঝোতা বা বিদেশি চাপ গ্রহণযোগ্য নয়। চট্টগ্রাম বন্দর দেশের, দেশেরই থাকবে। এটি রক্ষায় প্রয়োজন হলে সর্বোচ্চ নাগরিক সতর্কতা ও গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে প্রস্তুত রয়েছি।’