সুশাসন না ফিরলে কোনো সরকার ভালোভাবে দেশ চালাতে পারবে না: গভর্নর
Published: 24th, June 2025 GMT
সুশাসন না ফিরলে কোনো সরকার ভালোভাবে দেশ চালাতে পারবে না বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে আরও বহু দূর এগিয়ে যেতে হবে। দেশের আর কোনো সরকার যেন ব্যাংক লুটের সুযোগ না দেয়। আর্থিক খাতে সুশাসন ও স্থিতিশীলতা ফিরলে কর আদায় বাড়বে। এতে বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে উঠবে। সমাজের কারও কাছে কালোটাকা থাকলে সেখানে কেউ ভালো থাকতে পারে না। আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি, এ জন্য রাজনৈতিক সমর্থন প্রয়োজন।’
দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে গুগলের ডিজিটাল সেবা গুগল ওয়ালেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এসব কথা বলেন। এই সেবা ‘গুগল পে’ নামে পরিচিত। গুগল, মাস্টারকার্ড ও ভিসার সহযোগিতায় বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক পিএলসি এই ডিজিটাল লেনদেন সেবা চালু করেছে। এর ফলে সিটি ব্যাংকের গ্রাহকেরা তাঁদের মাস্টারকার্ড বা ভিসা কার্ড ‘গুগল পে’ তথা গুগল ওয়ালেটে সংযুক্ত করে দ্রুত, নিরাপদ ও স্পর্শবিহীন লেনদেন পারবেন।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত গুগল পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, ‘বাংলাদেশ কখনোই ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে না। আমরা যখন দায়িত্ব নিই তখন বিদেশি বিল বকেয়া ছিল ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার। সেই দায়ের পুরোটা শোধ করে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রশ্নহীন নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর হতে হবে। তাহলে সেই সরকার দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করতে পারবে। আমাদের সুশাসনের পাশাপাশি ভালো নেতা প্রয়োজন। সুশাসন না ফিরলে কোনো সরকার ভালোভাবে দেশ চালাতে পারবে না।’
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বাংলাদেশ বিদেশি উদ্যোক্তাদের আরও বিচরণভূমি হবে। আমি মনে করি না যে বিদেশিরা আসলে আমাদের টাকা নিয়ে চলে যাবে। তারা আসলে প্রযুক্তিজ্ঞান দিয়ে যাবে। এর মাধ্যমে আমরা যে দক্ষতা অর্জন করতে পারব, তা ভবিষ্যতে অন্য দেশে গিয়ে আমরা দিতে পারব। আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যাচ্ছি। সেখানে আমরা চাচ্ছি প্রত্যেক বাংলাদেশি স্কুল পর্যায় থেকে যেন ব্যাংকিং খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ততা গড়ে তোলে। তাহলে তারা একদিন ব্যাংকগুলোর ভালো গ্রাহক হয়ে উঠবে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, ‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক কাঠামো গড়ে তুলতে চাচ্ছি, যেটা আরও স্থায়ী হবে। পাশাপাশি আমরা সুশাসন ফেরানোর কাজ করে যাচ্ছি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। মূল্যস্ফীতি একসময় ৫ শতাংশে নেমে আসবে। আগামী জুলাই থেকে লেনদেনের ভারসাম্য ইতিবাচক হয়ে যাবে। বাংলাদেশের যে সম্ভাবনা আছে তা সীমাহীন। এই সুযোগ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নাগরিক হিসেবে সবার দায়িত্ব হলো এই সুযোগকে এগিয়ে নেওয়া।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স) ট্র্যাসি এন জ্যাকবসন ও সিটি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হোসেন খালেদ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন, গুগল পেমেন্টসের গ্রুপ প্রোডাক্ট ম্যানেজার শাম্মী কুদ্দুস, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের প্রধান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, ভিসা বাংলাদেশের প্রধান সাব্বির আহম্মেদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার প্রকাশ্য ফাঁসির ব্যবস্থা করতে হবে: রাশেদ
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান বলেছেন, “শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং অন্য দুটি অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আমি মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহর দরবারে উক্ত রায়ে শুকরিয়া আদায় করছি।”
সোমবার (১৭ নভেম্বর) শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাশেদ প্রধান বলেন, “গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার মতো নতুন কোনো ফ্যাসিস্ট যাতে তৈরি না হয় সেই লক্ষ্যে একটা দৃষ্টান্ত তৈরি করা প্রয়োজন। শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ কার্যকর করতে হবে এবং প্রকাশ্য ফাঁসির ব্যবস্থা করতে হবে।”
আরো পড়ুন:
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার রায়ের খবর
রায় প্রত্যাখ্যান নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি