সুশাসন না ফিরলে কোনো সরকার ভালোভাবে দেশ চালাতে পারবে না বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে আরও বহু দূর এগিয়ে যেতে হবে। দেশের আর কোনো সরকার যেন ব্যাংক লুটের সুযোগ না দেয়। আর্থিক খাতে সুশাসন ও স্থিতিশীলতা ফিরলে কর আদায় বাড়বে। এতে বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে উঠবে। সমাজের কারও কাছে কালোটাকা থাকলে সেখানে কেউ ভালো থাকতে পারে না। আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি, এ জন্য রাজনৈতিক সমর্থন প্রয়োজন।’

দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে গুগলের ডিজিটাল সেবা গুগল ওয়ালেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এসব কথা বলেন। এই সেবা ‘গুগল পে’ নামে পরিচিত। গুগল, মাস্টারকার্ড ও ভিসার সহযোগিতায় বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক পিএলসি এই ডিজিটাল লেনদেন সেবা চালু করেছে। এর ফলে সিটি ব্যাংকের গ্রাহকেরা তাঁদের মাস্টারকার্ড বা ভিসা কার্ড ‘গুগল পে’ তথা গুগল ওয়ালেটে সংযুক্ত করে দ্রুত, নিরাপদ ও স্পর্শবিহীন লেনদেন পারবেন।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত গুগল পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, ‘বাংলাদেশ কখনোই ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে না। আমরা যখন দায়িত্ব নিই তখন বিদেশি বিল বকেয়া ছিল ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার। সেই দায়ের পুরোটা শোধ করে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রশ্নহীন নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর হতে হবে। তাহলে সেই সরকার দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করতে পারবে। আমাদের সুশাসনের পাশাপাশি ভালো নেতা প্রয়োজন। সুশাসন না ফিরলে কোনো সরকার ভালোভাবে দেশ চালাতে পারবে না।’

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বাংলাদেশ বিদেশি উদ্যোক্তাদের আরও বিচরণভূমি হবে। আমি মনে করি না যে বিদেশিরা আসলে আমাদের টাকা নিয়ে চলে যাবে। তারা আসলে প্রযুক্তিজ্ঞান দিয়ে যাবে। এর মাধ্যমে আমরা যে দক্ষতা অর্জন করতে পারব, তা ভবিষ্যতে অন্য দেশে গিয়ে আমরা দিতে পারব। আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যাচ্ছি। সেখানে আমরা চাচ্ছি প্রত্যেক বাংলাদেশি স্কুল পর্যায় থেকে যেন ব্যাংকিং খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ততা গড়ে তোলে। তাহলে তারা একদিন ব্যাংকগুলোর ভালো গ্রাহক হয়ে উঠবে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, ‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক কাঠামো গড়ে তুলতে চাচ্ছি, যেটা আরও স্থায়ী হবে। পাশাপাশি আমরা সুশাসন ফেরানোর কাজ করে যাচ্ছি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। মূল্যস্ফীতি একসময় ৫ শতাংশে নেমে আসবে। আগামী জুলাই থেকে লেনদেনের ভারসাম্য ইতিবাচক হয়ে যাবে। বাংলাদেশের যে সম্ভাবনা আছে তা সীমাহীন। এই সুযোগ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নাগরিক হিসেবে সবার দায়িত্ব হলো এই সুযোগকে এগিয়ে নেওয়া।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স) ট্র্যাসি এন জ্যাকবসন ও সিটি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হোসেন খালেদ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন, গুগল পেমেন্টসের গ্রুপ প্রোডাক্ট ম্যানেজার শাম্মী কুদ্দুস, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের প্রধান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, ভিসা বাংলাদেশের প্রধান সাব্বির আহম্মেদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ গল প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

যাচাই-বাছাই ছাড়াই ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন হাসনাত: দুদক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি পোস্ট দৃষ্টি গোচর হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। সংস্থাটি বলছে, পোস্টটিতে তিনি যাচাই-বাছাই ছাড়াই দুদকের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন।এ বিষয়ে সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে, একটি প্রতারক দুদকের চেয়ারম্যান, মহাপরিচালক বা কর্মকর্তা পরিচয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করে আসছে। এর সঙ্গে দুদকের কর্মকর্তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। 

মঙ্গলবার দুদক মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। 

তিনি আরও বলেন, দুদক ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে এবং প্রতারক চক্রের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগেও দুদক প্রতারণা রোধে সবাইকে সতর্ক করে আসছে। যা বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এমন প্রতারণার শিকার হয়ে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুদককে দোষারোপ করে, যার ফলে দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।

দুদক মহাপরিচালক বলেন, প্রতারণামূলক ফোন কল, বার্তা বা ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে কারও কাছ থেকে টাকা চাওয়া হলে কিংবা কোনো প্রতারণা বা অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেলে দুদকের টোল ফ্রি হটলাইন-১০৬ নম্বরে জানানোর অথবা নিকটস্থ দুদক কার্যালয় বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ